Advertisement
E-Paper

'গোল করে ও করিয়ে যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিলেন নেমার'

লুইস ফিলিপ স্কোলারির পরামর্শও বাঁচাতে পারল না মেক্সিকোকে। প্রত্যাশা মতোই বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌঁছে গেলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-রা। এ বার অপেক্ষা ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের।

ডগলাস দা সিলভা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৮
বাজিমাত: গোল করে এবং করিয়ে নায়ক নেমার-ই। গেটি ইমেজেস

বাজিমাত: গোল করে এবং করিয়ে নায়ক নেমার-ই। গেটি ইমেজেস

ব্রাজিল ২

মেক্সিকো ০


লুইস ফিলিপ স্কোলারির পরামর্শও বাঁচাতে পারল না মেক্সিকোকে। প্রত্যাশা মতোই বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌঁছে গেলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-রা। এ বার অপেক্ষা ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের।

ম্যাচের প্রিভিউয়ে দু’টো ব্যাপারে লিখেছিলাম। এক) জার্মানির বিরুদ্ধে যে-রণনীতি নিয়ে খেলেছিল মেক্সিকো, এই ম্যাচেও ওরা সেই ছকে খেলবে। অর্থাৎ, প্রতি আক্রমণে শুরুতেই গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাবেন হাভিয়ের হার্নান্দেজ (চিচারিতো)-রা। দুই) মেক্সিকোর বিরুদ্ধেই নিজেকে প্রমাণ করবেন নেমার।

আমার অনুমানই ঠিক। প্রথম ২০ মিনিট মেক্সিকোর ফুটবলারেরা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল ভক্তদের। ম্যাচের দু’মিনিটে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে গিয়েছিলেন মেক্সিকোর ইয়ার্ভিং লোসানো। ওঁর শট আমাদের ডিফেন্ডার মিরান্দা ফিলহোর গায়ে লেগে কর্নার না-হলে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ত ব্রাজিল। চিচারিতোরা দেখেছিলেন, ব্রাজিলের রাইট ব্যাক পাগেনা লেমোস জায়গায় থাকছিলেন না। ওঁরা তাই বাঁ প্রান্তকেই বেছে নিয়েছিলেন আক্রমণের জন্য।

২০০২ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করা কোচ স্কোলারির খুব ভাল বন্ধু খুয়ান কার্লোস অসরি। নিজের দেশের সর্বনাশের কথা না-ভেবে ম্যাচের আগে মেক্সিকো কোচকে স্কোলারি পরামর্শ দিয়েছিলেন, শুরুতে গোল করে দিলে ব্রাজিল আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু বলতে ভুলে গিয়েছিলেন, ব্রাজিলকে খেলার সুযোগ দিলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন নেমার-রা।

হারের পর হতাশ মেক্সিকোর ফুটবলারেরা। ছবি:এএফপি।

প্রাথমিক ঝড় সামলে ম্যাচে ফিরতে মিনিট কুড়ি সময় লেগেছিল ফিলিপে কুটিনহোদের। তার পরে কিন্তু সামারা স্টেডিয়ামে সাম্বার নায়কদেরই আধিপত্য। ডান দিক দিয়ে উইলিয়ান। বাঁ দিক দিয়ে গ্যাব্রিয়েল জেসুস। মাঝখানে নেমার ও কুটিনহো। মেক্সিকো রক্ষণে বারবার আছড়ে পড়ছিল হলুদ ঝড়। কিন্তু গোলটাই হচ্ছিল না। নেপথ্যে গিজেরমো ওচোয়ার অনবদ্য গোলকিপিং। চার বছর আগে গ্রুপ লিগের ম্যাচে মেক্সিকোর গোলরক্ষক কার্যত একাই আটকে দিয়েছিলেন নেমারদের। এ দিনও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন ওচোয়া। মেক্সিকো গোলরক্ষক একাধিক নিশ্চিত গোল বাঁচান। তবে জানতাম, বেশি ক্ষণ ওচোয়ার পক্ষে ব্রাজিলের আক্রমণের ঝড় সামলানো সম্ভব হবে না। ঠিক সেটাই হল। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার ছয় মিনিটের মধ্যেই নেমার গোল করে এগিয়ে দিলেন ব্রাজিলকে। এই গোলটাই প্রমাণ করে এই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রধান শক্তি দলগত সংহতি।

নেমারের ব্যাকহিল ধরে গতি বাড়িয়ে মেক্সিকোর পেনাল্টি বক্সের ভিতরে ঢুকে পড়েন উইলিয়ান। তার পরে ঠান্ডা মাথায় ক্রস করেন। পিছন থেকে উঠে আসা নেমার গোল করতে ভুল করেননি। ওঁদের দেখে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে রোমারিয়ো-বেবেতো যুগলবন্দির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। নেমারের পাস থেকেই ৭৯ মিনিটে রবের্তো ফির্মিনহো গোল করলেন। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকেই নেমারকে নিয়ে প্রচুর সমালোচনা চলছে। ওঁর আবেগ নিয়েও বিদ্রুপ কম হয়নি। তিতে বলেছিলেন, সেরা ফর্মে ফিরতে অন্তত পাঁচটা ম্যাচ দরকার নেমারের। এ দিন ওঁকে দেখে আরও ধারালো মনে হচ্ছিল। যাঁরা এত দিন বলছিলেন, নেমার স্বার্থপর। নিজে গোল করা ছাড়া কিছু ভাবেন না। তারা এ বার কী বলবেন? গোল করে এবং করিয়ে যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিলেন নেমার।

দুরন্ত জয়ের রাতে একটাই ধাক্কা— হলুদ কার্ড দেখায় পরের ম্যাচ খেলতে পারবেন না মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা কার্লোস কাজিমিরো।

FIFA World Cup 2018 বিশ্বকাপ ফুটবল 2018 Football Brazil Mexico Neymar Roberto Firmino নেমার রবের্তো ফির্মিনহো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy