শেষ পর্যন্ত সেই লড়াইটা হতে চলেছে। সময় হলেই আজ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রিংয়ের মধ্যে উঠে দাঁড়াবে, মুঠো দুটো স্পর্শ করার পর রেফারি নির্দেশ দিলেই শুরু হয়ে যাবে দু’জনের ঘুষি মারার প্রস্তুতি। গত দু’মাসের যুদ্ধে— কাট, ব্লো, জ্যাব, হুকগুলোতে হয়তো শরীরে আঘাতের চিহ্ন এঁকে দিয়েছে, রক্তাক্ত করেছে কিন্তু তাতে লড়াকু মানসিকতাটা এতটুকুও পাল্টায়নি। সেটা একই রকম তাজা আছে। তাই নাট্যমঞ্চও সেরা লড়াইটা দেখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
সাধারণ ভাবে দেখলে কয়েকটা জিনিস কিন্তু স্পষ্ট। যেমন যুদ্ধের এক পক্ষ বেঙ্গালুরু নিজেদের বোলিং শক্তিকে নতুন ভাবে ঢেলে সাজিয়েছে। বেঙ্গালুরুর অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পাশে নিজেদের উজ্জ্বল করে তুলেছে চাহাল আর ওয়াটসন। ঠিক সময়ে বোলিং ইউনিটে নিজের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিচ্ছে ইকবাল আবদুল্লা। পাওয়ার প্লে-তে দলের হাত যাতে খালি না থাকে সেটা দেখছে অরবিন্দ। সঙ্গে গেইলকে ভুললে চলবে না। ওর দু’ওভার কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। হায়দরাবাদের ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বর জায়গাটা নির্দিষ্ট না থাকলেও ওদের কিন্তু নড়বড়ে কখনই মনে হয়নি। নক আউটে তাই ওদের খুব একটা বিপদেও পড়তে দেখা যায়নি।
তবে দুটো দলই কিন্তু একই রকম অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। এমন একটা সময়, যখন ওরা প্রায় ছিটকে যাওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সে দিন এবি ডে’ভিলিয়ার্স বা গত ম্যাচে ওয়ার্নার ও রকম না জ্বলে উঠলে বেঙ্গালুরু আর হায়দরাবাদ হয়তো ক্যানভাসেই থাকত না। অনেকটা মাটিতে পড়ে থাকা বক্সারের মতো। যার কাউন্টিং শুরু হয়ে গিয়েছিল। তারপরও ওরা নিজেদের মাটি থেকে টেনে তুলে দাঁড় করিয়েছে।
মনে মনে আমরা জানি বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে টক্করে হায়দরাবাদের কোনও জায়গা নেই। এই যুদ্ধে ওদের সেরা বাজি হল ১৭০ রানের মতো তাড়া করে জেতা। ব্যাস, তার চেয়ে বেশি নয়। তবে এটাই কিন্তু হায়দরাবাদের বোলিং ইউনিটকে একটা এসওএসও পাঠিয়ে রাখছে। যে, বোলিং ইউনিটের সেরাটা চাই। সেখানে একটা ট্রেন্ট বোল্ট কিন্তু নেহরা বা মুস্তাফিজুরের বদলি হিসেবে যথেষ্ট নয়। আক্ষরিক অর্থে হায়দরাবাদের দু’দিক থেকেই বোলিং আক্রমণে চাই ভুবিকে।
হ্যাঁ, ভুবনেশ্বর কুমার এখন ঠিক সে রকম ফর্মেই আছে। এ বারের আইপিএলে ও এই ফর্মটা দেখিয়ে আসছে। তবে সেটা ধীর-স্থির ভাবে, নিঃশব্দে। নাকের পাটা ফুলিয়ে, প্রতিক্ষের দিকে তীব্র কোনও দৃষ্টি না হেনে বা ভুরু না বেঁকিয়ে। ব্যাটসম্যানকে ও কিন্তু সোজাসুজি লাইনে কখনও আক্রমণ করছে না। ওর বোলিংয়ে সব সময় সুক্ষ্ম, চতুরতা মেশানো একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি স্কিলের সঙ্গে ওর ফিটনেসেরও প্রশংসা করতে হবে। আউটফিল্ডে ওর ফিল্ডিংও যে রকম মসৃণ দেখাচ্ছে, খুব কম ক্রিকেটারেরই সেটা থাকে।
ভুবি আর কোহালির লড়াইটা তাই দারুণ জমবে বলে মনে হচ্ছে। অন্য কারও স্ক্রিপ্ট পড়াটা কোহালির একেবারেই না পসন্দ। এ বারে আইপিএলে ও অপ্রতিরোধ্য। ভুবিও এ মরসুমে সেরা বোলিং করছে। তাই দু’জনের লড়াইটা উপভোগ্য হবে আশা করা যায়।
সবাই বেঙ্গালুরুর দিকেই পাল্লা ভারি দেখছে। এটা এক দিক থেকে হায়দরাবাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। হয়ে উঠতে পারে ওয়ার্নারের দলের জন্য শেষ লড়াইয়ের বারুদও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy