Advertisement
E-Paper

উরুগুয়ে ফুটবলে নবজাগরণ তাবারেজের হাত ধরে

মাত্র ৩২ বছর বয়সে ফুটবলার হিসেবে অবসর নেওয়ার পরেই কোচিং কেরিয়ার গড়ার দিকে মন দেন তাবারেজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ০৪:৩৭
গুরু: উরুগুয়েকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কোচ অস্কার তাবারেজ। ফাইল চিত্র

গুরু: উরুগুয়েকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কোচ অস্কার তাবারেজ। ফাইল চিত্র

রাশিয়ায় চমকপ্রদ কিছু দেখার আশায় রয়েছেন উরুগুয়ের ফুটবল ভক্তরা। আর তাঁদের সেই স্বপ্ন যেমন গড়ে উঠেছে দুই সেরা স্ট্রাইকার, লুইস সুয়ারেস এবং এদিনসন কাভানিকে ঘিরে, তেমনই অগাধ আস্থা জাতীয় দলের চাণক্যের উপর।

উরুগুয়ের ফুটবল কোনও মহাতারকার চেয়ে কম বড় নাম নন তিনি— অস্কার তাবারেজ। ‘এল মাস্ত্রো’ বলা হয় তাঁকে। যার অর্থ শিক্ষক। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ‘ফাদার ফার্গি’-র মতো উরুগুয়ে ফুটবলে পিতৃসম ভাবমূর্তি তাঁর।

মাত্র ৩২ বছর বয়সে ফুটবলার হিসেবে অবসর নেওয়ার পরেই কোচিং কেরিয়ার গড়ার দিকে মন দেন তাবারেজ। যেখানে জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন ফুটবলার হিসেবে, সেই বেলা ভিস্তায় কোচিং শুরু করেই সকলকে চমকে দিয়েছিলেন। সেই সাফল্য দেখেই উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন তাঁকে অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ করে। ১৯৮৩-তে প্যান আমেরিকান গেমসে দল নিয়ে গিয়ে সোনা জেতেন তাবারেজ। তাঁর জীবনের প্রথম সাফল্য, যা তৈরি করে দেবে অসাধারণ এক কোচের মঞ্চ।

১৯৮৫-তে আইএফএ শিল্ড খেলতে এসে চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ের বিখ্যাত ক্লাব পেনারল। সেখানেই ১৯৮৭-তে দায়িত্ব নেন তাবারেজ। এবং, শুরুতেই সাফল্য এনে দেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাব ফুটবলের সব চেয়ে বড় প্রতিযোগিতা কোপা লিবার্তাদোরেস জেতেন তিনি। ক্লাব ফুটবলের সাফল্য দেখেই উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন তাঁকে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। ১৯৮৯-তে তাঁর কোচিংয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠে উরুগুয়ে। কিন্তু ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ০-১ হেরে যায় তারা। ফাইনাল হারলেও তাবারেজ চাকরি হারাননি। ১৯৯০-এ ইতালি বিশ্বকাপে তিনিই কোচ ছিলেন উরুগুয়ের এবং শেষ ১৬-তে পৌঁছয় দল। ইতালির কাছে সেই বিশ্বকাপে হেরে বিদায়ের পরেই তাবারেজ ইস্তফা দেন উরুগুয়ের কোচের পদে। ফিরে যান ক্লাব কোচিংয়ে। এ বার তাঁর ঠিকানা আর্জেন্তিনার বিখ্যাত ক্লাব বোকা জুনিয়র্স। দু’বছরের মেয়াদে বোকা জুনিয়র্সের হয়ে জেতেন আর্জেন্তিনার লিগ এবং সুপারকোপা মাস্টার্স।

এর পর কখনও ইতালি, কখনও স্পেনে কোচিং করে বেড়ালেন তিনি। ২০০১-এ দক্ষিণ আমেরিকায় ফিরে ফের যোগ দিলেন আর্জেন্তিনার ক্লাব ফুটবলে। সেখানেও এক বছরের বেশি থাকলেন না। সব ছেড়ে দিয়ে ফুটবল থেকেই অজ্ঞাতবাস নিয়ে নেন তিনি। সেই অজ্ঞাতবাস চলল চার বছর। সবাই প্রায় ধরেই নিয়েছিল যে, ফুটবল থেকেই পাকাপাকি ভাবে বিদায় নিয়ে ফেলেছেন তিনি। পরিস্থিতিতে নাটকীয় মোড় এনে দিল উরুগুয়ে জাতীয় দলের ব্যর্থতা। ২০০৬-এ তারা বিশ্বকারে যোগ্যতা অর্জনই করতে পারল না। তখনই ফের ‘এল মাস্ত্রো’-র শরণাপন্ন হলেন দেশের ফুটবল কর্তারা। জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে শুরু হল তাবারেজের ফুটবল কোচিং জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। উরুগুয়ে ফুটবলে নবজাগরণ ঘটেছে তাঁরই হাত ধরে। রাশিয়ায় যে সুয়ারেসদের ভাল দল ধরা হচ্ছে, তার নেপথ্যেও চাণক্য তাবারেজের মস্তিষ্ক। ২০১০-এ ব্রাজিল বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠা এবং ২০১১ কোপা আমেরিকা জয় তাবারেজের দলকে নিয়ে আশা বাড়িয়ে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত সংগঠিত ফুটবল খুব কম দেশই খেলে। তাবারেজ একদম নীচ থেকে খেলাটা তৈরি করায় বিশ্বাসী। সেই কারণে উরুগুয়ের সেন্ট্রাল ডিফেন্স খুবই শক্তিশালী। দুর্দান্ত মিডফিল্ডও সাজিয়ে ফেলেছেন তাবারেজ। আক্রমণ বিভাগে সুয়ারেস এবং কাভানিকে রেখে ৪-৪-২ ছকেই সম্ভবত খেলবেন তিনি। রক্ষণ সামলে তবেই আক্রমণে যাবেন। সীমাবদ্ধতা নিয়েও কী ভাবে জিততে হয়, ‘এল মাস্ত্রো’ তার সেরা উদাহরণ যে!

Óscar Tabárez Uruguay Uruguayan coach FIFA World Cup 2018 Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy