Advertisement
E-Paper

অবিশ্বাস্য ফিটনেসেই তফাত গড়ে দিচ্ছেন সুবাসিচরা

বিশ্বকাপের চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালও গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। যেখানে জয়ের হাসি মুখে মাঠ ছেড়েছেন ক্রোয়েসিয়া গোলরক্ষক। পরাজিত রুশ গোলকিপার।

তরুণ বসু

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:১০
প্রহরী: টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়াকে জিতিয়ে ফের নায়ক সুবাসিচ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পড়ে যেতে যেতেও বাঁ হাত দিয়ে এ ভাবেই শট বাঁচিয়ে পার্থক্য গড়ে দেন তিনি। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়া জেতে ৪-৩। ছবি: রয়টার্স

প্রহরী: টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়াকে জিতিয়ে ফের নায়ক সুবাসিচ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পড়ে যেতে যেতেও বাঁ হাত দিয়ে এ ভাবেই শট বাঁচিয়ে পার্থক্য গড়ে দেন তিনি। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়া জেতে ৪-৩। ছবি: রয়টার্স

এ বারের বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে তিনটে ম্যাচই নব্বই মিনিটে শেষ হয়েছে। শনিবার রাতে শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়া বনাম ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচটা দেখতে বসেছিলাম এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দুই গোলকিপারকে দেখতে।

রাশিয়ার ইগর আকিনফেভ। আর ক্রোয়েশিয়ার ড্যানিয়েল সুবাসিচ। দু’জনেই প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে দুরন্ত খেলেছেন। রুশ গোলকিপার তো শেষ ষোলোর ম্যাচে স্পেনের বিরুদ্ধে পা দিয়ে পেনাল্টি বাঁচিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন। অনেকেই অবাক হয়েছেন রাশিয়ার গোলরক্ষকের এই ক্ষিপ্রতা দেখে। কেউ কেউ যা দেখে বলছেন, ‘‘গোলকিপার হাত দিয়ে পেনাল্টি বাঁচায় জানতাম। কিন্তু এখন তো দেখছি পা দিয়েও পেনাল্টি বাঁচাচ্ছে।’’

আমি অবশ্য অবাক হইনি। এ রকম ভাবে পেনাল্টি বাঁচাতে আমি অনেককেই দেখেছি। তার মধ্যে আমাদের বাঙালি ছেলে দেবজিৎ মজুমদারও রয়েছেন। টাইব্রেকারের সময় এ ভাবে পা দিয়ে বল বাঁচানোর ক্ষেত্রে দু’টো বিষয় জরুরি। একটা বলের উপর শেষ পর্যন্ত নজর রাখা। দুই দুরন্ত ফিটনেস। এই ফিটনেসে কামাল করছেন সুবাসিচরা।

বিশ্বকাপের চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালও গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। যেখানে জয়ের হাসি মুখে মাঠ ছেড়েছেন ক্রোয়েসিয়া গোলরক্ষক। পরাজিত রুশ গোলকিপার। টাইব্রেকারের সময় ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, বিশ্বকাপের ইতিহাসে নকআউট পর্যায়ে এটি ৩০তম ম্যাচ। যার নিষ্পত্তি হচ্ছে টাইব্রেকারে। প্রথম বার হয়েছিল সেই বিরাশির বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পশ্চিম জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে।

আরও পড়ুন: তিতের কোচিংয়েই আবার ঘুরে দাঁড়াবেন কুটিনহোরা

নোটবুক খুলে দেখতে পাচ্ছি, টাইব্রেকারে এ বার কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ম্যাচের নিষ্পত্তি হওয়ার সংখ্যা গত তিনটি বারের চেয়ে বেশি। গত বছর ব্রাজিলে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পেনাল্টি শুটআউটে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছিল তিন বার। বারো বছর আগে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সময়ও এই সংখ্যাটা ছিল তিন। আট বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সময় এই সংখ্যাটা কমে হয়েছিল দুই। সেখানে এ বার ইতিমধ্যেই চারটি ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে টাইব্রেকারে।

এটা মাথায় রাখতে হবে, গোলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে কোনও গোলকিপারের পক্ষেই যে কোনও প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। পেনাল্টি বাঁচানো তিনটে বিষয়ের যোগফল। বলের উপর চোখ রাখা, ফিটনেস এবং ভাগ্য। যে রকম ভাবে ভাগ্য সহায় না থাকায় আকিনফেভ লুকা মদ্রিচের পেনাল্টি রুখতে গিয়ে বলের কাছে পৌঁছেও তা বাঁচাতে পারেননি। আর ফিটনেসের জন্য তো বিশ্বকাপে খেলা সব দলের গোলরক্ষকই আধুনিক পরিকাঠামোয় অনুশীলন করে অভ্যস্ত। বলে চোখ আর দুর্দান্ত ফিটনেস থাকলে তবেই না ‘রিফ্লেক্স’ বা প্রতিবর্তক্রিয়া কাজ করে।

পেনাল্টির সময় বুদ্ধিমান ফুটবলাররা মাটিতে রেখে বল প্লেসিং করার চেয়ে উপরের দিকে দুই কোণ দিয়ে জালে বল জড়াতে চান। কারণ টাইব্রেকারে গোল করার ক্ষেত্রে এই জায়গা দিয়ে বল গোলে রাখাই সবচেয়ে নিরাপদ।

তবে রাশিয়া বনাম ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে একটা বিষয় খুব চোখে লাগল। এখনকার গোলকিপাররা নানা আধুনিক অনুশীলন করেন রিফ্লেক্স ও ফিটনেস ধরে রাখতে। কিন্তু এ দু’টোই লাগে লাইনে দাঁড়িয়ে খেলার সময়। কিন্তু দুই প্রান্ত থেকে শূন্যে বল ভেসে এলে দরকার অনুমানক্ষমতা। অতীতে লেভ ইয়াসিন, গর্ডন ব্যাঙ্কস, পিটার শিল্টনরা বক্সে থাকা সব খেলোয়াড়কে টপকে শূন্যে বল তালুবন্দি করতেন। ভারতীয় ফুটবলে এই গুণ আমি দেখেছি প্রদ্যোৎ বর্মন, চিত্তরঞ্জন দাস, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুব্রত পালের ক্ষেত্রে। কিন্তু তা বলে বিশ্বকাপে আকিনফেভ বনাম সুবাসিচ দ্বৈরথে এর ছিটেফোঁটাও থাকবে না!

Goalkeepers Danijel Subašić Igor Akinfeev Football FIFA World Cup 2018 ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy