বুধবার ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার আর্মান্দো কোলাসোর অধ্যায় নব্বই শতাংশ শেষ বলার পর বৃহস্পতিবার গোয়ার বাড়ি থেকে ‘আনন্দবাজার’কে সাক্ষাৎকার দিলেন আর্মান্দো কোলাসো।
প্রশ্ন. আগামী মরসুমে ইস্টবেঙ্গল কোচের পদটা আপনার জন্যই রেখেছিলেন কর্তারা। হঠাৎ তাল কাটল কোথায়?
আর্মান্দো: আমি যে আগামী মরসুমে ইস্টবেঙ্গল কোচ এই চুক্তি আপনি কোথাও দেখেছিলেন?
প্র. সেই চুক্তি করতেই তো কর্তারা গোয়া উড়ে গিয়েছিলেন। ফুটবল সচিব জানিয়েও দিয়েছিলেন আপনিই আগামী মরসুমের কোচ। ডামাডোল কেন?
আর্মান্দো: আমি পাঁচ বার আই লিগ চ্যাম্পিয়ন কোচ। গত বছর ইস্টবেঙ্গল এক সময় লিগ টেবলে সপ্তম স্থানে ছিল। সেখান থেকে রানার্স করেছি ইস্টবেঙ্গলকে। গত বার কর্তারা যে টাকা দিয়েছিলেন সেই টাকাতেই আমি কোচিং করিয়েছি। এ বার তো একটু বেশি অর্থ চাইতেই পারি।
প্র. আপনি সপ্তম বলছেন। কিন্তু সে তো কম খেলার জন্য? আর ইস্টবেঙ্গল কি রানার্স হওয়ার জন্য টিম করে?
আর্মান্দো: মনে রাখবেন ফুটবলারদের চোট, বিদেশিদের না পাওয়া আমার একটা সমস্যা ছিল।
প্র. সোমবার রাতে রাজি হয়েছিলেন কেন?
আর্মান্দো: রাজি হইনি। ওরা আমাকে একটা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি পাল্টা আর একটা প্রস্তাব দিয়েছি।
প্র. আপনার প্রস্তাবটা বলবেন?
আর্মান্দো: আমি ওঁদের বলেছিলাম আর্থিক চুক্তি বাড়াতে। একটা ভাল গাড়ি চেয়েছিলাম। আর বলেছিলাম একজন জিম ইনস্ট্রাকটর আর নিউট্রিশিয়ান দিতে। সঙ্গে আইএসএল-এ কোচিং করাতে দিতে হবে। আমার প্রস্তাবে কিছু তো বলবে।
প্র: সাত মাস আগেও বলতেন, ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করানো আমার একমাত্র স্বপ্ন। সেটাই কি এখন বদলে গিয়েছে আইএসএল-এ?
আর্মান্দো: এতে অন্যায় কী আছে? কলকাতার দল আমাকে ডেকেছিল। ওখানে কাজ করলে আটলেটিকোর কোচেদের কাছে অনেক কিছু শিখতে পারব। টাকা পাব। কর্তাদের বলেছিলাম, আইএসএল-এ কাজ করে যে টাকা পাব তার তিরিশ শতাংশ ক্লাবের ইয়ুথ ডেভলপমেন্টে দিয়ে দেব। এতে তো ক্লাবই লাভবান হত। কলকাতার লিগ পার্টনাররা আমাকে ইন্টারভিউ দিতে আপনাদের শহরে যেতে বলেছিল। কিন্তু ওরা গোয়া চলে এল। আর ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া হল না।
প্র: আইএসএল-এর ওই তিন মাস আপনি কি ইস্টবেঙ্গল থেকে বেতন নিতেন না?
আর্মান্দো: নিতাম।
প্র: তা হলে ওই তিন মাস ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের প্র্যাকটিস করাবেন কে? বিশ্বের কোথাও এ রকম হয়েছে? তা হলে তিরিশ শতাংশ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা হাস্যকর নয়?
আর্মান্দো: ইস্টবেঙ্গলকে আগামী মরসুমেও কোচিং করাতে চেয়েছিলাম। আমি কয়েক জন ফুটবলারকেও নিতে বলেছিলাম। ওরা র্যান্টি বাদে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে?
প্র: তাঁরা কারা?
আর্মান্দো: গোয়া আর বাংলার কয়েক জন ফুটবলার রয়েছে।
প্র: আপনি রোজ বলতেন ফুটবলটা তরুণদের খেলা। এঁরা কি তরুণ? তাঁদের গত মরসুমে ফর্মটা জানাবেন?
আর্মান্দো: এদের কেউ রক্ষণে সব পজিশনে খেলতে পারে। কেউ মাঝমাঠ, রক্ষণ দু’জায়গায়।
প্র: আপনার হাতে তো মেহতাব, খাবরা রয়েছে। আপনি নিজে অভিষেক, সুবোধদের আগামী ভরসা বলেছেন। আবার ভ্যালেরিয়ানোর কথাও বলছেন? অনেকে তো একে দ্বিচারিতা বলছেন।
আর্মান্দো: কে কী বলছেন তাতে কান দেই না। সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই চলি।
প্র: ক্লাব সচিব বলেছেন আপনার এই ডিগবাজিতে তিনি আহত। আপনার ‘হোমসিকনেস’ নিয়ে যখন মিডিয়া হইচই করেছিল তখনও তিনি কিন্তু পাশে ছিলেন।
আর্মান্দো: আহত তো আমিও। আর হোমসিকনেস? আমি অসুস্থ। বাড়িতে বউ একা। তাই প্র্যাকটিসে ছুটির দিনগুলোতে গোয়া গিয়েছি। নিজের পয়সায়। ক্লাবের কাছে হাত পাতিনি। ওঁরা আমার প্রস্তাব যদি মানতে না পারে বলে দিক। আমি তো ইস্টবেঙ্গলে থাকতেই চাই।
প্র: ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়ার জন্য একটা সুযোগ চাইতেন। সেটা পেলেনও। কিন্তু যখন ইস্টবেঙ্গল আপনাকে চাইল তখন টাকাটা আপনার কাছে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল।
আর্মান্দো: বাঁচতে গেলে কার না টাকা লাগে। আমি ইস্টবেঙ্গলকে ভালবাসি কারণ ওরা আমার দুর্দিনে পাশে ছিল। ওরা আমার প্রস্তাব মানল কি না তা জানাক? আমি আইএসএল-এ যদি না যাই, তাহলে আর্থিক ব্যাপারটা একটু দেখুক। মানছি, যে ক্লাব লাইসেন্সিং-এর জন্য এ বার পেমেন্ট কমবে।
প্র: আপনি চার্চিল, মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবের প্রস্তাব শোনাচ্ছিলেন। সেগুলো কতটা এগিয়েছে?
আর্মান্দো: আমার ইনিংস শেষ হয়নি। আর ইস্টবেঙ্গল অধ্যায়ও শেষ হয়ে যায়নি। আজ বেশি রাতেও তো দেবব্রত সরকারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বাকিটা সময় মতো ঠিক জানতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy