Advertisement
E-Paper

টোকিয়োর পথে অংশু ও সোনম, আর আশা নেই সাক্ষীর

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৪
উত্থান: অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করলেন সোনম (উপরে) ও অংশু।

উত্থান: অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করলেন সোনম (উপরে) ও অংশু। টুইটার

রিয়ো অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন সাক্ষী মালিক। কিন্তু তাঁর জন্য টোকিয়োর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। তাঁকে ছাপিয়ে গেলেন অগ্রজদের পর্যায়ে যোগ্যতা অর্জন করা কুস্তিগির সোনম মালিক।

আগেই ২০১৯-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ৫৩ কেজি বিভাগে টোকিয়োয় অংশ নেওয়া নিশ্চিত করেছিলেন বিনেশ ফোগত। এ বার তাঁর সঙ্গে যুক্ত হলেন আরও দু’জন। ১৯ বছরের অংশু মালিক ও ১৮ বছরের সোনম। যার অর্থ টোকিয়োয় মহিলাদের কুস্তিতে লড়তে দেখা যাবে ভারতের তিন কন্যাকে। পুরুষদের মধ্যে থেকে টোকিয়ো যাচ্ছেন বজরঙ্গ পুনিয়া (৬৫ কেজি), রবি দাহিয়া (৫৭ কেজি) ও দীপক পুনিয়া (৮৬ কেজি)।

কাজ়াখস্তানের আলমাটিতে এশীয় অলিম্পিক্স যোগ্যতা অর্জনের প্রতিযোগিতায় চমকে দিয়েছেন সোনম। তিনি লড়েন মেয়েদের ৬২ কেজি বিভাগে। এই বিভাগে বিশেষজ্ঞেরা এগিয়ে রেখেছিলেন কাজ়াখস্তানেরই আয়ালিম কাসিমোভাকে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্ণায়ক লড়াইয়ে শুরুতেই ০-৬ পিছিয়ে পড়েন সোনম। কিন্তু তার পরেও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ৯-৬ ফলে ম্যাচ জিতে নেন। সাম্প্রতিক চারটি ট্রায়ালে সোনম তাঁর অসাধারণ আবির্ভাব ঘোষণা করেন সাক্ষীকে হারিয়ে। যার ফলে রিয়োয় সফল কুস্তিগির আলমাটিতে নামার সুযোগ হারান। তবু অনেকেই ভাবতে পারেননি এশীয় প্রতিযোগিতা থেকে সোনমই টোকিয়োর টিকিট নিশ্চিত করবেন। যা সাক্ষীর এ বারের অলিম্পিক্সে যাওয়ার দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দিল।

অবশ্য কম যাননি অংশুও। ৫৭ কেজি বিভাগে তিনি আগাগোড়া দাপট দেখিয়েছেন। ফাইনালে ওঠার পথে তিনি মাত্র দু’পয়েন্ট হারিয়েছিলেন। টেকনিক্যাল দক্ষতায় অংশু ফাইনালের আগে তিনটি ম্যাচ জেতেন। শুরুটা হয়েছিল কোরিয়ার জিয়ুন উমকে হারিয়ে। তার পরের লড়াইয়ে দাঁড়াতে দেননি কাজ়াখস্তানের এমা তিসিনাকে। এবং সেমিফাইনালে তাঁর কাছে ধরাশায়ী হন উজ়বেকিস্তানের শোখিদা আখনেদোভা। আর সোনম সেমিফাইনালে ওঠেন চিনের জিয়া লং এবং তাইপেইয়ের সিন পিং পাইকে হারিয়ে।

সোনম কুস্তির ধাত্রীভূমি হরিয়ানার সোনিপাত থেকে উঠে এসেছেন। প্রথম বড় সাফল্য পান জাতীয় গেমসে সোনা জিতে। সঙ্গে বিশ্ব ক্যাডেট গেমসেও দু’টি সোনা জেতেন। তাঁর বাবাও একজন কুস্তিগির। বাবার উৎসাহেই কুস্তিতে এসেছিলেন। তবে তাঁকে একেবারে হাতে ধরে তৈরি করেছেন তাঁর গ্রামেরই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রশিক্ষক আজমের মালিক। শুরুতে এই কমপ্লেক্সে কোনও ম্যাট ছিল না। বর্ষার সময় কাদামাটিতে লড়া যেত না বলে সোনম বন্ধুদের সঙ্গে প্রস্তুতি চালাতেন পাকা রাস্তায় নেমে।

২০১৭-তে এক প্রতিযোগিতায় সোনম কাঁধে মারাত্মক চোট পান। মোটামুটি সুস্থ হন প্রায় দেড় বছর চিকিৎসার পরে। ছাত্রীর অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের খবরে দারুণ খুশি ব্যক্তিগত কোচ আজমের। বলেছেন, ‘‘বড়দের সঙ্গে লড়ার জন্য যে ও পুরোপুরি তৈরি, সেটা এ বার ভাল ভাবেই বুঝিয়ে দিল। এখনও অনেকে বলেন, ও ক্যাডেট স্তরের জন্যই ভাল। কিন্তু পরপর সাক্ষীকেও হারিয়ে দিয়েছে মেয়েটা। কী না করছে হালফিলে। সব চেয়ে বড় কথা, পয়েন্ট খুইয়েও সোনম ভেঙে পড়ে না, লড়াই ছাড়ে না। মনে হয়, এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়েছে সাক্ষীকে হারিয়েই।”

সোনমের মতোই অংশুও কুস্তি পরিবারের মেয়ে। হরিয়ানারই নিদানিতে তিনি অনুশীলন করেন। তাঁর বাবা ধরমবীর মালিক কুস্তিতে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও নেমেছেন। গত বছর এশীয় কুস্তির পর থেকে তাঁকে নিয়ে খুব বেশি চর্চা হচ্ছে। সেখানে তিনি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। তার পরেই সার্বিয়ার বেলগ্রেডে বিশ্বকাপ কুস্তিতে রুপো জিতে চমকে দেন।

অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জনের দৌড়ে ছিলেন সীমা বিসলা ও নিশা দাহিয়াও। তবে কাজ়াখস্তানে এই দু’জনই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন। ৫০ কেজি বিভাগে সীমা তাঁর তিনটি ম্যাচই হেরেছেন। নিশা অবশ্য ৬৮ কেজিতে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। কিন্তু কিরঘিজ়স্তানের মিরিম ঝুমানাজ়ারোভার বিরুদ্ধে ৩-১ এগিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেননি।

wrestling Women Team Sakshi Malik Tokyo Olympics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy