Advertisement
E-Paper

ক্ষোভে, হতাশায় বাংলা ছাড়লেন স্বপ্না

স্বপ্নার ক্ষোভ, এশিয়ান গেমসে সোনা জেতার পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে চার কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল। সেটা এখনও দেওয়া হয়নি।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৫৩
সিদ্ধান্ত: মধ্যপ্রদেশের হয়ে স্বপ্না নামেন জাতীয় গেমসে। ফাইল চিত্র

সিদ্ধান্ত: মধ্যপ্রদেশের হয়ে স্বপ্না নামেন জাতীয় গেমসে। ফাইল চিত্র

বাংলা ছাড়লেন মহিলা অ্যাথলিট স্বপ্না বর্মণ। পুজোর মধ্যে গুজরাতে আয়োজিত জাতীয় গেমসে মধ্যপ্রদেশের হয়ে নামেন তিনি। সেখানে একটি জাতীয় রেকর্ড-সহ তিনি দু’টি সোনা জিতেছেন। স্বপ্না জানিয়েছেন, তাঁর বাংলা ছাড়ার প্রধান কারণ অর্থ এবং ‘না-পাওয়ার’ ক্ষোভ।

জাতীয় গেমসে মধ্যপ্রদেশের হয়ে নেমে স্বপ্না হাই জাম্প এবং হেপ্টাথলনে সোনা জেতেন। হাই জাম্পে জাতীয় রেকর্ডও করেন। তখনই জানা যায় যে, তিনি বাংলা ছেড়ে বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। তবে স্বপ্না জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর পরিবার জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়াতেই থাকবেন। শুধুমাত্র জাতীয় প্রতিযোগিতাগুলিতে মধ্যপ্রদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব দেবেন।

স্বপ্নার ক্ষোভ, এশিয়ান গেমসে সোনা জেতার পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে চার কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল। সেটা এখনও দেওয়া হয়নি। স্বপ্না বলেন, ‘‘এর আগে এশিয়ান গেমসে যাঁরা সোনা জিতেছিলেন, তাঁদের সবাইকেই রাজ্য সরকারের তরফে জমি দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে হেপ্টাথেলনে সোনা জেতার পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বপ্নাকে থাকার জন্য সাময়িকভাবে সল্টলেকে একটি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে নগদ দশ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল।

স্বপ্না জানান, মধ্যপ্রদেশ সরকার জাতীয় গেমসে যাঁরা সোনা পাবেন, তাঁদের প্রত্যেককে প্রত্যেকটি সোনার জন্য ৫ লক্ষ টাকাপুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। গেমসে রেকর্ড করলে মিলবে অতিরিক্ত আর্থিক পুরস্কার। রুপো এবং ব্রোঞ্জ জিতলেও আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। স্বপ্না দু’টি সোনা জেতায় এবং একটি জাতীয় রেকর্ড করার জন্য ১০ লক্ষেরও বেশি টাকাপাবেন বলে জানালেন।

স্বপ্না বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সরকার তো অ্যাথলিটদের জন্য কোনও আর্থিক পুরস্কার কখনও ঘোষণা করেনি। আমাকে মধ্যপ্রদেশের হয়ে জাতীয় গেমসে অংশ দিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়। আমি আন্তঃরাজ্য ছাড়পত্রে সই করেমধ্যপ্রদেশের হয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি।’’ স্বপ্নার কোচ সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘স্বপ্না যা মাইনে পায়, তার বেশির ভাগ বাড়িতে দিতে হয়। তার পর অনুশীলনে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনেক টাকা খরচ হয়।এখনও স্বপ্নার কোনও স্পনসর নেই। সেই খরচ জোগাড় করার জন্য স্বপ্না মধ্যপ্রদেশের হয়ে জাতীয় গেমসে যোগ দিয়েছে।’’

হতাশ স্বপ্না বলেছেন, ‘‘আমি তো সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি। অনুশীলন করে লক্ষ্যে পৌঁছতে অর্থের প্রয়োজন হয়। অ্যাথলেটিক্সে জাতীয় গেমসে অংশ নিয়ে যাঁরা পদক পাচ্ছেন, তাঁদের সব রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে। আমাদের রাজ্য কিছুই ঘোষণা করেনি।’’

জলপাইগুড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক কুমার দত্ত বলেন, ‘‘এটা আমাদের লজ্জা এবং দুঃখের বিষয় যে, এত বড় একজন অ্যাথলিট নিজের রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যের হয়ে গেলেন। তবে যে কারণেই তিনি যান, যেখানেই যান, আমরা চাই তিনি উন্নতি করুন, সফল হোন।’’

Swapna Burman Athlete
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy