Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
রিওয় পা সম্রাটের

বোল্ট বজ্রপাত: তিনটে সোনা নিয়েই ফিরব

হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন নিয়ে, অলিম্পিক্স ইতিহাসে অমর হয়ে থাকতে, প্রমাণ করতে যে তিনিই ট্র্যাকের অবিসংবাদিত সম্রাট— রিওয় পা রাখলেন উসেইন ‘বিদ্যুৎ’ বোল্ট।

উসেইন ‘বিদ্যুৎ’ বোল্ট।

উসেইন ‘বিদ্যুৎ’ বোল্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৪:০২
Share: Save:

হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন নিয়ে, অলিম্পিক্স ইতিহাসে অমর হয়ে থাকতে, প্রমাণ করতে যে তিনিই ট্র্যাকের অবিসংবাদিত সম্রাট— রিওয় পা রাখলেন উসেইন ‘বিদ্যুৎ’ বোল্ট।

সানগ্লাস, কানে হেডফোন, কালো ট্র্যাকস্যুটে আপাদমস্তক ঢাকা শরীরটা বিমানবন্দরে ঢুকতেই যেন উৎসব শুরু হয়ে গেল। মোবাইল ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি, সেলফি তোলার আবদার— হাসিমুখে সব কিছুই সহ্য করছিলেন ট্র্যাকের সম্রাট। যাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল, যাবতীয় চ্যালেঞ্জ সামলাতে তৈরি হয়েই এসেছেন।

চব্বিশ ঘণ্টা আগে লন্ডনের এক রেস্তোরাঁয় সাংবাদিক সম্মেলনে যে উসেইন বোল্টকে দেখা গিয়েছে, তাঁকেও একই রকম আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে। পাশাপাশি আক্রমণাত্মকও। এই নিয়ে চার নম্বর অলিম্পিক্স বোল্টের। এ বছরটা চোট-আঘাত ভালই ভুগিয়েছে। তা হলে কি এ বার সোনা জেতার সম্ভাবনা সামান্য হলেও কম? শুনেই গরগরে বোল্ট, ‘‘এই স্পোর্টসটা চায় আমি যেন জিতি। এটুকু বলতে পারি তিনটের মধ্যে একটাও সোনা হারাব না।’’

ফুটবলে মেসি বা রোনাল্ডোর মধ্যে বিশ্বসেরার মুকুট নিয়ে টানাটানি থাকতে পারে, কিন্তু স্প্রিন্টের সম্রাট কে, তা নিয়ে কোনও সংশয় থাকাই উচিত নয়। বলছেন খোদ বোল্টই। ‘‘দেখুন, বিশ্বের সেরা ফুটবলার কে সেটা বাছতে গেলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বিশ্বের সেরা স্প্রিন্টার কে, তা নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। সবাই জানে সেটা আমি।’’

সামনে এ বার অভূতপূর্ব ট্রেবল জেতার হাতছানি। ১০০ মিটার, ২০০ মিটার, রিলেতে সোনার হ্যাটট্রিক। কিন্তু গত বছর থেকেই চোট সমস্যায় ভুগছেন বোল্ট। তাঁর পিঠের ব্যথা মাঝে এতটাই বেড়ে যায় যে তিনি ধন্দে ছিলেন আদৌ রিওয় নামতে পারবেন কি না। বোল্ট বলছেন, ‘‘আমার কোচ বলেছেন, যত বয়স বাড়বে তত সমস্যাও বাড়বে। তাই এ সব নিয়ে ভাবছি না। আমি ফোকাসড আর ফের প্রমাণ করতে মরিয়া।’’

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

লন্ডন অলিম্পিক্সের আগে কেউ বাজি ধরেনি ১০০ মিটার নিয়ে। যতই জাস্টিন গ্যাটলিন বা জোহান ব্লেকের মতো তারকারা থাক, বিশেষজ্ঞরা আগেভাগেই বলে দিয়েছিলেন, বোল্ট হাসতে হাসতেই সোনা নিয়ে যাবেন। ঠিক তাই হয়েছিল। বোল্ট যেন নামার জন্যই নেমেছিলেন ট্র্যাকে। হাসতে হাসতেই সোনা জিতে বেরিয়ে যান। কিন্তু রিওর বোল্টকে নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তিরিশের কাছাকাছি বয়স। ২০১৬-তে সাধারণ মরসুম কেটেছে। কোথাও যেন বোল্ট-ভক্তরা ভয় পাচ্ছেন ট্র্যাকের নায়কের ক্লাইম্যাক্স অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স না হয়ে যায়। প্রসঙ্গ উঠতে বোল্টের জবাব, ‘‘অবশ্যই আমি ভয় পাই। কিন্তু সারাক্ষণ ভয় পেলে তুমি বাঁচতে পারবে না। হ্যাঁ এই বছরটা ভাল যায়নি। কিন্তু আমি একা না। প্রত্যেক স্প্রিন্টারের ফর্মই খারাপ।’’

বোল্ট শুধুমাত্র স্প্রিন্টার নন। বরং ক্রীড়াবিশ্বের অন্যতম গ্ল্যামার তারকা। টুইটারে অসংখ্য ফলোয়ার থাকা ছাড়া মাঠও ভরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তিনি চলে গেলে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের এই শূন্যস্থান পূরণ করার ক্ষমতা আছে আর কারও? বোল্টের জবাব, ‘‘আমি যেখানেই যাই সবাই বলে, উসেইন আপনি চলে গেলে আর তো কেউ থাকবে না ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে। কিন্তু আমি বলব, অনেক ভাল ভাল অ্যাথলিট উঠে আসছে। তারা নিশ্চয়ই খেলাটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

অনেকেই মনে করছেন রিওই হয়তো হবে বোল্টের অবসর মঞ্চ। বিশ্বসেরা স্প্রিন্টার অবশ্য অবসর নিয়েই ভাবছেন না। সবশেষে তাই তো সংযোজন, ‘‘কোচ তো বলেছেন, উসেইন তুমি চাইলে ২০২০ অলিম্পিক্সেও নেমে যেতে পারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

usain bolt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE