Advertisement
E-Paper

কোচিং জিনিসটা কঠিন তবে আর্সেনালের ডাক এলে ভাবব

এ যেন এমিরেটস স্টেডিয়ামের গ্যালারি! মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার একটা মলের আবহটা ছিল যেন সে রকমই। আর্সেনালের লাল-সাদা জার্সি পরে দাড়িয়ে অসংখ্য ভক্ত।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০১
ম্যাচ শুরুর আগে। অঁরি-ফোরলান। ছবি: উৎপল সরকার।

ম্যাচ শুরুর আগে। অঁরি-ফোরলান। ছবি: উৎপল সরকার।

এ যেন এমিরেটস স্টেডিয়ামের গ্যালারি!

মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার একটা মলের আবহটা ছিল যেন সে রকমই।

আর্সেনালের লাল-সাদা জার্সি পরে দাড়িয়ে অসংখ্য ভক্ত। যাঁদের শব্দব্রহ্মে কারও কারও মনে হতেই পারে, উত্তর লন্ডনের বিশ্বখ্যাত ফুটবল ক্লাবটার পাড়ায় চলে এলাম না তো? ঘড়ির কাঁটায় ঠিক বিকেল চারটে। কালো টি শার্ট আর ক্যাজুয়াল জিনসে মলে প্রবেশ করলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ভরিয়ে দিলেন ভক্তরা। সবাই অনবরত চিৎকার করে যাচ্ছেন, ‘‘কিঙ্গ, কিঙ্গ, আওয়ার কিঙ্গ।’’ সত্যিই তো আর্সেনালের রাজা! যত দিন লাল-সাদা জার্সি পরে খেলেছেন, বিপক্ষ গোলের সামনে রাজত্ব করেছেন। যাঁর মূর্তি আজও এমিরেটসের বাইরে যত্ন করে রাখা। তিনি— বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি সুপারস্টার থিয়েরি অঁরি। ওপেন মিডিয়া সেশন ও কয়েকজন বাছা সাংবাদিকের সঙ্গে রাউন্ড টেবলে যিনি পোগবা থেকে ব্যালন ডি’অর, রোনাল্ডো থেকে ওয়েঙ্গার, প্রতিটা প্রসঙ্গে নিজের মনোভাব দিয়ে গেলেন।

আইএসএল

আনেলকা, পিরেস, লুন্ডবার্গ— আমার অনেক সতীর্থের থেকে শুনেছি আইএসএলের ব্যাপারে। সবাই বলেছে খুব কঠিন লিগ। ভারতে ফুটবলের উন্মাদনা আছে। কলকাতায় এসেও সেটা টের পাচ্ছি। শুনেছি এই লিগে এক একটা টিমকে কয়েক দিন অন্তর অন্তর ম্যাচ খেলতে হয়। সেটা খুবই কঠিন।

‘আর্সেনাল ইনভিনসিবল’-এর অংশ

স্বপ্নের মতো ছিল সেই মরসুম। প্রিমিয়ার লিগে একটাও ম্যাচ হারিনি আমরা। ইপিএল খুব কঠিন লিগ। কিন্তু আমরা পেরেছিলাম। আমাদের এই কৃতিত্ব ভবিষ্যতে অন্য কোনও ক্লাব ছুঁতেই পারে। কিন্তু আমি খুশি এটা ভেবে আমরাই প্রথম দল ছিলাম।

স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন

অন্যতম সেরা কোচ। আমার দুর্ভাগ্য, ট্রফির জন্য ফার্গুসনের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে। কিন্তু ফার্গুসনের মতো কোচ খুব কম আছেন। যিনি একটা ক্লাবে বিভিন্ন প্রজন্ম তৈরি করেছেন।

ওয়েঙ্গারের আর্সেনাল

আর্সেন ওয়েঙ্গার এসে গোটা ক্লাবের চেহারাটাই পাল্টে দিয়েছিলেন। এখন আর্সেনাল যেখানে আছে সেটা পুরোপুরি ওয়েঙ্গারের জন্য। ক্লাবের মধ্যে নিজের মানসিকতা ভরে দেন। আর্সেনালের সফল হওয়ার পিছনে ওয়েঙ্গার অন্যতম কারণ। আমার সৌভাগ্য ওঁর অধীনে খেলেছি।

দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান

মোরিনহো সেরা কোচেদের মধ্যে একজন। নতুন একটা ক্লাবে এসে নিজের মানসিকতা ভরে দিতে একটু সময় লাগে মাঝে মাঝে। কোনটা প্রথম একাদশ হওয়া উচিত সেটা একটু ঠিক করতে সময় লাগে। কিন্তু মোরিনহো ঠিক পারবেন।

আর্সেনাল চ্যালেঞ্জার

আর্সেনাল দলটা এ বার খুব ব্যালান্সড। অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজ, মেসুট ওজিল— দারুণ সমস্ত ফুটবলার আছে। এখন দল ভাল খেলছে। তাই না পারার কিছু নেই।

বার্সেলোনার ত্রিমুকুট

‘ইনভিনসিবল’-এর মতো বার্সার হয়ে ত্রিমুকুট জেতাও আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। কিন্তু আর্সেনালের থেকে সম্পূর্ণ উল্টো ছিল। পেপ গুয়ার্দিওলার স্টাইল ছিল অন্য রকম। আমি, এটো আর মেসি। আমাকে উইংয়ের দিকে বেশি খেলতে হয়েছে। মেসি বা এটো বেশি ‘ড্রিফ্ট’ করত মাঝখানে। কিন্তু তাতেও দলকে সাহায্য করতে পেরে খুশি।

ব্যালন ডি’অর কার

আমার এ বার চার জন ফেভারিট। গ্যারেথ বেল, গ্রিজম্যান, মেসি আর রোনাল্ডো। সবাই জানে ব্যালন ডি’অর ট্রফি জেতার জন্যও দেওয়া হয়। গত মরসুমে রোনাল্ডো ইউরো আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে। কিন্তু বাকিদেরও সুযোগ আছে। যদিও মেসির প্রতি আমার একটা আলাদা আবেগ সব সময় থাকবে।

মেসি-রোনাল্ডো আপনার আমলের ডিফেন্ডার পেলে পারতেন?

(হাসতে হাসতে) বলা কঠিন। আমি নিজের কেরিয়ারে অনেক বড় বড় ডিফেন্ডারের বিরুদ্ধে খেলেছি। তবে হ্যাঁ, মেসি-রোনাল্ডো তো সাধারণ ফুটবলার নয়। তাই বলা মুশকিল।

মেসি, না রোনাল্ডো

দু’জনের মধ্যে তুলনা টানার দরকার কী? তুলনা না টেনে দু’জনের খেলার আনন্দ নেওয়া উচিত সবার।

২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের ঢুঁসো

জিদান আমার জন্য সব সময় একজন আইকন। ও আমার দেখা সেরাদের মধ্যে পড়ে। আমরা একসঙ্গে জিতি, একসঙ্গে হারি। তবে মাতেরাজ্জি-ই ইতালিকে বিশ্বকাপটা জিতিয়েছিল!

কোচ জিদান

আমার মনেই হয়েছিল জিদান কোনও দিন না কোনও দিন বড় দলে কোচিং করাবেই। রিয়াল মাদ্রিদে ওর সাফল্য দেখে আমি একদমই অবাক নই। ওর মধ্যে মশলা আছে দারুণ কোচ হওয়ার।

পল পোগবা পারবেন কি

সবে নতুন ক্লাবে এসেছে। আর একটু সময় দিতে হবে। মাঝে মাঝে সমস্যা হয় নতুন কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে। কিন্তু আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে ইপিএলে পোগবা দুর্দান্ত খেলবে।

ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন

আমার বাবার ইচ্ছে ছিল আমি ফুটবলার হই। মোনাকোর অ্যাকাডেমিতে যাওয়া আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল। আমি কোনও দিন ভাবিনি এত দূর পৌঁছব।

স্ট্রাইকারদের বিবর্তন

আগেকার সময় উইঙ্গাররা পাস দিত আর স্ট্রাইকাররা গোল করত। এখন উল্টোটা। স্ট্রাইকাররা পাস দেয় আর উইঙ্গাররা গোল করে। স্ট্রাইকারদের খেলার স্টাইল সব সময় পাল্টাচ্ছে। আগে ছিল স্ট্রাইকারদের পাস বাড়াতে হত। তার পর এল রোনাল্ডোর (ব্রাজিল) মতো স্ট্রাইকার। যে নিজে থেকে ডিফেন্সকে তাড়া করত। এখন আবার ফলস নাইন। যেখানে স্ট্রাইকাররা সব সময় মুভমেন্ট করছে।

কোচ অঁরি

বেলজিয়ামের সহকারী কোচেদের মধ্যে একজন আমি। এই মুহূর্তে শিখছি। এখনই কোচ হওয়ার পরিকল্পনা নেই। আর বিশ্বাস করুন, কোচিং জিনিসটা খুব কঠিন। এখন টের পাচ্ছি। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা কে বলতে পারে। কোনও দিন আর্সেনালের কোচ হওয়ার সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই ভাবব।

আইএসএলে কোচিং

নেভার সে নেভার!

Thierry Henry Coaching Arselan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy