Advertisement
E-Paper

বাহুতুলের পাল্টা প্রশ্ন, অভিযোগ করলটা কে!

বিজয় হজারে ট্রফির ব্যর্থতার পরেই সাইরাজের বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করেছে একের পর এক অভিযোগ। দলের কয়েক জন ক্রিকেটারের অভিযোগ, তাঁর কোচিংয়ে খেলা অসম্ভব হয়ে উঠছে। কারণ ক্রিকেটারদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেন সাইরাজ। অনেকে আবার বলছেন, কোচের ভয়ে দলের জুনিয়র ক্রিকেটারদের কোনও পরামর্শও দিতে পারেন না সিনিয়র ক্রিকেটারেরা। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১৬
মহড়া: বাংলার অনুশীলনে অশোক ডিন্ডার সঙ্গে বাহুতুলে। নিজস্ব চিত্র

মহড়া: বাংলার অনুশীলনে অশোক ডিন্ডার সঙ্গে বাহুতুলে। নিজস্ব চিত্র

বুধবার সকালের বিমানে কলকাতায় নেমেই তিনি চলে এসেছিলেন বিধাননগরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে। প্রথম দিন বাংলা ক্রিকেট দলের অনুশীলনে নেমেই কোচ সাইরাজ বাহুতুলে জানিয়ে দিলেন, খেলোয়াড়দের বিদ্রোহ কড়া হাতে দমন করতে চান তিনি। তবে সেটা কী ভাবে করবেন, তা নিয়ে গোলকধাঁধায় স্বয়ং বাংলা কোচও। একই সঙ্গে তিনি বিস্মিত হঠাৎ এই অভিযোগ ওঠায়। ঘটনার নেপথ্যে কে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তিনি।

বিজয় হজারে ট্রফির ব্যর্থতার পরেই সাইরাজের বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করেছে একের পর এক অভিযোগ। দলের কয়েক জন ক্রিকেটারের অভিযোগ, তাঁর কোচিংয়ে খেলা অসম্ভব হয়ে উঠছে। কারণ ক্রিকেটারদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেন সাইরাজ। অনেকে আবার বলছেন, কোচের ভয়ে দলের জুনিয়র ক্রিকেটারদের কোনও পরামর্শও দিতে পারেন না সিনিয়র ক্রিকেটারেরা।

যা শুনে হতবাক বাংলার কোচ। বলছেন, ‘‘গত তিন বছর বাংলার কোচ হিসেবে তো এই কথাগুলো শুনিনি! আমি সত্যি বিস্মিত! জানি না আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য কেন করা হয়েছে। দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রত্যেকের সঙ্গেই আলাদা করে কথা বলি। সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গেও একই আচরণ করি। তার পরেও ছেলেরা যদি এ সব অভিযোগ আনে, তা হলে ওদের সঙ্গে আলাদা করে বসতে হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ছেলেরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছে। যার পরের ধাপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সুতরাং, এই পরিস্থিতিতে চাপ থাকবে এটাই তো প্রত্যাশিত।’’

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যে বাংলা কোচ যে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সাইরাজ। বাংলা কোচের কথায়, ‘‘শেষ তিন, চার দিনে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ বাড়ছে। খুব জানতে ইচ্ছে করছে কারা আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে! দলের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য তাদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করতে চাই।’’

আর জুনিয়র ক্রিকেটারদের পরামর্শ দিতে গিয়ে সিনিয়রদের সমস্যা?

এই প্রসঙ্গ উঠলে সাইরাজ তার ব্যাখ্যা দেন। বলেন, ‘‘ছেলেদের মধ্যে সংশয় তৈরি করতে চাই না। অতিরিক্ত পরামর্শে কিন্তু সংশয় বাড়ে। ক্রিকেট পারফরম্যান্স নির্ভর খেলা। আর তার জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার চিন্তা-ভাবনা। আমি চাই না অতিরিক্ত পরামর্শ ক্ষতির কারণ হোক। কিন্তু এ বিষয়েও যদি ছেলেদের ক্ষোভ থাকে, তা হলে আমার কিছু বলার নেই।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘চেন্নাইয়ে বিজয় হজারে ট্রফির খেলা চলার সময় বাংলার ‘ভিশন ২০২০’-র বোলিং পরামর্শদাতা টি এ শেখরের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’’

মজার ব্যাপার হল, বাংলা দল নিয়ে যখন এত ডামাডোল, তখন এ দিন সাইরাজের প্রথম দিনের অনুশীলনে হাজির ছিলেন না সিএবি-র কোনও কর্তা। এমনকি, সিএবি-র পক্ষ থেকে সাইরাজকে জানানোই হয়নি যে, গত তিন দিন ধরে বাংলার রঞ্জি ট্রফি দলের প্রস্তুতি শিবির চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। বাংলার কোচকে বরং জানানো হয়েছিল ভিভিএস লক্ষ্মণের পর্যবেক্ষণে ‘ভিশন ২০২০’-র শিবির চলছে। তাই কলকাতায় আসার কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি তাঁকে। এমনকি, বাংলার ২০ জনের দল বাছাইয়ের সময়েও তাঁর পরামর্শ নেননি সিএবি প্রশাসন ও নির্বাচকেরা। এমনও বলেন সাইরাজ। এমনকি জানান, সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা হয়নি তাঁর।

এ ব্যাপারে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে অবাক করে দিয়ে বাংলার কোচের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল এখন ‘ভিশন ২০২০’-র শিবির চলছে। অনুশীলনে করাচ্ছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। তাই কয়েক দিন পরে এলেও চলবে। কিন্তু এটা যে বাংলার প্রাথমিক দলের অনুশীলন সেটাই তো জানতাম না।’’

বিজয় হজারের ব্যর্থতার পরে তাঁকে আর মাত্র দু’টি ম্যাচ সিএবি দিয়েছে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। এমনকি, সাইরাজের মাথার উপরে মেন্টর হিসেবে বসানো হয়েছে অরুণ লালকে। বাংলা কোচকে প্রশ্ন করা হয়, এক জনের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য কি দু’টো ম্যাচ যথেষ্ট? সাইরাজের জবাব, ‘‘আমি জানি না নিজেকে প্রমাণ করার জন্য কী করে দেখাতে হবে! বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছি। মনে রাখবেন, আমি খেলোয়াড় জীবনে মুম্বই এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি।’’

এর পরেই বাংলা কোচ পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘বিজয় হজারে ট্রফি শেষ হওয়ার পর থেকেই আমাকে নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। তাতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার প্রশ্ন, গত ১৫ দিনে হঠাৎ কেন এটা শুরু হল? কে-ই বা আছেন এর পিছনে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে এই পরিস্থিতি আমার দলের উপর খুব একটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না।’’

যদিও মেন্টর অরুণ লাল সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত বাংলার কোচ। তাঁর কথায়, ‘‘অসাধারণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএবি। অরুণ লালের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে। বাংলার ড্রেসিংরুমে ওঁর মতো চরিত্র থাকলে ছেলেদেরই উপকার।’’

ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে ধারাভাষ্যকার হিসেবে যোগ দেওয়ায় এ দিন বাংলার অনুশীলনে ছিলেন না ব্যাটিং পরামর্শদাতা লক্ষ্মণ। বৃহস্পতিবার ফিরে অনুশীলনে যোগ দেবেন তিনি। এ দিকে, ওপেনার অভিষেক রামনের বাঁ কাঁধে চোট। বুধবার সারাদিন আইসপ্যাক দিয়ে বসেছিলেন তিনি। নেটে ব্যাটও করতে পারেননি রামন।

cricket Bengal CAB Unrest Sairaj Bahutule
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy