Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘এ বার এগিয়ে রাখতেই হচ্ছে সানরাইজার্সকে’

টিমের যেটা শক্তি, সেটা ওরা ধরে রেখেছে। যেমন ওপেনিংয়ে শিখর ধবন, ডেভিড ওয়ার্নার। বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমার, রশিদ খান। এর সঙ্গে সানরাইজার্স এ বার পুরো কলকাতা নাইট রাইডার্সের মিডল অর্ডার তুলে নিয়ে এসেছে।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৩
Share: Save:

দু’দিনের আইপিএল নিলামের শেষে সব চেয়ে বড় যে প্রশ্নটা উঠছে, তা হল, কোন দল কেমন হল। আটটা দলকে দু’টো ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। টপ হাফ এবং বটম হাফ।

কাগজে কলমে আটটা দলের মধ্যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, চেন্নাই সুপার কিংগস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর-কে আমি উপরের দিকে রাখব। এরাই এ বারের ফেভারিট। এই চারটে টিমের বিশেষত্ব হল, ওরা নিজেদের কোর গ্রুপটা ধরে রেখে তার সঙ্গে বাড়তি শক্তি যোগ করেছে।

প্রথমে সানরাইজার্সের কথায় আসি। ওদের টিমের যেটা শক্তি, সেটা ওরা ধরে রেখেছে। যেমন ওপেনিংয়ে শিখর ধবন, ডেভিড ওয়ার্নার। বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমার, রশিদ খান। এর সঙ্গে সানরাইজার্স এ বার পুরো কলকাতা নাইট রাইডার্সের মিডল অর্ডার তুলে নিয়ে এসেছে। মণীশ পাণ্ডে-শাকিব আল হাসান-ইউসুফ পাঠান। সঙ্গে রয়েছে কেন উইলিয়ামসনও।

এত ভাল মিডল অর্ডার কিন্তু আগের দু’বার সানরাইজার্সের ছিল না। সঙ্গে আছে ডেথ ওভারে ভুবনেশ্বরের মতো বোলার। দারুণ ভারসাম্য। আমি তো বলব, এই টিমটা যদি এ বারের আইপিএলের প্লে অফে না যায়, তা হলে অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হবে।

আরও পড়ুন: টাকা উড়িয়ে আইপিএল নিলাম শেষ, তৃতীয় বারে দল পেলেন ক্রিস গেল

দিল্লি এ বার রিকি পন্টিংকে কোচ হিসেবে নিয়েছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কিন্তু প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের কোচিংয়ে অতীতে খুবই উপকৃত হয়েছিল। তাই দেখার অপেক্ষায় ছিলাম, নিলামে পন্টিং কি স্ট্র্যাটেজি নেয়। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কিন্তু বেশ আগ্রাসী ছকেই নিলামে ঝাঁপাল। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে প্রচুর দামে তুলে নিল। নেওয়া হল গৌতম গম্ভীরকেও। গম্ভীরের নেতৃত্বে কেকেআর দু’বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরের ছেলে হিসেবে দিল্লিকে ট্রফি দেওয়ার জন্য কিন্তু মরিয়া হয়ে থাকবে গম্ভীর। অনেকে হয়তো বলতে পারেন, ম্যাক্সওয়েল তো পুরোপুরি ফাটকা। আমার মনে হয়, পন্টিংয়ের কোচিংয়ে ম্যাক্সওয়েলের মানসিকতায় পরিবর্তন দেখা যেতেই পারে।

দু’দিনের আইপিএল নিলামের শেষে কোন দল কেমন

পরের দু’টো টিম— অর্থাৎ চেন্নাই এবং ব্যাঙ্গালোর পুরনো যুদ্ধের ঘোড়া। ভারতীয় ক্রিকেটের দুই সফলতম অধিনায়ক দুই দলের নেতৃত্বে। ধোনির টিমে এ বার হয়তো আর. অশ্বিন নেই, কিন্তু হরভজন সিংহকে নিয়েছে চেন্নাই। বেশ কয়েক জন অলরাউন্ডারও আছে ওদের। যেমন— রবীন্দ্র জাডেজা, ডোয়েন ব্র্যাভো, শেন ওয়াটসন, মিচেল স্যান্টনার। অন্য দিকে, কোহালির টিমে এ বার হয়তো ক্রিস গেল নেই, কিন্তু ওরা ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে নিয়েছে। নিয়েছে কুইন্টন ডি’কক-কেও। কোহালি এবং ডি’ভিলিয়ার্সের কথা বাদই দিলাম। আর যাই হোক, আরসিবি-কে ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

এই প্রসঙ্গেই এ বার কলকাতা নাইট রাইডার্সের কথায় আসছি। কেকেআর-কে দেখে প্রশ্ন জাগছে, ব্যাটটা করবে কে? ক্রিস লিন চোট কাটিয়ে আসছে। আন্দ্রে রাসেল এক বছর খেলার বাইরে। রবিন উথাপ্পা বা দীনেশ কার্তিকের পক্ষে আইপিএলের মতো একটা টুর্নামেন্ট ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে যাওয়া কঠিন। আমার মনে হয়, শাকিব আল হাসান এবং মণীশ পাণ্ডেকে ছেড়ে দেওয়া বড় ভুল হয়েছে। তা ছাড়া গম্ভীরের বদলি অধিনায়কই বা কে? উথাপ্পাকে আমার অন্তত সঠিক বিকল্প মনে হচ্ছে না। ইডেনের পিচের চরিত্র যতই বদল হোক, এপ্রিল-মে মাসে দুই মিচেল— স্টার্ক এবং জনসনের পক্ষে দারুণ কিছু করা মুশকিল। স্থানীয় ছেলে কনিষ্ক শেঠ-কে ব্যাক আপ বোলার হিসেবে দলে রাখা উচিত ছিল। কেকেআরের চ্যালেঞ্জটা এ বার কঠিন হতে যাচ্ছে।

বাকি তিনটে টিম থাকছে পঞ্জাব, রাজস্থান এবং মুম্বই। রোহিত শর্মাদের দল নিলামে সে রকম কিছু চমক দিতে না পারলেও মাঠে ভাল কিছু করতেই পারে। রাজস্থানে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ আছে। যেমন অজিঙ্ক রাহানে, বেন স্টোকস, স্টিভ স্মিথ, জস বাটলার। কিন্তু ভারসাম্যটা ভাল নয়। আর পঞ্জাবের সমস্যা হল, ক্রিস গেল, ডেভিড মিলার বা যুবরাজ সিংহের ধারাবাহিকতার অভাব। যে দিন এরা খেলবে, সে দিন জিতবে। কিন্তু ব্যর্থ হলে সমস্যা আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE