Advertisement
E-Paper

সুব্রত-সত্যজিতের বাগ্‌যুদ্ধে বাগানের নির্বাচন উত্তপ্ত

সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়ার ভোট ভাঙাতে বালিতে মঙ্গলবার সভা করে ফেললেন সুব্রত ভট্টাচার্য। পাল্টা দিলেন সত্যজিৎ-ও। নিজের অঞ্চলের ভোট অটুট রাখতে খোদ হাওড়ায় একই দিনে সভা করে ফেললেন তিনি। ক্লাব প্রেসিডেন্ট টুটু বসুকে প্রথম নির্বাচনী সভায় এনে। বালির রবীন্দ্রভবনে যেখানে শাসকগোষ্ঠীর ফুটবল সচিব পদে দাঁড়ানো সত্যর বেড়ে ওঠা, সেখানে দাঁড়িয়ে সুব্রত-র তোপ ‘‘আমি যদি টুটু-অঞ্জনদের পাঠানো কাগজে সই করে দিতাম তা হলে ও তো ফুটবল সচিব পদে নমিনেশনই পেত না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৫ ০৩:২২

সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়ার ভোট ভাঙাতে বালিতে মঙ্গলবার সভা করে ফেললেন সুব্রত ভট্টাচার্য।

পাল্টা দিলেন সত্যজিৎ-ও। নিজের অঞ্চলের ভোট অটুট রাখতে খোদ হাওড়ায় একই দিনে সভা করে ফেললেন তিনি। ক্লাব প্রেসিডেন্ট টুটু বসুকে প্রথম নির্বাচনী সভায় এনে।

বালির রবীন্দ্রভবনে যেখানে শাসকগোষ্ঠীর ফুটবল সচিব পদে দাঁড়ানো সত্যর বেড়ে ওঠা, সেখানে দাঁড়িয়ে সুব্রত-র তোপ ‘‘আমি যদি টুটু-অঞ্জনদের পাঠানো কাগজে সই করে দিতাম তা হলে ও তো ফুটবল সচিব পদে নমিনেশনই পেত না। আমি মাসে দেড় লাখ টাকার লোভে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি। বিক্রি হইনি। তাই কেউ কেউ দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে।’’

আর নিজের বাড়ি থেকে ছয় কিলোমিটার দূরের শরৎসদনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সত্যজিতের মন্তব্য, ‘‘শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামীদের পরম্পরা রক্ষা করে আমি কোনওদিন মোহনবাগান ছাড়িনি। অন্য দলের কোচের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। কেউ কেউ সেই কাজটা করেছে। বিপক্ষ শিবিরে গিয়ে কোচ হয়ে আমাদের ক্লাবকে হারানোর প্ল্যান করেছে। তা হলে সে নিজেকে ঘরের ছেলে বলে কী করে?’’

নাম না করে গুরু-শিয্যের তরজায় জমে উঠেছে একশো পঁচিশ বছর পেরিয়ে আসা মোহনবাগানের নির্বাচন। বিজ্ঞানী থেকে নামী আইনজীবী, ব্যবসায়ী থেকে বামপন্থী দলের কাউন্সিলর—ভোট যুদ্ধে নেমে পড়েছেন অনেকেই। দলের চাপের মুখে নাম তুলে নিলেও পিছন থেকে অনেক বিধায়ক বা কাউন্সিলর কাজ করছেন। লড়াইতে রয়েছেন বিদেশ বসু বা শঙ্কর সরকারের মতো ফুটবলারও। কিন্তু পুরো নির্বাচনের প্রধান মুখ বাগানের দুই ঘরের ছেলে সুব্রত আর সত্যজিৎ-ই। তাদের সামনে রেখেই যুদ্ধে নেমেছে দু’পক্ষ। বক্তা হিসাবে ওদের চাহিদাও তুঙ্গে।

রবিবার বাগানের নির্বাচন। নেতাজি ইন্ডোরে। তার আগে শহর থেকে জেলা জুড়ে যা হচ্ছে তা এক কথায় মনে পড়াচ্ছে কয়েকদিন আগের পুরসভা নির্বাচনকে। পিন কোড ধরে ধরে ভোটার লিস্ট নিয়ে নেমে পড়েছেন কর্মীরা। অঞ্চল ধরে ধরে সভা করছে দু’পক্ষই। চিঠি দিয়ে সভায় ডেকে আনা হচ্ছে সদস্যদের।

ইতিমধ্যেই পনেরোটির উপর সভা করে ফেলেছে শাসক, বিরোধীরা। বর্ধমান, শ্রীরামপুর, নৈহাটি, বেহালাতে সভা করলেও সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতা এবং হাওড়ায়। কারণ ন’হাজার ভোটের মধ্যে এই তিনটি অঞ্চলেই সদস্য-ভোট সবচেয়ে বেশি। দু’পক্ষের হিসাব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে উত্তর কলকাতায় সবথেকে বেশি ভোট রয়েছে। প্রায় তিন হাজার দু’শোর মতো। দক্ষিণে বাইশশো। আর হাওড়ায় দু’হাজারের মতো ভোট।

শাসক ও বিরোধী গোষ্ঠী সুব্রত-সত্যকে নিয়ে নিয়ম করে বেরিয়ে পড়ছেন প্রতিদিন সন্ধ্যায়। আর বাজার গরম করতে দুই প্রাক্তন ফুটবলারই একে অন্যের বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে নানাভাবে আক্রমণ করছেন। সুব্রতর পাড়া শ্যামনগরে অবশ্য সভা করার প্রয়োজন মনে করছেন না সত্যজিৎ। কেন? শাসকের হয়ে ফুটবল সচিব পদ প্রার্থী বললেন, ‘‘ওসব অঞ্চলে আমাদের ভোট অটুট। কর্মীরা বলছে যাওয়ার দরকার নেই।’’ যা শুনে বিরোধী সুব্রত-র প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাক না। গেলে দেখতে পাবে সর্বত্রই ভূমিকম্প হচ্ছে। ঠিকঠাক ভোট হলে দু’শো ভোটও পাবে না ও।’’ যা শুনে হাসেন এক সময় সুব্রতর কোচিংয়ে খেলা সত্য। ‘‘আরে ভোটটা হতে দিন। ক্লাবকে রাস্তায় নামিয়ে আনলে ভোট পাওয়া যায় না।’’

শাসক শিবিরের সচিব পদপ্রার্থী অঞ্জন মিত্র অসুস্থ। তাঁর হয়ে প্রচারে নেমেছেন কর্মসমিতিতে দাঁড়ানো মেয়ে সোহিনী। আদালত থেকে স্ট্র্যাটেজি—পুরোটাই সাজাচ্ছেন অর্থ সচিব পদে দাঁড়ানো দেবাশিস দত্ত। তাঁর সঙ্গী হচ্ছেন সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু। বিরোধীদের হয়ে সব সামলাচ্ছেন সচিব পদে প্রার্থী বলরাম চৌধুরী এবং সুব্রত স্বয়ং।

টিম পাঁচ বছর পর ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছে। তাতে অবশ্য মন নেই কারও। দশ বছর পর বাগান নির্বাচন যে সত্যিই বেশ জমে গিয়েছে।

Subrata vs Stayajit mohun bagan heatwave mohun bagan election mohunbagan hot talks subrata bhattacharya satyajit chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy