অভিযান: সামনে নতুন লক্ষ্য। কলকাতা বিমানবন্দরে কেকেআরের শুভমান। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দেওয়া ক্যাচ তাঁর দুই হাতের ফাঁক দিয়ে গলে যেতেই বিস্মিত হয়েছিলেন ইডেন দর্শকরা। এই ক্যাচও কেউ ফেলতে পারে! তখন সদ্য দেড়শো পেরিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। ক্যাচটা হাতছাড়া করার জন্য গ্যালারি থেকে নানা কটূক্তিও ভেসে এসেছিল বাউন্ডারি লাইনে থাকা শুভমান গিলের দিকে। লজ্জায়, অপমানে বিপর্যস্ত পঞ্জাবি তরুণটি ভুলের প্রায়শ্চিত্তের শপথ নিয়েছিলেন তখনই। নিজেকে বলেছিলেন, ‘দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে।’ তাই করে দেখিয়েছেন ১৯ বছরের তরুণ। যা দেখে ধোনিও তাঁকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি।
সংকল্প পূরণের জন্য তাঁকে যিনি সব চেয়ে বেশি সাহায্য করেন, সেই অধিনায়ক দীনেশ কার্তিককেই শুভমান ইডেনে দাঁড়িয়ে মনের কথা শোনান ম্যাচের পরে। আইপিএলের ওয়েবসাইটে তাঁদের সেই কথোপকথনের ভিডিয়োয় শুভমানকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ক্যাচটা হাত থেকে ফস্কে যাওয়ায় খুব লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। দলের কেউ আমাকে বকাঝকা করেনি। তবে দর্শকদের প্রচুর কটূক্তি শুনতে হয়েছিল আমাকে। তখনই জেদ চেপে যায়। ঠিক করে নিই, এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত আমাকে করতেই হবে। দলকে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়ব।’’
নীতীশ রানার চোট থাকায় চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার চার নম্বরে ব্যাট করেন শুভমান। আর আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েই বাজিমাত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্যের। পরের ম্যাচগুলিতে চার নম্বরে কাকে খেলাবেন তা নিয়ে যে ধন্ধে পড়ে গিয়েছেন কার্তিক, তা তিনি স্বীকার করে নেন। শুভমানকেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘এ বার আমি কাকে চার নম্বরে খেলাব বল তো? তুমিই এই সমস্যার সমাধান করো।’’ যার উত্তর বেশ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গেই দিয়েছিলেন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। বলেছিলেন, ‘‘আমাকে যেখানেই খেলাও আমি ঠিক মানিয়ে নিতে পারব। চার, পাঁচ, সাত, কোনও জায়গাতেই খেলতে অসুবিধা নেই আমার।’’
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই দলের এই কনিষ্ঠ সদস্যের সঙ্গে মজা করে কার্তিক বলেন, ‘‘আমাদের দলে সব চেয়ে সুন্দর দেখতে তো তুমিই। শুনেছি, মেয়েরা তোমাকে বেশ পছন্দ করে। আরও সুন্দর হতে চাও?’’ অধিনায়কের মস্করায় লজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন তরুণ শুভমান। বলেছিলেন, ‘‘দীনেশভাই, আমিও তোমার মতো দাড়ি রাখতে চাই।’’ যা শুনে কার্তিক লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলেন।
ধোনির দলকে হারিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হোটেলে ফিরে জয়ের উৎসবে মেতে উঠেছিলেন নাইটরা। যথারীতি কেক কাটা হয়। তবে বৃহস্পতিবার কারও জন্মদিন না থাকায় মধ্যমণি ছিলেন শুভমানই। তিনিই কেক কাটেন। কুলদীপ যাদব, নীতীশ ও অন্যান্যরা সবাই মিলে তাঁর মুখে কেক মাখিয়ে দেন। তাতে অবশ্য একটুও বিরক্ত হননি তিনি।
চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার দুপুরে মুম্বই রওনা হয়ে যায় কেকেআর। পরের দু’টি ম্যাচই রোহিত শর্মার দলের বিরুদ্ধে। রবিবারের ম্যাচের পরে মুম্বই আবার উড়ে আসবে কলকাতায়। তিন নম্বরে থাকা কেকেআর-কে প্লে-অফে জায়গা নিশ্চিত করতে এখন বাকি পাঁচটির মধ্যে তিনটি ম্যাচে জিততেই হবে। শেষ পর্ব সাবধানে এগোতে চান নাইটরা। স্পিনার পীযূষ চাওলা বলেন, ‘‘মুম্বই লিগ তালিকায় নীচে আছে ঠিকই। কিন্তু এই দলগুলোই বেশি বিপজ্জনক হয়। তাই শেষের ম্যাচগুলোও আমাদের ভাল খেলতে হবে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয়টা আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy