Advertisement
E-Paper

বেহালার বৃষ্টি এ বার লা লিগায়

বেঙ্গালুরুর একটি ক্লাবের হয়ে লুধিয়ানায় মেয়েদের আই লিগ খেলতে আসা বছর পঁচিশের মেয়েকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। 

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০৪:২৩
পাশাপাশি: সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে নতুন চমক বৃষ্টি বাগচী। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে নতুন চমক বৃষ্টি বাগচী। নিজস্ব চিত্র

বেঙ্গালুরুর একটি অনুষ্ঠানে সুনীল ছেত্রী তাঁকে বলেছেন, ‘‘লা লিগার দলে খেলার ডাক পাওয়াটা যে কোনও ফুটবলারের কাছেই স্বপ্নের ব্যাপার। এটা কাজে লাগাও।’’

কিংবদন্তি বেমবেমদেবী তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘যেটা আমরা পারিনি, তুমি সেটা করেছো। পেশাদার ফুটবলার হয়ে তুমি সবাইকে পথ দেখাও।’’

বেঙ্গালুরুর একটি ক্লাবের হয়ে লুধিয়ানায় মেয়েদের আই লিগ খেলতে আসা বছর পঁচিশের মেয়েকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে।

হবে না-ই বা কেন? ভারতের প্রথম মেয়ে ফুটবলার হিসাবে নতুন ইতিহাস যে তৈরি করতে চলেছেন বেহালার বনমালী নস্কর রোডের বৃষ্টি বাগচী। লা লিগায় লিগ ওয়ান ক্লাব মাদ্রিদ ক্লাব দ্য ফুটবল ফেমেনিনোতে (মাদ্রিদ সিএফএফ) খেলার জন্য তাঁকে নির্বাচিত করেছেন ওই ক্লাবের স্পটাররা। লুধিয়ানা থেকে মঙ্গলবার ফোনে বৃষ্টি বলছিলেন, ‘‘অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমি মাদ্রিদে যাব লা লিগায় খেলতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেয়েদের লিগ প্রচণ্ড জনপ্রিয়। ডালাস সিটি এফ সি-তে খেলার সময় ওদের স্পটাররা আমাকে বেছেছেন। এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। কিছু আর্থিক সমস্যা আছে। সেটা কাটানোর চেষ্টা করছি।’’

ভাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রী, সুব্রত পাল বা গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুরা বিদেশের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন। কিন্তু মেয়েদের ফুটবলে এ রকম ঘটনা ঘটেনি কখনও। কী ভাবে এটা সম্ভব হল? বর্তমানে বেঙ্গালুরু নিবাসী বৃষ্টি বলছিলেন তাঁর চমকপ্রদ উত্থানের কথা, ‘‘সাত বছর বয়স থেকেই ফুটবল খেলি। বেঙ্গালুরু সাইতে খেলতাম। কর্নাটকের হয়ে মেয়েদের জাতীয় ফুটবলে খেলেছি। ভারতীয় দলেও ডাক পেয়েছিলাম। কিন্তু পড়াশুনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ায় দেশের জার্সি পরা হয়নি।’’ তারপর যোগ করলেন, ‘‘আমার বাবা-মা দু’জনেই অধ্যাপনা করেন। ওঁরা চাইতেন আমি অন্য খেলা খেলি। পড়াশুনাও করি। সে জন্য ২০১২তে চলে যাই যুক্তরাষ্ট্রে। মানব দেহের অঙ্গ সঞ্চালন নিয়ে পড়াশুনা করতে। কিন্তু ফুটবল ছাড়তে পারিনি।’’ ওকলাহামা ও উত্তর টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পড়তেই ছাত্রীদের দলে ঢুকে পড়েন। ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে খেলতে গিয়ে মেয়েদের আধুনিক ফুটবল শিখি। যা ভারতে কল্পনাই করা যায় না। চোখ খুলে যায়। পেশাদার ফুটবলার হওয়ার কথা তখনই ভাবতে শুরু করি। আধা-পেশাদার লিগে খেলা শুরু করি ডালাসের একটি ক্লাবে। কিন্তু ছাত্রী ভিসা থাকায় হিউস্টনের পেশাদার একটি ক্লাবে ট্রায়াল দিয়ে সুযোগ পেয়েও খেলতে পারিনি। দারুণ আফসোস হচ্ছিল,’’ ফোনে উত্তেজিত শোনায় বঙ্গললনার গলা। ‘‘তখনই খবর পেলাম, লা লিগার মাদ্রিদের ক্লাবের স্পটাররা আমাকে বেছেছেন।’’

সুনীল-সুব্রতদের মতোই প্রথমে রিজার্ভ দলে খেলতে হবে মিডিয়ো বৃষ্টিকে। পছন্দ হলে চার মাস পরে খেলবেন মূল লিগে। মানবদেহের সঞ্চালন সংক্রান্ত গবেষণা আপাতত বন্ধ রেখে বৃষ্টি যাবেন মাদ্রিদে। বললেন, ‘‘সফল হতে হবে। যে কোনও মূল্যেই।’’ শুনে মনে হল, সামনের বছরেই ভারতে মেয়েদের যুব বিশ্বকাপ হবে। তার আগে বৃষ্টি যেন খুলতে চাইছেন নতুন দিগন্ত।

Spanish League Behala Footballer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy