দ্বিতীয় বার ডোপ পরীক্ষার (‘বি’ স্যাম্পেল টেস্ট) জন্য আবেদন জানাতে রাজি নন সুব্রত পাল।
কাম্বোডিয়া ম্যাচের আগে ভারতীয় শিবির চলাকালীনই বাঙালি গোলরক্ষকের মুত্রের নমুনা নেয় জাতীয় ডোপ বিরোধী সংস্থা (নাডা)। প্রথম পরীক্ষায় (‘এ’ স্যাম্পেল টেস্ট) টার্বুলিনের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতীয় ফুটবল। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে সুব্রতর ভবিষ্যৎ নিয়েই। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষকের দাবি, জাতীয় দলের চিকিৎসক শ্রীজিৎ কমলের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তিনি যে কাশির ওষুধ নিতেন তাতেই সম্ভবত টার্বুটালিন ছিল। যা ধরা পড়েছে পরীক্ষায়।
নিয়ম অনুযায়ী কোন অ্যাথলিট কী কী ওষুধ ব্যবহার করেন, সেটা ডোপ বিরোধী সংস্থাকে জানিয়ে রাখতে হয়। যাকে বলা হয়, ‘থেরাপটিক ইউজ এক্সজেম্পশন্স’। সংক্ষেপে টিইউই। সুব্রত বললেন, ‘‘আমি যে কাশির ওষুধ নিয়েছি, সেটা ডোপ পরীক্ষার সময়ই শ্রীজিৎ নাডা-র আধিকারিকদের জানিয়েছিল। ইতিমধ্যেই যাবতীয় প্রেসক্রিপশন ও পাঠিয়ে দিয়েছে নাডা-য়। আমিও দু’-এক দিনের মধ্যে নাডা-র চিঠির উত্তর পাঠানোর চেষ্টা করছি।’’ পাশাপাশি আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু আপনি নিজে কেন জানাননি কী ওষুধ ব্যবহার করছেন? জাতীয় দলের গোলরক্ষক বলছেন, ‘‘কী করে জানব ওষুধের মধ্যে কী রয়েছে। আমি তো চিকিৎসকের পরামর্শ শুধু মেনেছি।’’ নাডা আদৌ কি মানবে সুব্রতর যুক্তি? মারিয়া শারোপোভা-ও কিন্তু একই দাবি করেছিলেন।
আরও পড়ুন:কোর্টে ফিরেই দুরন্ত জয় শারাপোভার
প্রশ্ন হচ্ছে শুধু প্রেসক্রিপশন পাঠিয়েই শাস্ত এড়ানো সম্ভব? ‘বি’ নমুনা পরীক্ষা কি বাধ্যতামূলক নয়?
বুধবার দিল্লি থেকে ফোনে নাডা-র ডিরেক্টর জেনারেল নবীন অগ্রবাল বললেন, ‘‘দ্বিতীয় বার পরীক্ষা তখনই করা হয়, যখন ‘এ’ স্যাম্পেল টেস্টের ফল নিয়ে কোনও অ্যাথলিটের আপত্তি থাকে। তবে দ্বিতীয় বার ধরা পড়লে কিন্তু শাস্তি অবধারিত।’’
‘বি’ নমুনা পরীক্ষার পদ্ধতিটা কী? নবীন অগ্রবাল বললেন, ‘‘প্রথম বার পরীক্ষার সময় মুত্রের যে নমুনা নেওয়া হয়, তারই কিছুটা অংশ নাডা-র গবেষণাগারে রাখা থাকে। যখনই কোনও অ্যাথলিট ‘বি’ নমুনা পরীক্ষার আবেদন জানান, তখন তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। ও-ই অ্যাথলিটের সামনেই ‘বি’ নমুনা পরীক্ষা করা হয়।’’ জানা গিয়েছে, এই কারণেই ‘বি’ নমুনা পরীক্ষায় আবেদন জানাচ্ছেন সুব্রত। নির্বাসনের শাস্তি এড়াতে অস্ত্র করছেন জাতীয় দলের চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন।
ভারতীয় ফুটবলের স্পাইডারম্যান শেষ পর্যন্ত জাল কেটে বেরোতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।