বার্সেলোনা জার্সিতে তাঁর প্রতিভার বিচ্ছূরণে আলোকিত ফুটবলবিশ্ব। বছরের পর বছর রেকর্ডের নতুন পালক লাগিয়ে চলেছেন নিজের টুপিতে। তাই বলে কটাক্ষও কম সহ্য করতে হচ্ছে না। সমালোচকদের মূল অভিযোগ ক্লাবে তিনি যা-ই করুন, দেশের জার্সিতে সেই ফর্ম কোথায়? শেষ দুটো বিশ্বকাপে তাঁর গোলসংখ্যা মাত্র এক!
তিনি— আর্জেন্তিনার মহাতারকা লিওনেল মেসি কিন্তু নতুন প্রতিজ্ঞা করলেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের আগে। নীল-সাদা জার্সির ভক্তদের আশ্বস্তও করলেন।
কী রকম?
মেসি জানিয়ে দিচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের পর গত চার বছরে ফুটবলার হিসেবে অনেক উন্নতি করেছেন। দায়বদ্ধতা, দায়িত্ব নেওয়ার চাপ সামলানো শিখেছেন। ‘নতুন’ এই মেসি গড়ার কারিগর অবশ্য কোনও কোচ বা ফুটবলার নন। তাঁর দেড় বছরের ছেলে থিয়াগো! জুনিয়র মেসি এখন বাবার ‘লাকি চার্ম’। মেসির কথায়, “চার বছর আগে যা ছিলাম, এখন আর সে রকম নেই আমি। বাবা হওয়ার পরে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে শিখেছি। এই মুহূর্তে আমার জীবনে আগে থিয়াগো, তার পর বাকি সব কিছু। খারাপ সময় চললেও থিয়াগোর মুখটা দেখলে সব ঠিক হয়ে যায়। ফুটবলার হিসেবে নতুন প্রেরণা পাই।”
রিওর বাসেও লিওর কোলে থিয়াগো।
দেশের আগে ক্লাবকে রেখে আসার জন্য বরাবর অভিযোগের তির উড়ে এসেছে যাঁর দিকে, তিনি এখন নতুন কটাক্ষের সামনে। কী, না মেসি নাকি ক্লাবের আগে দেশকে রাখছেন। ফুটবলের রাজপুত্র অবশ্য এ সবে কান দিচ্ছেন না। বরং বলে দিচ্ছেন, তাঁর খেলার সমালোচক তিনি নিজেই। “কে কী বলল, তাতে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় সমালোচক। আমার আসল আনন্দ হচ্ছে ফুটবল খেলা। সব সময় ইচ্ছে থাকে আরও ভাল খেলার। যে দিন আর ভাল লাগবে না, খেলা ছেড়ে দেব।”
মেসি আরও মনে করেন, দেশকে তৃতীয় বিশ্বকাপ এনে দিলেও তিনি বিশ্বের সেরা ফুটবলার হবেন না। তাঁর কথায়, “বিশ্বকাপ জিততে পারলে আমি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হব। কেরিয়ারে আর একটা ট্রফি যোগ হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি বিশ্বের সেরা ফুটবলার হয়ে যাব। রোনাল্ডো, নেইমার, জাভি, ইনিয়েস্তা, অনেক বিশ্বমানের ফুটবলার আছে।”
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠেই ত্রিনিদাদ ও স্লোভেনিয়ার সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আলেহান্দ্রো সাবেয়ার দল। এ দিন বুয়েনস আইরেসে পুরোদমে অনুশীলন করেন মেসিরা। সাবেয়া আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেসিকে কেন্দ্র করে দল গড়বেন কিন্তু মেসির উপর বাড়তি চাপ দেবেন না। এ দিনও সাবেয়া বলেন, “দলের সবাইকে সাহায্য করবে মেসি। কিন্তু দলের সব চাপ ওর ঘাড়ে ফেললে চলবে না।” রোজ ওয়ার্ম আপ করা ছাড়াও আর্জেন্তিনার প্রাথমিক দলকে দু’ভাগে ভাগ করে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলাচ্ছেন সাবেয়া। মেসি, ইগুয়াইন ও আগেরোকে এক দলে রেখে পরীক্ষা করে চলেছেন আর্জেন্তিনা কোচ। আর বারো দিন পর কতটা সফল হবেন, এখন সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy