ফুটবলারররা সিরিয়াস নন, তাই রেগে গিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন কোচ। ময়দানে এ রকম ঘটনা সম্ভবত কখনও ঘটেনি।
সোমবার সকালে সেই অভাবনীয় ঘটনাই ঘটে গেল ইস্টবেঙ্গলে। গুরবিন্দর সিংহ-সহ টিমের ফুটবলাররা তাঁর স্ট্র্যাটেজি মেনে খেলছেন না দেখে রেগে গিয়ে দু’দুবার মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন আর্মান্দো কোলাসো। লাল-হলুদে কোচিং করতে আসার পর প্রথম বার।
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের আমলে মাঝেমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে ঝামেলা হত। ফুটবলারদের মধ্যে ঘুষোঘুষি থেকে লাথালাথি সবই হয়েছে। পরে তা সামলেও নিয়েছেন ব্রিটিশ কোচ। কখনও জরিমানা করে, কখনও ধমক দিয়ে।
কিন্তু কখনও ফুটবলারদের উপর রেগে গিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাননি মর্গ্যান। কোলাসো সেটাই করলেন। কিন্তু কী জন্য ছ’বার আই লিগ জেতা কোচ এটা করলেন তা নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, এটা গোয়ান কোচের টিমে একাত্মতা আনার স্ট্র্যাটেজি! কারও মতে এটা নিতান্তই আবেগের বশে করা। কেউ কেউ আবার বলছেন, কিছু ফুটবলার অনুশীলনে সিরিয়াস নন বলেই এতটা রেগে গিয়েছেন আর্মান্দো।
লাল-হলুদ কোচ অনুশীলন ছেড়ে বেরিয়ে এসে টানেলে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করেছেন দু’বারই। কিন্তু ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে আর্মান্দো বা অন্য কেউ-ই সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলেননি। তবে টিমের সিনিয়র ফুটবলার অ্যালভিটো ডি’কুনহা বলে দিলেন, “আমরা সিরিয়াস নই বলেই কোচ রেগে গিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। পরে আমরা সবাই আলোচনার করে কোচের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। সব মিটে গেছে। এটা সিরিয়াস কোনও ব্যাপারই নয়। অনুশীলনে এ রকম হয়ই।” টিমের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর পুরো ব্যাপারটি খোলসা করে বললেও অন্য ফুটবলাররা এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। সবাই বলছেন, “কিছুই হয়নি।”
কিন্তু ইস্টবেঙ্গল মাঠে এ দিন কী এমন ঘটেছিল যে, আর্মান্দোর মতো শান্ত স্বভাবের মানুষ এত রেগে গেলেন? জানা গিয়েছে, ১০ অগস্ট কলকাতা লিগের উদ্বোধনী ম্যাচ মহমেডানের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচের প্রথম একাদশ বাছতে হচ্ছে আর্মান্দোকে। সেই ভাবনা থেকেই, টিমকে দু’ভাগে ভাগ করে খেলাচ্ছিলেন লাল-হলুদ কোচ। বারবার চিৎকার করে নাকি বলছিলেন, “যা করছ সঠিক ভাবে করো। ঠিকমতো পাস করো। আমি যে রকম বলছি সে রকম করো।” হঠাৎ-ই সবাই দেখতে পান গুরবিন্দর সিংহের দিকে তাঁকিয়ে আর্মান্দো চিৎকার করছেন, “তোমাকে যা বলছি করছ না কেন?” গুরবিন্দর ফের ভুল করেন। আর তাতেই রেগে গিয়ে ড্রেসিংরুমে দিকে পা বাড়ান গোয়ান কোচ। তাঁকে ফিরিয়ে আনতে যান সহকারী কোচ সঞ্জয় মাঝি। এগিয়ে যান অ্যালভিটোও। কোনও ক্রমে তাঁকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মাঠে ফিরিয়ে আনেন সঞ্জয়। আবার অনুশীলন শুরু হয়। মিনিট কুড়ি পর আবার ছন্দপতন। আবার একইভাবে চিৎকার-চেঁঁচামেচি করতে করতে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান ইস্টবেঙ্গল কোচ। সোজা চলে যান ড্রেসিংরুমে। আর ফেরেননি। অনুশীলনও বন্ধ হয়ে যায়। মাঠের মধ্যে ফুটবলাররা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে আলোচনা করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ড্রেসিংরুমে ‘আর কখনও এ রকম হবে না’ বলে কোচকে আশ্বস্ত করেন অ্যালভিটো- খাবরা-রাজু-অর্ণবরা। ‘কিছুই হয়নি’ মুখভাব তৈরি করে ক্লাব তাঁবু ছেড়ে বেরিয়ে যান আর্মান্দোও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy