ফিরে এল সেই সুর।
‘প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা...’।
যারা এখনও আইপিএল গ্রহের দিকে পা বাড়াননি, তাঁদের টেনে আনার জন্য এই সুরই যথেষ্ট।
‘প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যা-প্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা...’।
আইপিএল-আগমনীর সুর। যার স্বাদ অনেকটা মিন্ট-ফ্রেশ-এর মতো। কানে এলেই আপনি তরতাজা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক পরই শুরু হচ্ছে এই ক্রিকেট উৎসব, যা ডেভিড গাওয়ারের টাইমিংয়ের মতোই যেন নিখুঁত।
আইপিএলের ব্রডকাস্টার সোনির মার্কেটিংয়ের দায়িত্বে কে বা কারা আছেন জানি না। তবে তিনি বা তাঁরা যে জিনিয়াস, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রতি মরসুমে আইপিএলের প্রোমো, টিজার, পাঞ্চলাইনগুলো যে ভাবে ক্রমশ সময়ের সাথে সাথে বদলাচ্ছে, তা দেখে এ কথা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
গত বছর টুর্নামেন্টটাকে ‘ইন্ডিয়া কা তেওহার’ বলা হয়েছিল। এ বার বলা হচ্ছে ‘এক ইন্ডিয়া হ্যাপিওয়ালা’। আইপিএলপ্রেমীরা এই পাঞ্চলাইনের ভক্ত হয়ে উঠবেনই।
প্রোমোগুলোও অসাধারণ। যেমন এনার্জেটিক, তেমনই জীবন্ত। সত্যি বলতে ওগুলোর মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম— কোথায় আমি, কোথায় আমি। কোনও ব্যাপার না, প্রোমোতে আমাকে সে ভাবে খুঁজে না পাওয়া গেলেও মাঠেই নয় নিজের অস্তিত্ব বুঝিয়ে দেব। সেই চেষ্টাটা তো করতেই হবে। এটা একটা বাড়তি মোটিভেশন বলা যায়।
একটা কথা অবশ্য বলতে বাধ্য হচ্ছি, আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রতি বছরই বড্ড একঘেয়ে হয়ে উঠছে। এই বছরেও একই রকম— ‘বোরিং’। বেশি সমালোচনা করতে চাইছি না। শুধু বলতে চাই, আইপিএলের উদ্বোধন আরও আকর্ষণীয় হওয়া উচিত।
ক্যাপ্টেনের মানবিক মুখ
"মানুষের জীবনের চেয়ে বড় আর কিছু হয় না। জলসঙ্কট বা কৃষি, কোনও ব্যাপারেই আমি বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু একটাই কথা বুঝি যে, ক্রিকেটের জন্য যদি প্রাকৃতিক সম্পদের চরম ক্ষতি হয়, তা হলে আমাদের নতুন করে ভাবাই উচিত। না হলে চাষিদের মৃত্যু হবে, ফ্লাইওভার ভেঙে পড়বে আবার জীবনও চলবে। দুঃখিত স্যার, মানুষের জীবন তো ছ’বলের ওভার নয় যে, একটা শেষ হলে অন্য দিক থেকে ফের আর একটা শুরু হয়ে যাবে। একে মূল্য দিতে হবে, রক্ষা করতে হবে।"
অনুষ্ঠান দেখে মনে হয় পরিচালকরা ক্রিকেট ও বিনোদনের মিশ্রণ তৈরি করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন। শেষমেশ ব্যাপারটা এমন একটা ‘মিক্সড থালি’ হয়ে যায়, যে তা নেহাত ‘টাইম পাস’ ছাড়া আর কিছুই হয়ে উঠতে পারে না।
যদিও আমি কোনও পেশাদার টিভি সমালোচক নই। তবে এই অনুষ্ঠানকে দুইয়ের বেশি স্টার দিতে পারছি না। সোনির সম্প্রচারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ নভজ্যোত সিংহ সিধু আর ওদের প্রেজেন্টার গৌরব কপূর ও সমীর কোছার। এ বারেও ওরা নিশ্চয়ই বরাবরের মতোই নিজেদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখবে।
অনেক দিন পর এমএস ধোনির সঙ্গে দেখা হয়ে বেশ ভাল লাগল। ওকে যে এ বছর আর পরের বছরও চেন্নাইয়ের সেই হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে না, এটা হজম করতে বেশ কষ্ট হয়েছে। বরং বেগুনি জার্সিতে কেমন যেন ওকে কেকেআরের তুতো ভাই মনে হচ্ছে। চুলের নতুন স্টাইলে আর ম্যানিকিওর করা কালো দাড়িতে বেশ ধারালো দেখতে লাগছে সুপারজায়ান্টদের ক্যাপ্টেনকে। মাঠেও ওর দল সে রকমই। লেখাটা লেখার সময়ই তো দেখছি ১৭ ওভারে ৮০ রানের মধ্যে সাত উইকেট ফেলে মুম্বইকে ওদের সামনে মাথা নোয়াতে বাধ্য করেছে।
এমএসের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটালাম শুক্রবার সন্ধ্যায়। দুর্দান্ত কিছু জোকস ভাগাভাগি করলাম নিজেদের মধ্যে। ওদের টিমের মালিক মিস্টার গোয়েন্কা খুব ভাল মানুষ এবং বিশেষ বন্ধুও। ওদের টিমকে এই ক্রিকেট উৎসবে স্বাগত। আশা করি ওরা ভাল খেলবেও।
এ বার আপনাদের প্রিয় টিমের কথায় আসি। কেকেআর। আমাদের প্রস্তুতি খুব ভাল চলছে। এখানকার আবহাওয়াও খুব উদার।
শহরে আসার পর মহারাষ্ট্রে খরা পরিস্থিতির মধ্যে আইপিএল ম্যাচ নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন শুনতে হয়েছে আমাকে। এই ব্যাপারে আমার দর্শনটা খুব সোজাসাপ্টা। মানুষের জীবনের চেয়ে বড় আর কিছু হয় না। জলসঙ্কট বা কৃষি, কোনও ব্যাপারেই আমি বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু একটাই কথা বুঝি যে, ক্রিকেটের জন্য যদি প্রাকৃতিক সম্পদের চরম ক্ষতি হয়, তা হলে আমাদের নতুন করে ভাবাই উচিত। না হলে চাষিদের মৃত্যু হবে, ফ্লাইওভার ভেঙে পড়বে আবার জীবনও চলবে।
দুঃখিত স্যর, মানুষের জীবন তো আর একটা ছ’বলের ওভার নয় যে, একটা শেষ হলে অন্য দিক থেকে ফের আর একটা শুরু হয়ে যাবে। একে মূল্য দিতে হবে, রক্ষা করতে হবে।
আমাদের এগুলো ভাবতে হবে। আইপিএলের আগমনীর ওই সুরের পিছনে এগুলোকে হারিয়ে যেতে দিলে চলবে না।
অনেক দিন পর এমএস ধোনির সঙ্গে দেখা হয়ে বেশ ভাল লাগল। ওকে যে এ বছর আর পরের বছরও চেন্নাইয়ের সেই হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে না, এটা হজম করতে বেশ কষ্ট হয়েছে। বরং বেগুনি জার্সিতে কেমন যেন ওকে কেকেআরের তুতো ভাই মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
নাইটরা সেরা চারে থাকতে পারে, তবে আমার বাজি মুম্বই-আরসিবি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy