এক বছর আগেও একার চেষ্টায় বিছানা ছেড়ে উঠে বসতে পারতেন না। সাহায্য লাগত। গল্ফের কোর্সে নেমে খেলা তো বহু দূরের কথা।
জীবনে আর কোনও দিনও গল্ফ স্টিক হাতে সবুজ ঘাসে পা রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে তাঁর নিজের মনেই ছিল অসংখ্য প্রশ্ন। অবশেষে এক বছরেরও বেশি সময়ের পর পিঠের চোট সারিয়ে আবার গল্ফ কোর্সে গল্ফের বাঘ।
টাইগার উডসের যে প্রত্যাবর্তনে সবচেয়ে খুশি শোনাচ্ছে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদেরই।
চোদ্দোটি মেজর খেতাবের মালিক, বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা গল্ফ মহাতারকা নিজেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। প্রত্যাবর্তনের টুর্নামেন্ট হিসাবে বেছেছেন তাঁর নিজের আয়োজিত হিরো ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জ গল্ফকে। বাহামাসের অ্যালবানি গল্ফ ক্লাবে বসে বলেছেন, ‘‘যে অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম আর আজ যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, দু’টো সম্পূর্ণ আদালা পৃথিবী! প্রচণ্ড আতঙ্কে কেটেছে গত বছরটা। বিছানা থেকেই উঠতে পারছিলাম না। কী করে আশা করি একদিন আবার ১২০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় গল্ফ স্টিক দিয়ে বল মারতে পারব?’’
কথাগুলো বলার সময় বাইরে আঝোর বৃষ্টি। তবে ষোলো মাসের মেঘ কেটে একদম পরিষ্কার উডসের মুখমণ্ডল। জানিয়ে দিলেন, তাঁর পাখির চোখ আজও একই রয়েছে। বলেন, ‘‘আজও গল্ফ খেলার পিছনে উদ্দেশ্যটা সেই একই, জেতা। জানি প্রত্যেকে চাইবে আমাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে। এত দিন পরে ফিরে আমার কাজটাও সহজ হবে না। তবে নিজের খেলায় অনেক পরিবর্তন করেছি। বলটা ঠিক জায়গা রেখে নিজের সেরাটা দেব। যাতে রবিবারের ফাইনাল রাউন্ডে বাকিদের পাশে আমাকেও লড়াইয়ে দেখতে পান আপনারা।’’
পিঠের চোটে কাবু হওয়ার আগে উডসে শেষ খেলেন উইন্ডহ্যাম চ্যাম্পিয়নশিপে, ২০১৫-র অগস্টে। মাঝে গিয়েছে ষোলো মাস। এত দীর্ঘ সময় এর আগে কখনও গল্ফ থেকে দূরে থাকেননি। এই সময়টায় সতীর্থ গল্ফার, আনুরাগীদের সহমর্মিতা আর সামর্থনে আপ্লুত পিজিএ ট্যুরে ৭৯ খেতাবের মালিক। উডসের কথায়, ‘‘প্রত্যেকে আমাকে যে আন্তরিকতার সঙ্গে সাহায্য করছে, সেটা কল্পনাও করা যায় না। এটুকুই বলব, আমার সতীর্থ গল্ফাররা অসাধারণ সব মানুষ।’’
প্রশংসাটা একই ভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছেন এই টুর্নামেন্টে নামা উডসের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও। আগের বারের চ্যাম্পিয়ন বুব্বা ওয়াটসন বলেন, ‘‘টাইগারের যা কীর্তি তাতে আর কোনও দিনও কোর্সে না নামলেও চলত। কিন্তু আমরা ওকে ফিরে পেতে চেয়েছিলাম। কে তোমার সম্পর্কে কী বলল সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল হল তুমি নিজে নিজের উপর আস্থা রাখো কি না। টাইগার দেখিয়েছে ও শুধু গল্ফ কোর্সে নয়, জীবনেও লড়াই করে জিততে জানে। তাই আমরা প্রত্যেকে ওর এই টুর্নামেন্টে এসেছি টাইগারের জন্য। চোটের সঙ্গে ওর যুদ্ধজয় সেলিব্রেট করতে এবং ওকে সমর্থন করতে। নিজেদের সব দিয়েও সেটা করব।’’ ওয়াটসনের বিশ্বাস, টাকা বা খ্যাতি নয়, উডস এখন শুধু নিজের জন্য খেলবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy