Advertisement
E-Paper

বাগানে শুধু জোড়াফুলেরই চাষ, শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের নির্বাচনে যুযুধান শাসক তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠী, দ্বন্দ্ব-আঁচে তপ্ত বসুবাড়ি!

মোহনবাগান নির্বাচন ঘিরে জেলায়-জেলায়, পাড়ায়-পাড়ায় রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে বিভাজন। দুই শিবিরের প্রচারেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে পুরপিতা, বিধায়ক, এমনকি মন্ত্রীদেরও!

অনির্বাণ মজুমদার ও শোভন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ১১:০১
what will be the role of west bengal cm mamata banerjee in mohun bagan election

(সামনের সারিতে বাঁ দিক থেকে) সৃঞ্জয় বসু, টুটু বসু, ফিরহাদ হাকিম। (পিছনের সারিতে বাঁ দিক থেকে) সৌমিক বসু, দেবাশিস দত্ত, অতীন ঘোষ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মন্ত্রী বনাম মন্ত্রী। মেয়র বনাম ডেপুটি মেয়র। নেতা বনাম নেতা। এহ বাহ্য, বসু বনাম বসু!

পশ্চিমবঙ্গ দেখছে এই অভিনব লড়াই। কেন অভিনব? কারণ, উপরে উল্লিখিত চারটি লড়াইয়ের মধ্যে তিনটি লড়াইয়েই দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই একটি দলের— তৃণমূল! চতুর্থটি পারিবারিক লড়াই। তবে সেখানেও ঘাসফুলের আঘ্রাণ আছে বইকি। যে ঘাসফুল ফুটেছে সবুজ ঘাসের মাঠে, সে মাঠের নাম মোহনবাগান। বয়স একশো বছরেরও বেশি।

খাতায়-কলমে লড়াই দেবাশিস দত্ত বনাম সৃঞ্জয় বসুর। প্রথম জন বর্তমান সচিব। দ্বিতীয় জন প্রাক্তন সচিব। একটা সময়ে দু’জনে হাত ধরাধরি করে মোহনবাগান দল গড়েছেন। কিন্তু এ বার তাঁরা যুযুধান। দু’জনের লড়াই জেলায়-জেলায়, পাড়ায়-পাড়ায় রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দিয়েছে। নির্বাচন জুন মাসে। কিন্তু প্রচারসভা হচ্ছে প্রায় সাধারণ নির্বাচনের ঢঙে। দু’পক্ষ নয় নয় করে প্রায় ৬০টি সভা করে ফেলেছে। দুই শিবিরের মঞ্চেই দেখা দিয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে পুরপিতা, বিধায়ক, এমনকি মন্ত্রীরাও!

খেলা এবং রাজনীতির ময়দানে গুঞ্জন, সৃঞ্জয়ের হয়ে আসরে নেমেছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে, বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা স্বাধীন মল্লিক। দেবাশিসের পক্ষে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মন্ত্রী অরূপ রায় এবং প্রদীপ মজুমদার, তৃণমূলের দুই বিধায়ক খোকন দাশ, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যদিও ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ নৈহাটিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক হিসাবেই পরিচিত।

দেবাশিসের নেতৃত্বে সবুজ-মেরুনের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর স্লোগান ‘আমরাই মোহনবাগান’। সৃঞ্জয়-কামী নেতৃত্বে বিরোধীদের সুর ‘তোমাকে চাই’। এই ‘আমরা-ওরা’র লড়াইয়ে তৃণমূলে যে বিভাজন সবচেয়ে স্পষ্ট, তা হল কলকাতার মেয়র এবং ডেপুটি মেয়রের মধ্যে। মেয়র ফিরহাদ সৃঞ্জয়ের নেতৃত্বে বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে। শোনা যাচ্ছে, খিদিরপুরে তাঁর ঘনিষ্ঠ তিন কাউন্সিলর মোহন-ভোটে সৃঞ্জয়ের হয়ে কাজ করছেন। আবার উত্তর কলকাতায় ডেপুটি মেয়র অতীনের নেতৃত্বে অনেক কাউন্সিলর দেবাশিসের হয়ে সক্রিয়। তৃণমূলের অন্দরে দক্ষিণ কলকাতা বনাম উত্তর কলকাতার একটা দ্বন্দ্ব চিরকালই ছিল। মোহনবাগানের ভোটে তার ছায়াও পড়েছে।

মোহনবাগানের ভোটে বরাবরই উত্তর কলকাতার বড় ভূমিকা থাকে। কারণ, সবুজ-মেরুনের মোট ৬,৮১৮ ভোটারের মধ্যে ২,০১০টি ভোটই উত্তরের শ্যামবাজার, বাগবাজার, ফড়িয়াপুকুর, শোভাবাজার অঞ্চলের। বসুবাড়ি, সেনবাড়ির মতো বহু বনেদি পরিবারের ভোট আছে এখানে। ১৯১১ সালের শিল্ডজয়ীদের মূ্র্তি প্রতিষ্ঠা এবং রাস্তার নামকরণ ‘মোহনবাগান লেন’ হয়েছিল অতীনের হাত ধরে। একাধিক বার প্রকাশ্যেই তাঁর মুখে শাসকগোষ্ঠীর প্রশংসা শোনা গিয়েছে।

মোহনবাগান নির্বাচন হবে আর সিপিএম-বিজেপি একেবারেই থাকবে না, তা কি হয়? খুব জোরালো উপস্থিতি না থাকলেও দুই বিরোধী দলও ইতিউতি উঁকিঝুকি মারছে। উত্তর কলকাতায় সৃঞ্জয়ের হয়ে ভোট টানার কাজে নেমেছেন রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত সঞ্জয় ঘোষ (বাপ্পা)। আবার দেবাশিসের সভায় হাজির ছিলেন মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবের স্ত্রী তথা প্রয়াত মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্রের কন্যা সোহিনী। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, শহরতলির একটি সংবাদপত্রে সৃঞ্জয়ের সমালোচনা করে নাকি একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে এক প্রাক্তন বিজেপি সাংসদকে বলে-কয়ে পরিস্থিতি সামলান সৃঞ্জয়। যদিও এই ঘটনার আনুষ্ঠানিক কোনও সমর্থন মেলেনি। কিন্তু ওই প্রাক্তন সাংসদ ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, ‘‘যদি দেখি তৃণমূল এককাট্টা হয়ে সৃঞ্জয়ের পক্ষে নেমেছে, তা হলে আমিও অন্য ভাবে নামব।’’ সূত্রের খবর, তৃণমূলের মধ্যে ‘বিভাজন’ রয়েছে বুঝে আপাতত তিনি কয়েক দিন গ্যালারিতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে মন্ত্রীদের মধ্যে অরূপ রায় এই নির্বাচন নিয়ে খানিক দোটানায়। প্রথমে হাওড়ায় তিনি শাসকগোষ্ঠীর কর্মসূচিতে ছিলেন। কিন্তু এখন সৃঞ্জয়ের সমর্থনে সভাতেও তাঁকে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বিরোধীদের হয়ে আসরে নেমেছেন (নবান্নের সমর্থন যে সৃঞ্জয়ের দিকে রয়েছে, আগেই তা লিখেছিল আনন্দবাজার ডট কম)। ঘটনাচক্রে, মোহনবাগানের নির্বাচনে উত্তর কলকাতার পরেই গুরুত্ব হাওড়ার। অরূপ সরে যাওয়ায় শাসকগোষ্ঠী আসরে নামিয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্লাবের বর্তমান কার্যকরী সমিতির সদস্য সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি হাওড়ার বালির ‘ভূমিপুত্র’। হাওড়ার ভোটারদের উপর তাঁর যথেষ্ট ‘প্রভাব’ রয়েছে বলে দাবি অনেকের। শাসকগোষ্ঠীর দেবাশিসের হয়ে হাওড়ায় প্রচার করছেন কর্মসমিতির আর এক সদস্য কাশীনাথ দাসও। দীর্ঘ দিন হাওড়া পুরনিগমে ঠিকাদারির কাজ করার ফলে কাশীনাথের বিভিন্ন মহলে প্রভাব রয়েছে বলে অভিমত অনেকের।

মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে জেলা তৃণমূলও বিভক্ত। শাসকগোষ্ঠীর হয়ে দুর্গাপুর এবং বর্ধমানের সভায় গিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং দুই প্রভাবশালী বিধায়ক খোকন দাশ ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগণায় বিরোধীদের হয়ে কাজ করছেন জ্যোতিপ্রিয়ের দাদা স্বাধীন। অসমর্থিত সূত্রের খবর, ওই জেলায় শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে ভূমিকা নিচ্ছেন সাংসদ পার্থ। মোহনবাগানের কর্মসমিতির প্রাক্তন সদস্য তথা রাজারহাট-নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় আবার সৃঞ্জয়ের পক্ষে ময়দানে নেমেছেন। সৃঞ্জয় পাশে পাচ্ছেন বিধাননগরের মেয়র পারিষদ তথা রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তীকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন কার দিকে? রাজনীতিতে ইঙ্গিতই সব। মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত কার প্রতি, তা নিয়ে বিবিধ ব্যাখ্যা রয়েছে। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, মুখ্যমন্ত্রী গত কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেবাশিসের প্রশংসা করেছেন। আবার কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে মঞ্চে দেখা গিয়েছে সৃঞ্জয়কে। সেখানে দেবাশিস মঞ্চের নীচে ছিলেন। কিন্তু দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে ছিলেন দু’জনেই।

যুযুধান দুই গোষ্ঠী অবশ্য লড়াইয়ে অন্যায় কিছু দেখছেন না। দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা নির্বাচনী প্রচারে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা অধিকাংশই ক্লাবের সদস্য। ফলে ক্লাবের ভোটে তাঁদের মতামত তো থাকবেই।’’ আর সৃঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলে আগেও বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা সদস্য বা সমর্থক হিসেবে ক্লাবের নির্বাচনে নেমেছিলেন। এখনও নামছে‍ন। এ নিয়ে মেরুকরণ করা ঠিক নয়।’’ দু’জনের কথা খুব ভুল নয়। ময়দানের সমস্ত ক্লাবেই অল্পবিস্তর রাজনীতি জড়িয়ে আছে। কিন্তু মোহনবাগানে রাজনীতির লোকেদের পদচারণা সবচেয়ে বেশি। এক ক্রিকেটকর্তার কথায়, ‘‘সিএবি-র নির্বাচনেও রাজনীতি থাকে। কিন্তু মোহনবাগানের ভোটে তো সমস্ত রাজনীতির লোকেরাই থাকেন।’’

এই লড়াইয়ে আরও দু’জন রয়েছেন। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণাল বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতিও বটে। ঘটনাচক্রে, কেউই এই নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত কারও পক্ষে বা বিপক্ষে সরাসরি নামেননি। তবে তৃণমূলের কানাঘুষো বিশ্বাস করতে হলে, বিবিধ সমীকরণে অরূপ এবং বিশেষত কুণাল খানিকটা ‘মেঘনাদ’-এর ভূমিকায় রয়েছেন। মেঘ সরিয়ে কবে তাঁদের উদয় হবে, তা তাঁরাই জানেন।

গত এপ্রিলে এই ‘জুড়ি’ এক বার মেঘ সরিয়ে উদয় হয়েছিলেন। যুবভারতীতে আইএসএল কাপ ফাইনালে অরূপকে আমন্ত্রণ না-জানানো নিয়ে সরব হয়েছিলেন কুণাল। তখন মোহনবাগানে ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। খেলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে কুণাল প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন ক্রীড়ামন্ত্রীকে যুবভারতীর ফাইনালে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘আক্ষেপ, খেলবে ভারতসেরা মোহনবাগান। তাদের তরফেও ক্রীড়ামন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ করা হয়নি। ক্লাব সহ-সভাপতি হিসাবে এই খবর পেয়ে খারাপ লেগেছে।’ তিনি নিজে অরূপকে ফোন করেছিলেন জানিয়ে কুণাল লিখেছিলেন, ‘দুঃখপ্রকাশ করেছি। ঘরোয়া ফোন আর আনুষ্ঠানিক সসম্মান আমন্ত্রণ এক নয় বুঝি। মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তো নয়ই। তাঁর সিদ্ধান্ত বদল হচ্ছে না। সচিবকে জানাচ্ছি। এই আনুষ্ঠানিক সৌজন্যটা ক্লাবের দেখানো উচিত ছিল। যাঁরা আমন্ত্রণ বা টিকিটের বিষয়টি দেখছিলেন, একটা ফাঁক থেকে গিয়েছে।’ সচিব অর্থাৎ দেবাশিস।

অরূপ ফাইনালে যাননি। সে অর্থে ‘বয়কট’ই করেছিলেন। যদিও কুণাল মোহনবাগান তাঁবুতে দেবাশিসের সঙ্গে স্টু-টোস্ট খেতে বসেছিলেন। সেই ছবিও পোস্ট করেছিলেন তিনি। সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘সচিব (দেবাশিস) ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এফএসডিএলের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। তার পরে তাঁরা ক্রীড়ামন্ত্রীকে ইমেল পাঠিয়ে আমন্ত্রণ করেন। যদিও এই বিলম্বিত আমন্ত্রণ অতীব অন্যায়ের। মোহনবাগান সচিব জানান, তাঁর ধারণা ছিল এফএসডিএল আগেই ক্রীড়ামন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করেছে।’

মোহনবাগানের একটি সূত্রের দাবি ছিল, দেবাশিসের ‘ধারণা’র বিষয়টি উচ্চমহল খুব ভাল ভাবে নেয়নি। ওই সূত্রের বক্তব্য ছিল, ‘‘এমন একটা বড় ম্যাচে সচিব নিজে ক্রীড়ামন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাবেন না? যদি বা এফডিএসএল আমন্ত্রণ জানিয়েও থাকে, তা হলেও মোহনবাগান সচিবের ক্রীড়ামন্ত্রীকে অবশ্যই আমন্ত্রণ করা উচিত ছিল। আর উনি (দেবাশিস) এমন ধারণাই বা করে নিলেন কেন?’’ মোহনবাগান জনতা এবং ক্লাবের সঙ্গে জড়িতেরা মনে করছেন, সে দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ‘হাওয়া’ কোন দিকে।

কিন্তু এই লড়াইয়ের সবচেয়ে ঘনঘটা বসু পরিবারে। তৃণমূলে গোষ্ঠীলড়াই এক শাশ্বত সত্য। মোহনবাগান নির্বাচন তার ব্যতিক্রম হতে যাবে কেন! কিন্তু এই লড়াই দ্বন্দ্ব এনে দিয়েছে টুটু (স্বপনসাধন) বসুর পরিবারেও। নির্বাচনের আগে তিনি নিজে মোহনবাগানের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কারণ, তাঁর এক পুত্র সৃঞ্জয় নির্বাচনে লড়ছেন। টুটু বলেছিলেন, যেহেতু তিনি সভাপতির চেয়ারে বসে কোনও একপক্ষের হয়ে প্রচার করতে পারবেন না। সেই পদত্যাগপত্র অবশ্য এখনও গৃহীত হয়নি। কিন্তু বসু পরিবারে ভাঙনের গন্ধ অন্যত্র। শাসক শিবিরের সঙ্গে রয়েছেন সৃঞ্জয় বসুর ভাই সৌমিক বসু। তিনি মোহনবাগান ক্লাবের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি। একটি অনুষ্ঠানে সৌমিক দেবাশিসের হয়ে প্রচারও করেছেন। একেবারে সাংবাদিক সম্মেলন করে যার প্রতিক্রিয়া দিতে হয়েছিল টুটুকে। দেবাশিসের নাম না করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ও মিত্র পরিবারকে (মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব অঞ্জন মিত্র) ধ্বংস করেছে। আমার আর অঞ্জনের সম্পর্ক নষ্ট করেছে। অঞ্জনের মেয়ে সোহিনীকে আমি কো–অপ্ট মেম্বার করেছিলাম। ও আপত্তি তুলেছিল। আমি তা শুনিনি। আমার পরিবারেও ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চক্রান্ত ধরে ফেলেছি। আমি এখনও বেঁচে আছি। আমার পরিবারে আমি এখনও বটবৃক্ষ। আমি বেঁচে থাকতে সংসারে ফাটল ধরতে দেব না। নির্বাচনে সৃঞ্জয় বনাম সৌমিক লড়াই হবে না।’’

বাগানে যে জোড়াফুল ফুটবে, তাতে সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হল, কার বাগানে?

Mohun Bagan Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy