আর্জেন্তিনাকে সতর্ক করছে নাইজিরিয়া

লিয়োনেল মেসিদের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগের ম্যাচ খেলতে নামার আগে কার্যত আর্জেন্তিনাকে সতর্ক বার্তাই পাঠিয়ে রাখলেন নাইজিরিয়ার কোচ গ্যারনট রোহা। বলে দিলেন, ‘‘যদি বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচে আর্জেন্তিনাকে আমরা হারাতে পারি তা হলে কেন সেটা বিশ্বকাপে নেমে পারব না। ওই জয়টা তো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।’’

গত নভেম্বরে হর্হে সাম্পাওলির দলকে হারিয়েছিল নাইজিরিয়া। মেসিহীন দলের কাছে ০-২ পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত পাল্টা চার গোল করে জিতেছিল রোহার দল। অ্যালেক্স ইয়োবি জোড়া গোল করে চমকে দিয়েছিলেন সের্জিয়ো আগুয়েরোদের। সে দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে নাইজিরীয় কোচ বলে দিলেন, ‘‘সবাই যেন মনে রাখে আমরা এ বারের বিশ্বকাপের সবথেকে কম বয়সী ফুটবলার নিয়ে এসেছি। যে দলের পা মাটিতে আর আত্মবিশ্বাসটা অনেক উঁচুতে ।’’

গত অক্টোবরে জিম্বাবোয়ের মাঠে রাশিয়ার টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পর পুরো নাইজিরিয়া দেশটাই উত্তাল হয়ে গিয়েছিল। স্টেডিয়াম থেকে সুপার ঈগলদের বেরোতে লেগেছিল কয়েক ঘণ্টা। কারণ দর্শকরা সবাই পুরো দলের সঙ্গে নাচতে চেয়েছিল। নাইজিরিয়ার মানুষ এ বার কতটা তেতে রয়েছে সেটা বোঝা গিয়েছে শনিবার রাতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামার আগের দৃশ্য দেখে। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে তিরিশ লক্ষ্য নতুন চেহারার নাইজিরিয়ার জার্সি। যা অনেকটাই বিশ্বকাপের মূলপর্বে প্রথম বার খেলার সুযোগ পাওয়া ১৯৯৪ এর জার্সির মতো দেখতে। এক জার্সি প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, হোম ও অ্যাওয়ে দু’রকম জার্সিই অন লাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ দিন অক্সফোর্ড স্ট্রিটের দোকান থেকে তা নেওয়ার জন্য বিশাল লাইন পড়ে। বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনা, আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে একই গ্রুপে আছে নাইজিরিয়া। রোহার দলের সঙ্গে মেসিদের দেখা হবে গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে। নাইজিরিয়ান কোচের আশা শেষ ষোলোয় যেতে অসুবিধা হবে না। ‘‘আমার ছেলেরা ইংল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, জার্মানিতে চুটিয়ে খেলছে। তাই তাদের কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেক। সবাই ওদের জয় দেখতে মরিয়া। যোগ্যতানির্ণায়ক পর্বে ওরা দেখিয়ে দিয়েছে কঠিন ম্যাচ কী ভাবে সামলাতে হয়। গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যাওয়ার ব্যপারে আমি আশাবাদী। ’’

আর্সেনালের স্ট্রাইকার অ্যালেক্স ইয়োবি, লেস্টার সিটির কেলেচি ইয়েঞ্চো, চেলসির ভিক্টর মোজেসের মতো সফল ফুটবলার রয়েছে দলে। তাদের উপর এতটাই আস্থা নাইজিরিয়ান কোচের যে বলে দিয়েছেন, ‘‘লিয়োনেল মেসি, মহম্মদ সালাহর দেশের কোচেরা ভাগ্যবান। তাদের দলে ওরকম দুর্দান্ত সব ফুটবলার আছে। আমার দলে মেসি বা সালাহর মতো কেউ নেই। কিন্তু যা আছে তা অন্য অনেকের নেই। দলগত সংহতিই আমাদের আসল সম্পদ। আর ওটাই পার্থক্য গড়ে দেবে এ বার। সালাহর মতো ফুটবলার থাকার চেয়েও যে শক্তি আমার অনেক
বেশি পছন্দের।’’

বিশ্বের অনেক কোচই নাইজিরিয়ার এই দলটাকে রগচটা বলে অভিহিত করেছেন। যা শুনে রোহার মন্তব্য, ‘‘বিদেশে খেলার সুবাদে দলের সবাই কী ভাবে খেলার সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হয় সেটা জানে। আমরা খোলা মনেই খেলব।’’ রাশিয়ায় গিয়ে দলের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কিছু বিধিনিষেধ অবশ্য ফুটবলারদের উপর চাপিয়েছেন নাইজিরিয়ার কোচ। যার মধ্যে আছে রাশিয়ার সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশার ব্যাপারটি। ‘‘ছেলেদের প্রত্যেকের জন্য একটা করে ঘর বরাদ্দ রয়েছে। তারা তাদের স্ত্রী এবং বান্ধবীদের সঙ্গে ফাঁকা সময় কাটাতেই পারে। কিন্তু কোনও রাশিয়ান মেয়ে ঘরে ঢোকানো চলবে না। শুধু আমার অধিনায়ক অ্যালেক্স ইয়োবি পারবে। কারণ ওর বান্ধবী রাশিয়ার মেয়ে।’’