Advertisement
E-Paper

খেলার মধ্যে পড়াও চলছে জার্মান দলে

বায়ার্ন মিউনিখ, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, উলফবার্গ-সহ বুন্দেশলিগায় খেলা সব টিমেরই নিজস্ব অ্যাকাডেমি আছে। সেই অ্যাকাডেমিতে ফুটবল শেখার পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা তৈরি করাটাও বাধ্যতামূলক।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৬
প্রস্তুতি: যুবভারতীতে অনুশীলন। জার্মানির সেরা অস্ত্র আর্প ও ইয়ান বিসেক।  ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

প্রস্তুতি: যুবভারতীতে অনুশীলন। জার্মানির সেরা অস্ত্র আর্প ও ইয়ান বিসেক।  ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

ফুটবলের কিটব্যাগের মধ্যে ওরা এনেছেন স্কুলের বই-ও।

রাজারহাটের টিম হোটেলে রবিবারের ব্রাজিল ম্যাচ নিয়ে কোচের ক্লাসের পরেও নিস্তার নেই ইয়ান ফিটো আর্প বা জন ইবোয়া-দের। কারণ অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের পরীক্ষা শেষ করেই দেশে ফিরে তাদের বসতে হবে ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষায়। ডিসেম্বরেই রয়েছে তাদের হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষা। সেখানে পাশ না করলে এমনকী, জার্মানির ঘরোয়া লিগ বুন্দেশলিগাতেও খেলার ছাড়পত্র পাবে না কেউ।

বায়ার্ন মিউনিখ, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, উলফবার্গ-সহ বুন্দেশলিগায় খেলা সব টিমেরই নিজস্ব অ্যাকাডেমি আছে। সেই অ্যাকাডেমিতে ফুটবল শেখার পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা তৈরি করাটাও বাধ্যতামূলক। জার্মান ফুটবল ফেডারেশন মনে করে, পায়ের সঙ্গে মস্তিস্কের সংযোগ না হলে ভাল ফুটবলার হওয়া যায় না। তাই পড়াশুনা করাটা জরুরি। জার্মান ফুটবল কর্তারা আরও মনে করেন, অ্যাকাডেমিতে থাকলেই সেই ছাত্র পেশাদার ফুটবলার না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফুটবলারটি যাতে অন্য কোনও পেশায় যুক্ত হতে পারে তার জন্য শিক্ষিত হওয়া দরকার।

আর সেই কারণেই যে কোনও যুব দল কোনও প্রতিযোগিতায় খেলতে গেলে জার্মানি দলের সঙ্গে থাকেন অঙ্ক, ইতিহাস বা ভূগোলের শিক্ষক। অন লাইনে পরীক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা থাকে। ভারতে খেলতে আসা ক্রিস্টিয়ানো উকের টিমের সঙ্গেও ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি অবশ্য কলকাতায় আসেননি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই শিক্ষক বার্লিনে ফিরে যাওয়ার আগে জার্মান ফুটবল কোচকে বলে দিয়ে গিয়েছেন ছাত্ররা যেন অন্তত দু’ঘণ্টা দিনে পড়াশুনা করে সে দিকে নজর রাখতে।

এমনিতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে জার্মানদের মোটিভেশন ছিল মূলত পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করা। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের মতো মহাশক্তির সামনে পড়ে যাওয়ায় জার্মান জাত্যাভিমান নাড়াচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশ থেকে ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা ব্রাজিল ম্যাচ নিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। অলিভার কান থেকে থোমাস মূলার — যে মাঠে খেলে গিয়েছেন সেখানে আর্প বা লার্স-রা খেলার সুযোগ পাচ্ছে, এটা বলেই ছাত্রদের নাকি টিম হোটেলে উদ্বুদ্ধ করছেন কোচ ক্রিস্টিয়ান উক। জার্মান টিমের কত সমর্থক রবিবার যুবভারতীতে আসতে পারেন, তা নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন জার্মান কোচ। অলিভার কানের বিদায়ী ম্যাচে কত দর্শক এসেছিলেন সেটাও জানতে চেয়েছেন তিনি। উকের আশা, সামনে ব্রাজিল বলেই তাঁর ছাত্ররা সেরা ফুটবলটাই খেলবেন। ইতিমধ্যেই ব্রাজিল টিমের বিভিন্ন খেলার সিডি তিনি দেখাতে শুরু করেছেন ফুটবলারদের।

এমনিতে কলকাতায় বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা নেমেছে। আবহাওয়া অনেক ঠান্ডা। কয়েক দিন আগের সেই অসহ্য গরম শুক্রবারে অন্তত ছিল না। বার্লিন থেকে অক্টোবরের শুরুতে গোয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ায় সময়ই জার্মানিতে ঠান্ডা পড়ে গিয়েছিল। জার্মানির কোচ উক ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, বৃষ্টিটা চললেই তাদের লাভ। ছেলেরা নিজেদের দেশের কন্ডিশন পেয়ে যাবে। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারবে।

চমকের এখানেই শেষ নয়। ব্রাজিলের মতো দলের সঙ্গে একজন রাঁধুনিকে এনেছে জার্মানিও। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যে জার্মান দলটি খেলছে, তাদের দলে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছে ইপিএল এবং লা লিগার বিভিন্ন ক্লাব। কিন্তু জার্মান ফেডারেশন তাদের কাউকেই ছাড়ার অনুমতি দেয়নি। এই টিমের সেরা স্ট্রাইকার টুর্নামেন্টে চার গোল করে ফেলা ইয়ান ফটো আর্প ইতিমধ্যেই বুন্দেশলিগার ক্লাব হামবুর্গ এফ সি-র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বাকিদের মধ্যে জনা সাত-আট ফুটবলারও দেশে ফিরে চুক্তিবদ্ধ হবে বলে খবর।

রবিবারের যুবভারতী হয়তো দেখে নেবে ভবিষ্যতের ফিলিপ লাম বা সোয়াইনস্টেইগার-কে!

FIFA U-17 World Cup Football Germany
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy