বব উইলিস যতই দাঁত-নখ বার করে আক্রমণ করুন। মাইকেল ভন যতই বাঁচার রাস্তা হিসেবে ভারতীয় টিমের সামনে ‘বাস পার্ক’ করার কথা বলুন। চতুর্দিকে অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের মুণ্ডপাতে ভারতীয় টেস্ট টিমের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা এতটুকু প্রভাবিত নয়।
আদতে, ঋদ্ধিমান ব্যাপারটা ভাল করে জানেনই না!
‘‘সত্যি বলতে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড হেরেছে জানি। কিন্তু খেলাটা দেখিনি। কে কী বলছে, না বলছে, জানিও না। তবে এটুকু বলতে পারি, মাঠে কে কবে ভাল করে দেবে, কেউ বলতে পারে না। যাঁরা বলছেন, সে সব তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। কিন্তু খাতায় কলমে একটা টিমকে বিচার করা এক জিনিস, আর মাঠে আলাদা। খেলাটা তো মাঠে হবে,’’ মঙ্গলবার সন্ধেয় ফোনে বলছিলেন ঋদ্ধি। সঙ্গে দ্রুত যিনি যোগ করে দেন, ‘‘আর একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। আমরা যেমন এই টেস্ট সিরিজটায় নিজেদের পারফরম্যান্স আরও বেটার করতে নামব, তেমন ওরাও কিন্তু ভারত সফরে আসছে ভাল করতে।’’
তবে ঋদ্ধিমান একটা জিনিস মেনে নিচ্ছেন। অশ্বিন-জাডেজা-মিশ্র বনাম মইন-রশিদ যুদ্ধে এগিয়ে ভারতীয় স্পিন-ব্যাটেলিয়ান। বঙ্গসন্তান বলে দিলেন, ‘‘খেলাটা ভারতে। স্বাভাবিক ভাবে হোমে অশ্বিনরাই এগিয়ে থাকবে।’’ একই সঙ্গে ভারতীয় টেস্ট উইকেটকিপারের এটাও মনে হচ্ছে যে, ২০১২ সফরে যে স্পিন-আক্রমণ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড তারা তুলনায় ভাল ছিল। অর্থাৎ, গ্রেম সোয়ান-মন্টি পানেসরের ইংল্যান্ড। ঋদ্ধিমান বললেন, ‘‘নাম হিসেবে ওরা অনেক ভাল ছিল। গ্রেম সোয়ান তো বিশ্বের সেরা অফ স্পিনারদের একজন ছিল। তখনকার ইংল্যান্ডের পেস এবং স্পিন, দু’টো বিভাগই ভাল ছিল। এ বার দেখতে হবে কে কেমন করে। এরাও ভাল টিম। কিন্তু ওই যে বললাম, মাঠে না নামলে কিছু বোঝা যাবে না।’’
আর জো রুট বনাম বিরাট কোহালির ব্যাটিং-যুদ্ধ? ক্রিকেট বিশ্ব তো আসন্ন সিরিজকে এই দুই সেরা ব্যাটসম্যানদের শ্রেষ্ঠত্বের যুদ্ধ হিসেবেও দেখছে। রুটকে কী ভাবে দেখছেন? ঋদ্ধির থেকে উত্তর আসে, ‘‘ওর ব্যাটিং আমার টিভিতেই যা দেখা। অবশ্যই ভাল ব্যাটসম্যান। তবে এখানে কেমন উইকেট পাবে, তার উপর সব নির্ভর করছে। নির্ভর করছে, আমাদের বোলারদের কেমন সামলায় ও তার উপরও।’’
নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর প্রত্যাশা এমনিই বেড়ে গিয়েছে। ঋদ্ধিমানকে নিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি তাঁকে জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি দিয়ে থাকে, তা হলে নিউজিল্যান্ড টেস্টের ইডেন তাঁর ব্যাটিংকে পূর্ণ প্রতিষ্ঠা দিয়ে গিয়েছে। দলের চাপের মুখে দু’ইনিংসে দু’টো হাফসেঞ্চুরি দিয়ে। লোকজন কিছু বলছে না, আপনার তো এটাই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট? শুনে ঋদ্ধি বললেন, ‘‘না, সে রকম কিছু নয়। আর প্রত্যাশার ব্যাপারটা আমি বলতে পারব না। যারা সেটা করছে, তারা বেটার বলতে পারবে। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি যে, টিমের যা দরকার ছিল, আমি করেছি। ব্যস। কোনও বাড়তি লাগেজ তাই আমার থাকবে না। যে ভাবে আগের ম্যাচ খেলেছি, যে ভাবে বেঙ্গল ম্যাচ খেলি, সুযোগ পেলে সে ভাবেই নামব।’’
তাই?
‘‘অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিরাট তো আমাকে সেটাই বলে। বলে যে, যে ভাবে বেঙ্গল ম্যাচ খেলিস, সে ভাবেই খেলবি,’’ বলে চলেন। সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘আসলে আমি জীবনে কোনও দিন ল্যান্ডমার্কের পিছনে ছুটিনি। কোনও দিন ভাবিনি আমাকে অমুকটা করতে হবে, তমুকটা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, ল্যান্ড মার্কের পিছনে ছুটে লাভ নেই। বরং ভাল খেলতে থাকলে নানা ল্যান্ডমার্ক আপনি এমনিই ছুঁয়ে ফেলবেন।’’ পাশাপাশি বলে দেন, বিরাটের টিমের টেস্টে এক নম্বর হওয়ার কারণ। বলে দেন, টিমের আবহাওয়াটাই এর নেপথ্যে সবচেয়ে কার্যকরী।
‘‘বিরাটের টিম মন্ত্র বলে আলাদা কিছু নেই। পজিটিভ চিন্তাভাবনা সবাইকে করতে বলে ও। আমাদের টিমে সবাই মজা করতে পছন্দ করে। নিজেদের ফুরফুরে রাখতে পছন্দ করে। ফিল্ডিংয়ের সময়ও আমরা এনজয় করি। হাসি-ঠাট্টা চলে। আর হ্যাঁ, আমরা একে অন্যের ভাল পারফরম্যান্সে খুশি হই। এগুলোই আমাদের এক নম্বর করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy