Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কেকেআরের হাল দেখে মনে পড়ে যাচ্ছে স্কুলের রাগবি কোচকে

কেকেআরের হারগুলোর হতাশা আমাদের কাছে আরও তীব্র হয়ে উঠছে। কারণ, প্রায় প্রতিটা হারা ম্যাচেই আমরা কুড়ি ওভারের মধ্যে ষোলো-সতেরো ওভার পর্যন্ত বেশ কিছু অসাধারণ ব্যাটিং প্রদর্শনের পর ইনিংসের রাশ হাতছাড়া করছি। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যাটিং-ধসটা টিমের প্রত্যেকের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা। ব্যাপারটা আমাকে আরও বেশি করে ধাক্কা দিয়েছে, কারণ টিমের বাইরে বসে সেটা দেখাটা আরওই বেশি কষ্টদায়ক।

জাক কালিস
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

কেকেআরের হারগুলোর হতাশা আমাদের কাছে আরও তীব্র হয়ে উঠছে। কারণ, প্রায় প্রতিটা হারা ম্যাচেই আমরা কুড়ি ওভারের মধ্যে ষোলো-সতেরো ওভার পর্যন্ত বেশ কিছু অসাধারণ ব্যাটিং প্রদর্শনের পর ইনিংসের রাশ হাতছাড়া করছি।

রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যাটিং-ধসটা টিমের প্রত্যেকের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা। ব্যাপারটা আমাকে আরও বেশি করে ধাক্কা দিয়েছে, কারণ টিমের বাইরে বসে সেটা দেখাটা আরওই বেশি কষ্টদায়ক। যখন দলকে সাহায্য করার ব্যাপারে আমি ক্ষমতাহীন। প্রথম এগারো থেকে বাদ পড়াটা আমার কাছে দুঃখের। তবে আমি বহু বার বলেছি, আমাদের টিমে সব ক্রিকেটারই নির্বাচনী বৈঠকে আলোচ্য বিষয়। কেউই অপরিহার্য নয়। যদিও দলে ফিরতে মুখিয়ে আছি।

কেকেআরের এ ভাবে হারে আমার নিজের ছোটবেলার স্কুলের রাগবি কোচের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে: “খেলার স্কোর যা-ই থাক না কেন, তোমাকে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত লড়াই করে যেতেই হবে।” নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রচুর রাগবি ম্যাচের চূড়ান্ত ফয়সালা হয়েছে ম্যাচের শেষ পাঁচ মিনিটে। যখন প্লেয়াররা শারীরিক আর মানসিক ভাবে সবচেয়ে বিধ্বস্ত অবস্থায় থাকে।

প্রচুর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচেরও চূড়ান্ত ফয়সালা হয় শেষ কয়েক ওভারে। যে জায়গাটায় আমাদের আরও তীক্ষ্ম হওয়া এখনই দরকার। বিপক্ষ আমাদের হারানোর চেয়ে বেশি করে আমরা নিজেরা হারছি। আমাদের থেকে পয়েন্ট কেড়ে নেওয়ার সব কৃতিত্ব প্রতিপক্ষ দলগুলোকে দিয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি, কেকেআর যে পাঁচটা ম্যাচ হেরেছে তার মধ্যে অন্তত তিনটে জেতা উচিত ছিল।

সমান-সমান দুটো টিমের লড়াইয়ে চাপের মুখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাই দু’দলের মধ্যে দিনান্তে পার্থক্য ঘটায়। যে বিষয়টা নিয়ে প্রতিটা দলের মধ্যেই বিস্তর আলোচনা হয়ে থাকে। কোনও কোনও সময় প্লেয়ার তার নিজস্ব অনুভূতির উপর নির্ভর করে জেতার জন্য। কিন্তু বেশির ভাগ সময় তাৎক্ষণিক ক্রিকেটটার সৃষ্টি ঘটে সংশ্লিষ্ট ব্যাটসম্যান বা বোলারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করেই। আর যদি কোনও টিম সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, তা হলে ব্যাপারটা মেনে নেওয়াই ভাল। আমরা যেমন নিতে পারছি না। আমাদের ফিনিশ লাইন পেরনোর উপায় খুঁজে বার করার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিতে হবে। কারণ, আমরা রেসের বেশিটাই খুব ভাল দৌড়চ্ছি।

টিমের বাকি প্লেয়ারদের মতোই আমি পয়েন্ট নিয়ে বেশি অঙ্কটঙ্ক কষিনি। লিগ টেবিল থেকে কেকেআরের ছিটকে পড়ার আশঙ্কাও নিজের মনের মধ্যে আসতে দিইনি। তবে আজ, বুধবার দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সঙ্গে আমাদের ‘জিততেই হবে’-র মতো একটা পরিস্থিতি যে তৈরি হয়েছে সেটা মনে মনে টের পাচ্ছি। দু’টো দলই সাতটা ম্যাচে মাত্র দু’টো জেতায় কোটলা থেকে জিতে বেরোতে মরিয়া থাকবে।

চাপের মুখে ঠান্ডা আর শান্ত মাথাই পরিষ্কার চিন্তা আর পরিকল্পনার জন্ম দেয়। কথাটা আমরা প্রায়ই বলে থাকি। এখন আমাদের সেটা করে দেখানোর সময় এসেছে। আমি মনে করি গ্যারি কার্স্টেন আর এরিক সিমন্সও ওদের টিমকে সেই একই কথা বলেছেন। গত কয়েক দিনে ঘনঘন ম্যাচ আমাদের প্রত্যেককে কঠিন পরিশ্রমে বাধ্য করেছে। দিল্লি ম্যাচটা যদি আমাদের ভালয় ভালয় কাটে, তা হলে দিল্লির অসাধারণ গল্ফ কোর্সে ঘণ্টা কয়েক কাটিয়ে ফুরফুরে হওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jaques kallis ipltag kkr
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE