রাশিয়ায় আসন্ন বিশ্বকাপে মাঠে ও মাঠের বাইরে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য বা আকার-ইঙ্গিত যে মোটেই বরদাস্ত করা হবে না, তা সাফ জানিয়ে দিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফান্তিনো। এই সমস্যা প্রতিরোধে ফিফা এ বার এতটাই কড়া যে, এ রকম ঘটনা ঘটলে রেফারিদেরও মাঝপথে ম্যাচ থামিয়ে দেওয়ার অধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্বকাপ চলাকালীন রাশিয়ায় গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠতে পারে এই বর্ণবিদ্বেষ। যে বিষয়ে এই দেশের কুখ্যাতি বিশ্বজোড়া। গত মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গে এক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে এক দল রুশ দর্শক কয়েক জন ফরাসি ফুটবলারের উদ্দেশে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করে। যার জেরে রাশিয়ার ফুটবল ইউনিয়নকে সাড়ে ৩৮ হাজার ডলার জরিমানা দিতে হয়। এই ঘটনার পরে ফুটবলবিশ্বে ঝড় ওঠে। এমনকি এই প্রশ্নও ওঠে যে, রাশিয়ায় বিশ্বকাপে বর্ণবিদ্বেষের আগুন জ্বলে উঠবে না তো?
তবে বিশ্বকাপে এই ধরনের ঘটনা রোখার জন্য যে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে ফিফা, সেই আশ্বাস দিয়েছেন ইনফান্তিনো। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বর্ণবিদ্বেষ, মানবাধিকার বা নিরাপত্তা যা-ই বলুন— এ সব নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। এ সব আটকাতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রেফারিদের পুরো ক্ষমতা দেওয়া থাকবে, ম্যাচ চলাকালীন এমন ঘটনা ঘটলে তাঁরা ম্যাচ সাময়িক বন্ধ রাখতে পারবেন। এমনকি, প্রয়োজনে ম্যাচ পরিত্যক্তও ঘোষণা করতে পারেন। সব কিছুর উপর নজর রাখতে তৈরি আমরা। এ ক্ষেত্রে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’
ইংল্যান্ডের অ-শ্বেতাঙ্গ ডিফেন্ডার ড্যানি রোজ সম্প্রতি তাঁর পরিবারের লোকেদের রাশিয়ায় যেতে নিষেধ করেছেন বর্ণবিদ্বেষের আশঙ্কায়। এই খবর সে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে ফের নড়েচড়ে বসেছে ফুটবলবিশ্ব। ২০১২-র অক্টোবরে সার্বিয়ায় একটি অনূর্ধ্ব ২১ ম্যাচ খেলতে গিয়ে তাঁকে নাকি হেনস্তা হতে হয়েছিল। এমনকি তাঁর উদ্দেশে ঢিলও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন রোজ। এ বার তাঁর বাবাকে রাশিয়ায় যেতে নিষেধ করায় রোজের বাবাও নাকি বেশ ভেঙে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে ফিফা প্রেসিডেন্ট রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেওয়ার সুরে যা বলেছেন, তা শুনে রোজ ও তাঁর পরিবার আশ্বস্ত হতে পারেন। ইনফান্তিনো বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটালে তার পরিণতির জন্য যেন তৈরি থাকে তারা, এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে সবাইকে।’’ রোজের আশঙ্কা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও। তিনি আবার তাঁর দলের ফুটবলারদের অন্য ভাবে বর্ণবিদ্বেষ সামলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।
তিনি কোনও সংঘাতের পথে যেতে চান না। দলের ফুটবলারদের বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে কোনও সংঘাতের পথে গেলে প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের বেরিয়ে যেতে হতে পারে। তাই কোনও প্রতিবাদ বা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে না যাওয়াই ভাল। কোনও আপত্তিকর মন্তব্য বা আকার-ইঙ্গিত হলে সে সবে পাত্তা দিলে চলবে না। দলের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছেলেদের বলে দিয়েছি এই ভাবেই থাকতে। তারা নিশ্চয়ই আমার কথা শুনবে।’’ কোচের কথা শুনে রোজরা সব মুখ বুজে সহ্য করে নিতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy