Advertisement
E-Paper

‘চেয়েছিলাম এই ম্যাচটাই ফাইনাল হোক’, সেমিতে উঠে আলকারাজ়ের প্রশংসায় জোকোভিচ

৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের ম্যাচে কার্লোস আরকারাজ়কে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে নোভাক জোকোভিচ। তিনি চেয়েছিলেন, আলকারাজ়ের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলতে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:০২
tennis

ম্যাচ শেষে কার্লোস আলকারাজ়কে (বাঁ দিকে) আলিঙ্গন নোভাক জোকোভিচের। ছবি: রয়টার্স।

খেলার শুরুটা হয়েছিল মঙ্গলবার। যখন শেষ হল, তখন ঘড়ির কাঁটা বলছে, বুধবার হয়ে গিয়েছে। ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের ম্যাচে কার্লোস আরকারাজ়কে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে উঠেছেন নোভাক জোকোভিচ। ১৬ বছরের ছোট খেলোয়াড়কে চার সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন তিনি। তবে সেমিফাইনালে উঠেও কিছুটা আক্ষেপ ধরা পড়ল জোকোভিচের গলায়। তিনি চেয়েছিলেন, আলকারাজ়ের বিরুদ্ধে ফাইনালে খেলতে। সেই লড়াই হয়ে গেল কোয়ার্টার ফাইনালেই।

টেনিসের বিস্ময় প্রতিভা বলা হয় আলকারাজ়কে। ২১ বছরের মধ্যে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন তিনি। সবচেয়ে অল্পবয়সি টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে হয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর। সেই প্রতিভাকে হারালেও জোকোভিচের গলায় শোনা গেল প্রতিপক্ষের প্রতি প্রশংসা। আলকারাজ়ের সাফল্যে মুগ্ধ তিনি। খেলা শেষে জোকোভিচ বললেন, “কেরিয়ারে কার্লোস যা অর্জন করেছে তার জন্য আমি ওকে শ্রদ্ধা করি। ও দুর্দান্ত প্রতিপক্ষ। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ এক নম্বর। চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছে। আমি নিশ্চিত ওর হাতে আরও গ্র্যান্ড স্ল্যাম দেখব। ও আমার চেয়েও বেশি দিন খেলবে। চেয়েছিলাম, এই ম্যাচটাই ফাইনাল হোক।”

আলকারাজ়ের কাছে প্রথম সেট হারেন জোকোভিচ। সপ্তম গেমেই পায়ে লাগে তাঁর। খোঁড়াতে দেখা যায় ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিককে। নবম গেমের পর মেডিক্যাল বিরতিও নেন জোকার। ফিরে সেই সেট হারলেও পরের তিনটি সেট জিতে ম্যাচ জেতেন তিনি। এই ম্যাচকে তাঁর খেলা অন্যতম সেরা ম্যাচ আখ্যা দিয়েছেন জোকোভিচ। আর সেটা সম্ভব হয়েছে তাঁর মেডিক্যাল দলের জন্য। তাঁর পায়ে কী সমস্যা হয়েছে তা খোলসা করতে না চাইলেও ওষুধ খেয়ে খেলার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জোকার। তিনি বললেন, “ওষুধ কাজ করেছে। কী সমস্যা হচ্ছে তা প্রতিযোগিতার মাঝে বলতে চাইছি না। তবে হ্যাঁ, ওষুধ খাচ্ছি। এখন ফিরে গিয়ে আবার ওষুধ খেতে হবে। ভাল লাগে না। কিন্তু কিছু করার নেই।”

যত সময় গড়িয়েছে তত খেলা ভাল হয়েছে জোকোভিচের। তত আলকারাজ়ের বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়েছেন তিনি। অথচ সেই তিনিই খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। জোকারের কথায়, “যদি দ্বিতীয় সেট হারতাম তা হলে হয়তো আর খেলতাম না। কিন্তু আসতে আসতে ভাল লাগতে শুরু করল। কয়েকটা গেম জিতলাম। তখনই দেখলাম, কার্লোস ওর শট খেলতে দোটানায় পড়ছে। সেটা কাজে লাগালাম। পরের দিকে আর ব্যথা হয়নি। কাল সকালে বুঝতে পারব। এখন জয় উপভোগ করব।”

জোকোভিচের জীবনে তাঁর পরিবারের কতটা ভূমিকা তা আগেও বার বার দেখা গিয়েছে। গত বছর একটিও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি। তবে এ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর আগেই বলেছিলেন, কন্যার ভাগ্যে হয়তো এ বার চ্যাম্পিয়ন হবেন। শেষ ষোলোর ম্যাচে গ্যালারিতে ছিলেন জোকোভিচের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা। খেলা শেষের পরেও ছিলেন তাঁরা। কথা বলতে বলতে হঠাৎ সেই দিকে নজর যায় জোকোভিচের। তিনি বলে ওঠেন, “আরে আমার ছেলে-মেয়ে এখনও এখানেই আছে। রাত ১টা বেজে গিয়েছে। যাও হোটেলে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।” তখনই দেখা যায়, জোকোভিচের কন্যা তাঁকে হাতের ঘড়ির দিকে ইঙ্গিত করছে। অর্থাৎ, সেও বোঝায় যে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। এই দৃশ্যে কোর্টে হাসির রোল ওঠে।

২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মাঝেও চোট পেয়েছিলেন জোকোভিচ। চোট নিয়েই খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতাও জেতেন। এ বারও কি সেই ছবি দেখা যাবে? সে বারের প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রয়েছে জোকোভিচের। তিনি বলেন, “এ বারের পরিস্থিতিও অনেকটা সে বারের মতো। চোটের কারণেই আরও আক্রমণাত্মক শট খেলছি। দ্রুত পয়েন্ট তোলার চেষ্টা করছি। আসলে আগের বারের অভিজ্ঞতা আমাকে মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।”

টান টান ম্যাচ খেলার পরেও তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি ও রসিকতা করার দক্ষতা যে একই রকম রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে সঞ্চালক জানান, মঙ্গলবার কোয়ার্টার ফাইনালের পর শুক্রবার আলেকজ়ান্ডার জ়েরেভের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে এক দিন অতিরিক্ত বিশ্রাম পাবেন তিনি। এতে তাঁর সুবিধা হবে। তার জবাবে জোকোভিচ সঞ্চালককে শুধরে দিয়ে বলেন, “বুধবার কিন্তু হয়েই গিয়েছে।” তার পরেই কোর্টের বাইরে হাঁটা লাগান তিনি।

Novak Djokovic Australian Open 2025 Carlos Alcaraz
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy