ময়দানের ‘ভোম্বলদা’-র পথেই হয়তো হাঁটতে চলেছে ‘বাবলুদা’-র টালিগঞ্জ!
এগারো বছর আগে যে টোটকায় আসিয়ান কাপ ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে নিয়ে এসেছিলেন সুভাষ ভৌমিক, সেই একই টোটকা কাজে লাগিয়ে এ বার কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সুব্রত ভট্টাচার্যের টালিগঞ্জ। ফুটবলারদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে গোটা টিমকে একসঙ্গে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছেন টালিগঞ্জ-কর্তারা। ঠিক যেমন আসিয়ান কাপ খেলতে যাওয়ার আগে ভাইচুং-সন্দীপ নন্দীদের টিমকে সল্টলেকের এক পাঁচতারা হোটেলে রেখেছিলেন সুভাষ। তবে টালিগঞ্জ ফুটবলারদের কোথায় রাখা হবে, সেটা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেননি ক্লাব-কর্তারা।
ফুটবলারদের একসঙ্গে রাখার এই প্রচেষ্টা অবশ্যই চমকপ্রদ। কিন্তু এর পিছনে উদ্দেশ্য শুধুই কি ফুটবলারদের মনস্তত্ত্ব? টিডি সুব্রত ভট্টাচার্যের দাবি, “আমি যখন ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবের কোচ ছিলাম, তখনও ফুটবলারদের একসঙ্গে রেখেছিলাম। কল্যাণীতে। আমার মতে, এতে ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ে, মাঠেও তার সুফল পাওয়া যায়। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে টালিগঞ্জ ফুটবলারদের একসঙ্গে রাখা হচ্ছে, সেটা সমর্থন করি না।”
উদ্দেশ্য? সেটা আবার কী?
মোহনবাগান তাঁবুতে বসে তখন আড্ডার মেজাজে সুব্রত। একবার চার পাশে চোখ বুলিয়ে নিয়েই বলে উঠলেন, “ইস্টবেঙ্গল নাকি আমাদের ফুটবলারদের বাইরে থেকে প্রভাবিত করতে পারে! এটা কর্তাদের ধারণা। তাই রবিবার ওদের একসঙ্গে এক জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” আরও জানা গেল, বাইরের জগতের সঙ্গে টিমের যোগাযোগের ব্যবস্থাও নাকি ছিন্ন করা হচ্ছে। সুব্রত বলছিলেন, “শুনলাম ফুটবলাররা নাকি মোবাইল ফোনও রাখতে পারবে না। তবে আমি এ সবে বিশ্বাস করি না। ম্যাচ জিতেই চ্যাম্পিয়ন হতে চাই আমি।”
যা শুনে টালিগঞ্জ অগ্রগামীর প্রেসিডেন্ট, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আকাশ থেকে পড়লেন। বললেন, “টিডি-র সঙ্গে কথা বলেই আমরা ফুটবলারদের এক জায়গায় রাখার ভাবনা-চিন্তা করেছি। যাতে মঙ্গলবার সবাই একসঙ্গে স্টেডিয়ামে যেতে পারে।” অরূপের দাবি, “ইস্টবেঙ্গল বাইরে থেকে প্রভাবিত করবে, এ রকম কোনও আশঙ্কা আমাদের নেই। ফুটবলারদের মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বাধা নেই।”
ইস্টবেঙ্গল ছয় গোলে জেতার পর যা পরিস্থিতি, তাতে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে সুব্রতর দলকে জিততেই হবে। কারণ পয়েন্ট তালিকার বিচারে দু’টো দলেরই পয়েন্ট এক (২২), গোল পার্থক্যও এক (১৮)। ইস্টবেঙ্গল-টালিগঞ্জ ম্যাচ ড্র হলে আর মোহনবাগান তাদের শেষ ম্যাচে সাদার্ন সমিতিকে হারিয়ে দিলে, সুভাষের দল চ্যাম্পিয়ন। সুব্রত নিজেও স্বীকার করলেন, “চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক জায়গায় চলে এল মোহনবাগান। ওরা জিতলে আর আমরা ড্র করলেই লিগ মোহনবাগানের।”
তবে পরিসংখ্যান যা-ই বলুক না কেন, ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ছাপ্পান্ন বছর পর ফের ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন-ই এখন চোখে ভাসছে ময়দানের ‘বাবলু’র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy