Advertisement
E-Paper

গতির আগুনে প্রশ্ন স্পিন-জুটি নিয়ে

ফিটনেস, ফিল্ডিং এবং কার্যকারিতা মিলিয়ে ভারতের তারকা স্পিন জুটি ইতিমধ্যেই ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩২
প্রশ্ন উঠছে দলের দুই সিনিয়র স্পিনারের ফর্ম নিয়ে।

প্রশ্ন উঠছে দলের দুই সিনিয়র স্পিনারের ফর্ম নিয়ে।

কয়েক দিন আগেও তাঁরাই ছিলেন সেরা অস্ত্র। এখন দলে জায়গা হবে কি না, তা নিয়েই উদ্বেগের দিন কাটাচ্ছেন। তাঁরা, ভারতীয় দলের জগাই-মাধাই— দুই স্পিনার, আর. অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজা।

ফিটনেস, ফিল্ডিং এবং কার্যকারিতা মিলিয়ে ভারতের তারকা স্পিন জুটি ইতিমধ্যেই ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন। আগামী এক বছরে ভারতের যা সূচি, তাতে প্রশ্ন উঠে পড়েছে, অশ্বিন-জাডেজার জন্য কি টেস্টের আকাশও মেঘলা হতে শুরু করবে? কারণ, বিরাট কোহালিরা এখন বেশির ভাগ টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন বিদেশের মাঠে। নতুন বছরের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মাঝামাঝি ইংল্যান্ড সফর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

দু’টো সফরেই স্পিন নয়, ভারতের অস্ত্র হতে যাচ্ছে পেস। তখন অশ্বিনকে আর ব্রহ্মাস্ত্র ধরবেন না অধিনায়ক, বরং তাকিয়ে থাকবেন মহম্মদ শামি বা ভুবনেশ্বর কুমারের দিকে। যাঁরা ইডেনে ঘাসের, প্রাণবন্ত উইকেটে রবিবার শেষ দিনে প্রায় অবিশ্বাস্য জয় এনে দিচ্ছিলেন ভারতকে। সাত উইকেট ফেলে দেওয়ার পরে কোনও রকমে ম্যাচ বাঁচাতে পারে শ্রীলঙ্কা। পেসারদের দাপটের মধ্যেই কেউ খেয়াল করল না হয়তো যে, দেশের মাঠে বহুদিন পরে একটা টেস্ট ম্যাচ থেকে কোনও উইকেটই তুলতে পারলেন না ভারতীয় স্পিনাররা। অথচ, গত দু’বছরেও কোহালির নেতৃত্বে দেশের মাঠে হওয়া সব ক’টি টেস্ট সিরিজেই নায়ক ছিল অশ্বিন-জাডেজা জুটি। ইডেনে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে সাতটি উইকেটের চারটি ভুবনেশ্বর কুমারের, দু’টি মহম্মদ শামির, একটি উমেশ যাদবের। অসাধারণ বোলিং স্পেল নিয়ে শেষ করেন ভুবনেশ্বর (১১-৮-৮-৪)। প্রথম ইনিংসে ম্যাচের সেরা ভুবনেশ্বর নেন চার উইকেট, শামি চার, উমেশের দুই শিকার। সেই তুলনায় অশ্বিন এবং জাডেজা উইকেটহীন তো থাকলেনই, বলই করতে ডাকা হল বা কোথায়? প্রথম ইনিংসে অশ্বিন পেলেন মাত্র আট ওভার, জাডেজা এক ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল আরও বিস্ময়। এতকাল শেষ ইনিংসে ভারত ম্যাচ জেতার জন্য তাকিয়ে থাকত তার স্পিনারদের দিকে। ইডেনে অন্য এক যুগের সূচনা হয়ে গেল বোধ হয়। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে হওয়া ২৬.৩ ওভারের মধ্যে স্পিনাররা করলেন মাত্র এক ওভার। বল করতে ডাকাই হয়নি অশ্বিনকে। একমাত্র ওভারটি ছিল জাডেজার। তা-ও নাটকীয় কিছু তিনি করতে পেরেছিলেন বলে মনে করা যাচ্ছে না। বরং ইডেন দেখল এক পাল্টে যাওয়া ছবি। শেষ প্রহরে ভারতকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জেতানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন পেসাররা। আর গ্যালারি তীব্র চিৎকারে সেটাকেই সমর্থন করে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে অশ্বিনদের এই দুর্ভোগ কি ইডেন দিয়ে শেষ হবে? নাকি ইডেন থেকে তাঁদের গুরুত্ব কমতে শুরু করে দিল? বিদেশে খেলার জন্য তৈরি হতে ভারতীয় দল প্রাণবন্ত পিচে খেলার জন্য তৈরি, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। হেড কোচ রবি শাস্ত্রী থেকে অধিনায়ক কোহালি— এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, বিশ্বের সেরা দল হতে গেলে সমস্ত পরিবেশে, সব ধরনের উইকেটে সফল হওয়ার মশলা রাখতে হবে। সেই কারণেই ইডেনের দেখাদেখি নাগপুর বা দিল্লিতেও যদি প্রাণবন্ত বাইশ গজ তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে, কোহালিরা টুঁ শব্দ করবেন না। টিমের রিংটোনটাই যেন ঘূর্ণি থেকে ঘাসে পাল্টে গিয়েছে। স্পিনের মায়াজালে নয়, গতির আগুনে প্রতিপক্ষকে আতঙ্কিত করার ছক নেওয়া হচ্ছে।

আগামী দেড় বছরের টেস্ট ক্রিকেটে কোহালিদের দলের রিংটোন পেস থাকলে অবাক হওয়ার নেই। যা অশ্বিন, জাডেজাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করে দিচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সফরের পর থেকে ওয়ান ডে সিরিজ থেকেই পাল্টে যেতে থাকল এই দু’জনের ভাগ্য। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’জনেই ছিলেন। সেটাই রঙিন জার্সিতে দেশের হয়ে তাঁদের খেলা শেষ টুর্নামেন্ট।

এখন দেখার, টেস্টেই বা তাঁদের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়!

Ravichandran Ashwin Ravindra Jadeja Spinners cricket Paceers Green Wicket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy