অস্ট্রেলিয়ানদের কুখ্যাত স্লেজিংয়েরও শেষ দেখতে চান ম্যালকম টার্নবুল।
গত তিন দিন যে শহরে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের জঘন্যতম কেলেঙ্কারির কলঙ্ক নিয়ে থাকতে হচ্ছিল, মঙ্গলবার সেই কেপ টাউন ছেড়ে মিচেল স্টার্করা পৌঁছে গেলেন জোহানেসবার্গে। শুক্রবার থেকে বিতর্কে ঠাসা টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ শুরু হবে এখানেই। তবু টিম পেন-দের শরীরি ভাষায় স্পষ্ট যে, শহর বদলালেও দলে স্বস্তি ফেরেনি। কারণ, সিরিজে সমতা আনার টেস্টে নামার আগে অস্ট্রেলিয়া দলকে আরও কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও জেমস সাদারল্যান্ড মঙ্গলবার রাতে বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে ইতি টানার ইঙ্গিত দিলেও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল এতেই সন্তুষ্ট নন। তিনি এ বার অস্ট্রেলিয়ানদের কুখ্যাত স্লেজিংয়েরও শেষ দেখতে চান। স্লেজিংয়ের বিরুদ্ধে কড়া দমননীতি প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল। বলেন, ‘‘স্লেজিং বন্ধ করার জন্য আরও কড়া হওয়া দরকার বোর্ডের। ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু ক্রিকেটে এর কোনও জায়গা নেই।’’ এ ছাড়াও তিনি যোগ করেন, ‘‘ক্রিকেটকে ফের দেশের মানুষের কাছে আদর্শ করে তোলার জন্য একে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে বোর্ডকে।’’
মঙ্গলবার কেপ টাউন ও জোহানেসবার্গ— দুই বিমানবন্দরেই অস্ট্রেলিয়া দলকে স্থানীয় মিডিয়া প্রতিনিধিদের এক ঝাঁক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তবে এঁরা কেউই মুখ খোলেননি সাংবাদিকদের সামনে। স্পষ্টতই বিধ্বস্ত লাগছিল দলের ক্রিকেটারদের।
বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে যে তিনি বেশ বিরক্ত, তা জানিয়ে প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয় ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া দলের মধ্যে সবসময়ই এই বিশ্বাস ছিল যে, দক্ষতা দিয়ে ও স্বচ্ছ্ব ক্রিকেট খেলে আমরা যে কোনও পরিস্থিতিতে সাফল্য পেতে পারি। এ আমাদের গর্ব। আমার বিশ্বাস, এখনকার দলটার মধ্যেও সেই বিশ্বাস আছে। কিন্তু দলের কয়েকজনের সেই সংস্কৃতি নেই। কেপ টাউন টেস্টে তারাই গুরুতর অপরাধ করেছে।’’
পনেরো বছর আগে ২০০৩-এ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মাঠে পরিণত, ভদ্র ও সৎ থাকার উদ্দেশে যে ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ প্রণয়ন করেছিল তাদের বোর্ড, আবার তার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন স্টিভ। তিনি বলেন, ‘‘এখনকার ক্রিকেটারদের ও তা পড়া উচিত। এতে নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মানসিকতার উন্নতি হবে।’’
এই ঘটনার পরে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের এখন তাঁদের সততা নিয়ে মন্তব্য শুনতে হচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। যেমন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন বলতে শুরু করেছেন, বল-বিকৃতি আগেও অস্ট্রেলীয়রা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগেও ওরা এসব করেছে। আমি নিশ্চিত। সম্প্রতি অ্যাসেজেও নিশ্চয়ই বল-বিকৃতি করেছে ওরা। ওদের মিড অন, মিড অফের ফিল্ডাররা হাতে যে পরিমাণ টেপ লাগিয়ে ফিল্ডিং করতে নামে। আমি কারও নাম করব না। তবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, কাদের কথা বলা হচ্ছে।’’ বর্তমান অধিনায়ক জো রুটের এতে সায় না থাকলেও এই পরিস্থিতিতে হয়তো ভনকে অনেকেই সমর্থন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy