Advertisement
E-Paper

দিন বদলায়,পাল্টায় খেলা, সবের মধ্যে টিকে ‘খেপ’-ই

জেলায় ডিউস বল-এ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট কমেছে। টুর্নামেন্ট এখনও হয়, তবে ডিউস বলের জায়গা নিয়েছে টেনিস বল। নতুন করে শুরু হচ্ছে পাড়া প্রিমিয়ার লিগ। ডিউস বল-এ খেলোয়াড়েরা জেলা ছেড়ে ছুটছেন অন্যত্র। তবে একই থেকে যাচ্ছে খেপ খেলার চাহিদা। কেউ টাকার বিনিময়ে। কেউ আবার খুশি মাংস-ভাতেই। এই খেলায় অংশ নিয়েছেন জেলার নেতারাও। প্রত্যেকটি দলই হায়ার করে নিয়ে যান খেলোয়াড়দের। সব বদলালেও বদল নেই ‘খেপ’ খেলার। জেলায় জেলায় এখনও রাজা খেপই। জেলায় ডিউস বল-এ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট কমেছে। টুর্নামেন্ট এখনও হয়, তবে ডিউস বলের জায়গা নিয়েছে টেনিস বল। নতুন করে শুরু হচ্ছে পাড়া প্রিমিয়ার লিগ। ডিউস বল-এ খেলোয়াড়েরা জেলা ছেড়ে ছুটছেন অন্যত্র। তবে একই থেকে যাচ্ছে খেপ খেলার চাহিদা। কেউ টাকার বিনিময়ে। কেউ আবার খুশি মাংস-ভাতেই। এই খেলায় অংশ নিয়েছেন জেলার নেতারাও। প্রত্যেকটি দলই হায়ার করে নিয়ে যান খেলোয়াড়দের। সব বদলালেও বদল নেই ‘খেপ’ খেলার। জেলায় জেলায় এখনও রাজা খেপই।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২০
খেপ নয়: কোচবিহারে নিয়মিত ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। কখনও সিএবি-র। কখনও জেলাস্তরের। তেমনই একটি খেলার খণ্ডচিত্র। ফাইল চিত্র

খেপ নয়: কোচবিহারে নিয়মিত ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। কখনও সিএবি-র। কখনও জেলাস্তরের। তেমনই একটি খেলার খণ্ডচিত্র। ফাইল চিত্র

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় খেলা। কখনও ফুটবল, কখনও ক্রিকেট। সেই সঙ্গে রয়েছে হাডুডু খেলা। বদলায় না শুধু ‘খেপ খেলা’। শীত পড়তেই যেন সেই খেপের হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে জেলা থেকে গ্রামে-গঞ্জে। কাউকে টাকার বিনিময়ে কিনে নেওয়া হয়। কেউ আবার বন্ধুর ক্লাবের হয়ে ‘খেপ’ খেলে মাংস-ভাত খেয়েই বাড়ি ফেরেন। আবার কেউ কেউ উপহার হিসেবে পায় ক্রিকেট ব্যাট বা পোশাক। জেলার নামী খেলোয়াড় তো বটেই এই ‘খেপ’ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন জেলার নেতা-মন্ত্রীরাও। ছোট বয়সে তাঁরাও নানা দলের হয়ে খেলেছেন। যদিও সেটা ছিল একদম গ্রাম্যস্তরে। সেই ‘খেপ’ খেলা নিয়ে একটা উদ্মাদনা বরাবর রয়েছে এই জেলায়। যদিও এই অঞ্চলে এই ‘খেপ’ ‘হায়ার’ হিসেবেই পরিচিত। প্রায় প্রত্যেকটি দল ‘হায়ার’ করে খেলোয়াড়দের নিয়ে যান।

কোচবিহারের তুফানগঞ্জে বাড়ি ক্রিকেটার শিবশঙ্কর পালের। তিনিও মহকুমা শহরে থাকার সময়ে একাধিক দলের হয়ে খেলেছেন। তারপরে কলকাতায় গিয়ে তাঁর খেলার কথা প্রত্যেকেই জানেন। একসময় ‘খেপ’ খেলেছেন কোচবিহার জেলা স্কুল বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সম্পাদক উত্তমকুমার রায়। তিনি জানান, তিনি বরাবর ‘ভলিবল’ খেলতেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভলিবল দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। কোচবিহারের নাট্যসঙ্ঘ, পঞ্চরঙ্গী ক্লাবে যেমন খেলেছেন তেমনই খেলেছেন শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির একাধিক ক্লাবে। তিনি বলেন, “খেলার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। কেউ যাতায়াত ভাড়া আর খাওয়াদাওয়া দিলেই মাঠে নেমে পড়তাম। বহু জায়গায় খেলেছি। ম্যাচ জিতেছি সম্মান পেয়েছি।’’

কোচবিহারের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ বিষ্ণু বর্মণ জানান, এই মুহূর্তে কোচবিহারে ক্রিকেটের নামকরা খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন জয় রাউত, ধনঞ্জয় দেবনাথ, পিন্টু রাউত, জিয়াউর রহমানরা। এঁরা প্রত্যেকেই জেলা দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। আবার প্রত্যেকেই একাধিক দলের হয়েও খেলেছেন। তাঁর কথায়, “খেপ খেলা জেলায় সবসময় চলে। অনেক দলই শীতের শুরুতে দল তৈরি করার সময় খেলোয়াড়দের হায়ার করেন। অনেকে আবার লিগ শুরু হলে হায়ার করতে শুরু করেন।”

কোচবিহারের গ্রামে বরাবর ক্রিকেট খেলার প্রচলন আছে। সেই সঙ্গে চলে পিংপং। কোচবিহারের ঘুঘুমারিতে তোর্সা সঙ্ঘের পরিচালনায় ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। ওই খেলাতেও ‘হায়ার’ করে খেলতে আনা হয় অনেক খেলোয়াড়কে। ওই ক্লাবের সম্পাদক বিশ্বজিৎ ভৌমিক বলেন, “আমরা যে দল করি তাতে অন্ততপক্ষে চারজন হায়ারে আনা খেলোয়াড় থাকে। খাওয়াদাওয়া,ভাড়া আর পারিশ্রমিক হিসেবেও কিছু তুলে দেওয়া হয়।”

গত কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে ফুটবল খেলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কোচবিহারের ধলুয়াবাড়ির বাসিন্দা শুভজিৎ নন্দী। এখন তিনি কোচবিহারেরই একটি দলের ‘ভেটারেন্স’ সদস্য হয়ে খেলেন। তিনি জানান, তিনি কোচবিহার পুরসভা, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম থেকে শুরু জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির একাধিক দলে খেলেছেন। অসমের বহু ক্লাবেও ‘হায়ার’ খেলোয়াড় হিসেবেই গিয়েছেন তিনি। কোথাও পাঁচশ’ টাকা কোথাও হাজার টাকা করে দেওয়া হতো তাঁদের। তিনি বলেন, “এখন সময় পাল্টে গিয়েছে। একজন খেলোয়াড়কে ম্যাচ পিছু তিন থেকে চার হাজার টাকা দেওয়া হয়। আমরা তেমন পাই না। তবে অন্য দলের হয়ে খেলার মধ্যে একটা আনন্দ রয়েছে। তা উপভোগ করেছি। আবার কম বয়সে বন্ধুর ক্লাবের হয়ে খেলে মাংস-ভাত খেয়ে বাড়ি ফিরেছি।”

খেপ থেকে বাদ যান নি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও ‘খেপ’ খেলেছেন। তিনি বলেন, “তখন হাডুডু খেলতাম। আমরা অবশ্য গ্রামেই খেলেছি। তবে অনেক দলের হয়ে খেলেছি। জয়ী হওয়ার পর সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া হতো।”

Cricket Cricketers Tournament
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy