অতীত নয়। সামনের দিকেই নজর সঞ্জয় সেনের।
এমনকী শিলিগুড়ির তিক্ত স্মৃতি ভুলে শিলং থেকে তিন পয়েন্ট তুলতে এতটাই মরিয়া বাগান কোচ যে, গ্লেনের বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে অভিযোগ হোক কিংবা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হার— কিছুই গুরুত্ব দিতে চাইছেন না চেতলার বাসিন্দা। সোমবার বিকেলে শিলং থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘অঙ্ক কষার সময় শেষ। এ বার মাঠে নেমে করে দেখানোর পরীক্ষা। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে আগে কী হয়েছে, কে কী বলেছে, ওই সব ভাবলে চলবে না।’’
বাগানের বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে দু’টো হোম (ডিএসকে শিবাজিয়ান্স, বেঙ্গালুরু এফসি) আর একটা অ্যাওয়ে, মঙ্গলবার শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে। সঞ্জয়ের অবশ্য বেশি চিন্তা অ্যাওয়ে ম্যাচে পাহাড়ি প্রতিপক্ষকে নিয়ে। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘পয়েন্ট টেবলের নীচের দিকে থাকা টিমগুলো কখন বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, বলা কঠিন। লাজং যদিও চার নম্বরে, তবে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে নেই। ওদের হারানোরও কিছু নেই। তাই বড় টিমের বিরুদ্ধে কোনও মতে ড্র করে এক পয়েন্ট তুলতে পারলেই খুশি। কিন্তু আমাদের তো আর সেটা করলে চলবে না!’’
পরিসংখ্যানের সরণি ধরে হাঁটলে দেখা যাবে, ঘরের মাঠে একেবারেই সহজ প্রতিপক্ষ নয় লাজং। এ বার আই লিগে ছ’টা হোম ম্যাচের মধ্যে একমাত্র বেঙ্গালুরু এফসি ছাড়া আর কারও কাছে হারেনি তারা। তা ছাড়া বারাসতেও তো পাহাড় টপকাতে পারেননি সনি-কাতসুমিরা। সঞ্জয়ের আরও বড় দুশ্চিন্তা, ডার্বির মতো মঙ্গলবারও দলের গোলমেশিন সনি নর্ডিকে পাবেন না তিনি। যদিও আত্মবিশ্বাসী বাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘সনি টিমের সম্পদ। কিন্তু ওকে ছাড়া কি আমরা একটাও ম্যাচ জিতিনি? সনি নেই এটা না ভেবে বরং যারা আছে তাদের নিয়েই আমি তিন পয়েন্ট তুলতে চাই।’’
লাজংয়ের শক্তি তাদের মাঝমাঠ। একটা সময় ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের জেনারেল পেন ওরজি এখন পাহাড়ি দলের অন্যতম ভরসা। তাঁর পাশে পেনা ও উইলিয়ামসও ভয়ঙ্কর। বেশির ভাগ পাহাড়ি ছেলেদের নিয়ে গড়া লাজং প্রচুর পাস খেলে। তাই মঙ্গলবারের ম্যাচে বিপক্ষের গতি নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সঞ্জয়ের। বাগান কোচ অবশ্য বলছিলেন, ‘‘ঘরের মাঠে হোম টিম সুবিধে পাবে, এটাই স্বাভাবিক। অনুকূল পরিস্থিতিতে থাকা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সফল হলেই তো এক নম্বরে ওঠা যায়!’’
সাধারণত দেখা যায়, ডার্বি হারের একটা বড় প্রভাব সেই টিমের উপর পড়ে পরের ম্যাচে। কিন্তু সঞ্জয়ের সবুজ-মেরুন সংসারে যেন সে রকম সমস্যা নেই। অন্তত কোচের কথা শুনে তাই মনে হবে! উল্টে ডার্বি হারের পর শিলং-বধের লক্ষ্যে আরও টগবগ করছে গোটা দল। বাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘শুধু ডার্বি নয়। পরপর দু’টো ম্যাচ হেরেছি। এ বার আমার ফুটবলারদের ঠিক করতে হবে ওরা চ্যাম্পিয়ন হতে চায়, নাকি সেকেন্ড-থার্ড বয় হলেই খুশি!’’
প্লেয়ারদের না হোক, অন্তত তাঁদের কোচের চ্যাম্পিয়নের মতোই মেজাজ! এখন দেখার এই আগ্রাসী মেজাজটা নিয়েই পাহাড় থেকে সমতলে ফিরতে পারে কি না সঞ্জয়ের বাগান!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy