ছবি: এএফপি।
প্রিয় দলের ম্যাচ দেখতে টিভির সামনে ঠায় সোফার বাঁ-দিকে বসে থাকা। বিপক্ষের উইকেট ফেলতে তুকতাক। ম্যাচ দেখতে বসার আগে নিদেরপক্ষে এক গ্লাস দুধ। জরাজীর্ণ লাকি শার্টে ‘জিতবেই আমার টিম’ সমর্থকের কলার তোলা আত্মবিশ্বাস— ক্রিকেট প্রেমীদের এ রকম কু-সংস্কারের কথা তো আমরা হামেশাই শুনি। কিন্তু বিশ্ব কাঁপানো ক্রিকেটাররা নিজেরাও কিন্তু সৌভাগ্যের সন্ধানে নানা সংস্কার মানার দিক থেকে কম যান না। সেই সুলুকসন্ধান ক’জনের জানা? যত বড় ক্রিকেটারই হোন না কেন এই এক জায়গায় সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি থেকে উমর গুল, ডেল স্টেইনরা সবাই এক সরণিতে।
সচিন তেন্ডুলকর: টেপ জড়ানো, পুরনো ব্যাট হাতে নামছেন তিনি। অবসর নেওয়া কিংবদন্তি ভারতীয় ব্যাটসম্যানকে অনেক সময়ই এ দৃশ্য দেখা গিয়েছে। কিন্তু কেন? আসলে সচিনও ‘লাকি ব্যাটে’র সংস্কারে বিশ্বাসী। বিশ্বসেরা বোলারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বস্ত অস্ত্র বাছার ক্ষেত্রে খুঁতখুতে। নতুন ব্যাটের বদলে সচিনের হাতে তাই প্রায় দেখা গিয়েছে পরিচিত পুরনো উইলো।
বিরাট কোহলি: ভারতীয় ক্রিকেটের ‘হার্টথ্রব’ তিনি। তাঁর আগ্রাসন, স্টাইল নকল করে জেন ওয়াই। কিন্তু বিরাটের ভক্তরা হয়তো জানেন না ব্যাট করতে নামার সময় গ্লাভস বাছার ক্ষেত্রে ‘লাকি’ গ্লাভস জোড়াই বেশি পছন্দ তাঁর। নতুন গ্লাভস নৈব নৈব চ।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি: কু-সংস্কারের দিক থেকে পিছিনে নেই টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেনও। বছরের সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে জন্ম ধোনির। ৭ জুলাই। তাই মাহির ফেভারিট নম্বর সাত। শুধু সাত নম্বরের জার্সিই নয়, ব্যক্তিগত সুগন্ধীর নামও রেখেছেন ‘সেভেন বাই এমএস ধোনি’। অবশ্য শুধু সাত নয়, নতুন কোনও নজির গড়ার পরই চুলের ছাঁট বদলানোও ধোনির প্রিয় সংস্কার। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরই ছেঁটে ফেলেছিলেন লম্বা চুল। ২০১১ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তো ন্যাড়াই হয়ে যান।
উমর আকমল: শুধু ভারতীয় ক্রিকেটাররাই নন। বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁদের পয়লা নম্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও কু-সংস্কারের আকাশে উজ্জ্বল। বিস্ফোরক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উমর আকমল বেশ কিছুদিন ফর্ম খরার সমস্যায় নাজেহাল ছিলেন। খারাপ সময় কাটাতে তাই নিজের ৯৬ নম্বরের জার্সিই বদলে ফেলেন তিনি আধ্যাত্মিক গুরুর (পির) নির্দেশে। তাঁর নতুন জার্সির নম্বর এখন ৩।
সংস্কারের গেরো। সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।
ডেল স্টেইন: বাদ নেই বোলারদের ক্ষেত্রেও। স্টেইনগানই যেমন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ জয়ের অভিযানে তিনিই প্রোটিয়াদের প্রধান ভরসা। গড়ে ১৫০ কিমির মিসাইলে ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়া বিশ্বের এক নম্বর পেসারও মাঠে নামার সময় একটা সংস্কার মেনে চলেন। তাঁর বাঁ-পাটা আগে পড়ে মাঠে প্রবেশের সময়, চোখ থাকে আকাশে। সৌভাগ্য প্রার্থনায়।
স্টিভ ওয়: এখনকার ক্রিকেটারদের নানা সংস্কার দেখে ভাববেন না অবসর নেওয়া কিংবদন্তিদের মধ্যে একই অভ্যাস ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক যেমন পকেটে একটা লাল কাপড়ের টুকরো রেখে দিতেন। যতই তাঁর বিশ্বজয়ী টিম সেই সময়ে একের পর এক ট্রফি জিতুক না কেন স্টিভের পকেটে কিন্তু লাল কাপড়ের টুকরোটা কিন্তু একই ভাবে থেকেছে।
ডেভিড শেপার্ড: ব্যাটসম্যান, বোলারদের কথা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কু-সংস্কার মানার ক্ষেত্রে প্রয়াত ইংরেজ আম্পায়ারের নামও কিন্তু সবার আগে ওঠে। শেপার্ডের নেলসন নাম্বার-১১১ বা তার দ্বিগুন রানে লাফিয়ে ওঠার দৃশ্য ক্রিকেট বিশ্বে বিশেষ পরিচিত। ইংরেজরা অনেকেই মনে করতেন এই নম্বরটা অশুভ। শেপার্ডও তাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy