সপ্তাহ শেষেই আই লিগের ডার্বি। আর সেই বড় ম্যাচের আগে মোহনবাগানের সনি নর্ডিকে দেখে নিতে কোচ সঞ্জয় সেনের মঞ্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
চোটের জন্য আগের ম্যাচগুলোতে খেলতে পারেননি। কিন্তু বাগান সমর্থক মাত্রই জানেন ডার্বিতে বাগানের তরী পার করার প্রধান নায়ক সেই সনিই।
আর ডার্বির আগে প্রি-টেস্টে সনির নিশানা সরোবরে কলম্বো এফসি বধ। সনি নিজেও ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমি তৈরি। ম্যাচে ফিরছি।’’ যদিও তাঁর কোচ ডার্বির প্রসঙ্গ সরিয়ে বলছেন, ‘‘বড় ম্যাচের কথা ভাবা যাবে কলম্বো জয়ের পর।’’
এক সপ্তাহ আগে ভারত মহাসাগরের তীরে ‘হলুদ সাবমেরিন’ ডুবিয়ে গঙ্গাপারে ভিড়েছিল সবুজ-মেরুন পালতোলা নৌকা। মঙ্গলবার রবীন্দ্র সরোবরেও কি এএফসি কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ফিরতি ম্যাচে বাগান আর্মাডা’-র হাতে শ্রীলঙ্কার কলম্বো এফ সি ফের ডুববে?
শুনে হাসেন ন’য়ের দশকে বাগানে খেলে যাওয়া রোশন পেরিরার বন্ধু রুমি হাসান। বর্তমানে যিনি কলম্বো এফসি-র কোচ। বলে দেন, ‘‘মঙ্গলবার আমাদের ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচ।’’ কলম্বোয় বাগানের বিরুদ্ধে তাঁর দল সমতা ফিরিয়েও হেরেছিল ১-২। সে কথা মনে রেখেই হয়তো এর পরে তিনি বলে বসেন, ‘‘জিততে হবে একাধিক গোলে।’’
দু’দশক আগে শ্রীলঙ্কার রত্নম ক্লাবের হয়ে কলকাতায় এসে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলে গিয়েছেন রুমি। সে বার তিনি হেরেছিলেন ফুটবলার হিসাবে এসে। কিন্তু এ বার তো সরোবরে নামার আগেই তাঁর সাবমেরিনের জোড়া টর্পেডো উড়ে গিয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে শুকনো মুখে কলম্বো কোচ বলছিলেন, ‘‘আমার ডিফেন্স এবং অ্যাটাকিং থার্ডের দুই ভরসা নাইজেরিয়ান নাসিরু এবং ওলোফিন ভারতে আসার ভিসা পায়নি। এটা একটা বড় ধাক্কা।’’ ম্যাচের দিন সকালে ১২২১ মাইল উজিয়ে কলম্বো থেকে কলকাতায় উড়িয়ে আনার কথা আইভরিয়ান ডিফেন্ডার সেকা জাঁ ইয়াপোকে। কিন্তু তা সত্তেও বাগানের ‘ফুকুশিমা বম্বার’ কাতসুমিকে নিয়ে ভয় যাচ্ছে না কলম্বোর। তাদের কোচ বলেই দিচ্ছেন, ‘‘সবচেয়ে বিপজ্জনক ওদের ওই জাপানি ফুটবলার (পড়ুন কাতসুমি)। গোলের পাসগুলো তো ও-ই বাড়ায়।’’
বিপক্ষের এরকম নড়বড়ে পরিস্থিতিতে হাসিমুখে ঘুরে বেড়ানোর কথা ছিল সবুজ-মেরুন কোচ সঞ্জয় সেনের। উল্টে এ দিন সকালে নিজেদের খেলার ভিডিও বিশ্লেষণ দেখে অনুশীলনে নামলেন সনি-কাতসুমিরা। সঞ্জয় নিজেও বলছেন, ‘‘অ্যাওয়ে ম্যাচ অতীত। আমরা জেতার জন্য পুরো টিম নিয়ে নামব।’’
টিম কেমন হতে পারে তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে অনুশীলনে। গোলে শিল্টন পালকে রেখে সৌভিক ঘোষ-আনাস-বিক্রমজিৎ-প্রীতম কোটালকে নিয়ে ব্যাক ফোর। সামনে ডাফির সঙ্গে জেজে। মাঝমাঠে সনি-কাতসুমি জুটি। সঞ্জয় জানেন শ্রীলঙ্কার দলটি কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলে। তাই বিপক্ষের জোহর জারওয়ান এবং তুয়ান রিজভিকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করেছেন তিনিও। কলম্বো এফসি এখানে ২-২ করে ফেললে ম্যাচ অতিরিক্ত সময় বা টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়াতে পারে। তাই শুরুতেই গোল চাইছে বাগান!
অঙ্ক নিয়ে অবশ্য ভাবতে নারাজ সদ্য আশিতে পা দেওয়া যোধপুর পার্কের এক প্রাক্তন মোহনবাগানী। বলছেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে ফের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বাগানের ছেলেদের জয় দেখতে মুখিয়ে আছি।’’
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় আগে ১৯৬৪ সালের ২১ জুন এই সরোবরেই ভারত-ইরান ম্যাচে তাঁর পা থেকে এসেছিল আন্তর্জাতিক গোল। সরোবরে এই ম্যাচের আগে সেটাই প্রথম ও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
পাঁচ দশক পর সরোবরে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে প্রথম ম্যাচের সেই গোলদাতা চুনী গোস্বামী ছাড়া বাগানকে নিয়ে এত স্বপ্ন আর কার থাকতে পারে!
সোমবার
এএফসি কাপ: মোহনবাগান-কলম্বো এফসি (রবীন্দ্র সরোবর, ৭-০০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy