Advertisement
E-Paper

ডার্বি জট নিয়ে দুই প্রধানের বিরোধ তুঙ্গে

আই লিগের কলকাতা ডার্বির আগে অভিনব বিতর্কের সাক্ষী হল কলকাতা ময়দান। ১১ ফেব্রুয়ারির ভেস্তে যাওয়া ডার্বি আগামী মঙ্গলবার করা যায় কি না, তা নিয়ে সপ্তাহ শুরুর সন্ধেয় কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে তীব্র বিতর্কে জড়ালেন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের দুই সচিব। যা সামলাতে আসরে নামতে হল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে, যিনি এই মুহূর্তে ক্রীড়া দফতরের দেখভাল করছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৮
সংস্কার হওয়া তাঁবুর দ্বারোদ্ঘাটন উপলক্ষে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক শিল্টন পাল ও হরমনজ্যোত্‌ সিংহ খাবরার সঙ্গে টিটি ও বিলিয়ার্ডস-স্নুকারের দুই জাতীয় সেরা বঙ্গকন্যা মৌমা দাস ও দোয়েল দে। সোমবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব তাঁবুতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

সংস্কার হওয়া তাঁবুর দ্বারোদ্ঘাটন উপলক্ষে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক শিল্টন পাল ও হরমনজ্যোত্‌ সিংহ খাবরার সঙ্গে টিটি ও বিলিয়ার্ডস-স্নুকারের দুই জাতীয় সেরা বঙ্গকন্যা মৌমা দাস ও দোয়েল দে। সোমবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব তাঁবুতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

আই লিগের কলকাতা ডার্বির আগে অভিনব বিতর্কের সাক্ষী হল কলকাতা ময়দান। ১১ ফেব্রুয়ারির ভেস্তে যাওয়া ডার্বি আগামী মঙ্গলবার করা যায় কি না, তা নিয়ে সপ্তাহ শুরুর সন্ধেয় কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে তীব্র বিতর্কে জড়ালেন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের দুই সচিব। যা সামলাতে আসরে নামতে হল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে, যিনি এই মুহূর্তে ক্রীড়া দফতরের দেখভাল করছেন।

ভেস্তে যাওয়া ডার্বি ১৭ ফেব্রুয়ারি হচ্ছে কি না তা জানতে চাওয়া হলে এই ম্যাচের আয়োজক ইস্টবেঙ্গলের সচিব কল্যাণ মজুমদার বললেন, “আমরা তো খেলতেই চাই। এ বার ওঁরা কী চাইছেন সেটা জানতে হবে।” জবাবে মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বলে দেন, “খেলতে তো আমরাও চাই। কিন্তু তার আগে একটা উত্তর জানতে চাই। ভবিষ্যতে আমরা ম্যাচ আয়োজন করলে যদি এ রকম সমস্যার (পুলিশি অসহযোগিতায় ম্যাচ আয়োজন করতে না পারা) মুখে পড়ি তখন বিষয়টা এ ভাবে দেখা হবে তো?” বাগান সচিবের উত্তর শুনে লাল-হলুদ সচিব কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঠিক তখনই ঝুপ করে আসরে নেমে পড়েন মন্ত্রীমশাই। অরূপবাবু বাগানের সহ-সভাপতি হলেও এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে পড়েন ইস্টবেঙ্গলেরই পাশে। বলেন “এখানে মন্ত্রী হিসেবে এসেছি।” নির্বাচন কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ নিয়ে বলেন, “ইস্টবেঙ্গল ইচ্ছে করে তো এই পরিস্থিতি তৈরি করেনি। নির্বাচন কমিশন যদি উপনির্বাচনের জন্য পুলিশ চায়, তা হলে রাজ্য প্রশাসন তা দিতে বাধ্য।”

মন্ত্রীমশাইকে মাঝে রেখে দুই সচিব যখন ডার্বি নিয়ে প্রতিক্রিয়া, পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন তখনই দেখা গেল ‘কাহানি মে টুইস্ট’। পাশে বসে হেসে কুল পাচ্ছিলেন না দুই দলের দুই অধিনায়ক ইস্টবেঙ্গলের হরমনজ্যোত্‌ সিংহ খাবরা আর মোহনবাগানের শিল্টন পাল। ডার্বি ম্যাচের আগে দুই অধিনায়কের এ রকম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ময়দানে বিরল দৃশ্যই বটে!

ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের সংস্কার হওয়া তাঁবুর দ্বারোদ্ঘাটন করতে এসে বিতর্কের সলতেয় আগুন অবশ্য ডার্বি নিয়ে আলোচনার আগে জ্বেলে দিয়েছিলেন ক্রীড়া দফতর দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী অরূপবাবুই। তাঁর কথায়, “মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দেখতে আর জনতার ঢল নামে না। নামবেও না।” যার পাল্টা দিলেন দুই প্রধানের দুই অধিনায়ক। লাল-হলুদের অধিনায়ক খাবরা বললেন, “মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের আকর্ষণ কখনও শেষ হতে পারে না। আইএসএলেও চেন্নাইয়ান্সের হয়ে আমি ও শিল্টন খেলেছি। যে দলে বিশ্বকাপারও ছিল দু’তিন জন। তাঁরাও দেখেছি এই ডার্বি নিয়ে ওয়াকিবহাল।” মোহনবাগান অধিনায়ক শিল্টনও বললেন, “মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি ম্যাচ নিয়ে কোনও আকর্ষণ নেই এটা বোধহয় বড় তাড়াতাড়ি বলা হয়ে যাচ্ছে। ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে সবারই ভাল লাগে। তবে এর জন্য আপনাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।”

শেষ বেলাতেও বিতর্কের আগুন নেভেনি। তাঁবু ছাড়ার আগে মোহনবাগান সচিব নিজের মন্তব্যে অটল থেকেই বলে যান, “আই লিগ শুরুর সময় বলা হয়েছিল ম্যাচ আয়োজন করতে না পারলে বিপক্ষ তিন পয়েন্ট ও তিন গোল পাবে। তা হলে এখন এই নিয়ম বদল হবে কেন? হয় এই নিয়ম এ বার তুলে দেওয়া হোক। না হলে ভবিষ্যতে আমরা এই অসুবিধার সম্মুখীন হলে ফেডারেশন পাশে থাকার নিশ্চয়তা দিক।”

আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর অবশ্য এই প্রতিক্রিয়া, পাল্টা-প্রতিক্রিয়ার মাঝে দিল্লি থেকেই বলে দিয়েছেন, “বুধবার সব দলকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সবাইকেই পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলা হবে। আসা করি সমস্যার জট খুলে যাবে।” তবে কী ভাবে সমস্যার সমাধান হবে বা মোহনবাগান তাঁদের সচিবের তোলা দাবিতে অনড় থাকলে কী হবে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সুনন্দ। বাগান সূত্রে খবর, ওই সভায় হাজির থেকে নিজেদের বক্তব্য জানানোই শুধু নয়। আই লিগের ক্লাবগুলিকেও নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে চিঠি দিচ্ছে সবুজ-মেরুন শিবির।

তবে ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে এই বিতর্কের মাঝেও এ দিনের অনুষ্ঠান আলো করে হাজির ছিলেন দুই জাতীয় চ্যাম্পিয়ন বঙ্গকন্যা। টেবল টেনিসের মৌমা দাস। স্নুকার ও বিলিয়ার্ডসের দোয়েল দে। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের দুই অধিনায়কের হাত থেকে সংবর্ধনা নেওয়ার ফাঁকে মৌমা বলে গেলেন, “ন’বছর পর জাতীয় সেরা হওয়ার মূল রহস্য জার্মান কোচের কাছে অনুশীলন। পরিশ্রম, নিষ্ঠা, হার না মানা মনোভাবেই এখনও তাই জাতীয় র‌্যাঙ্কিংয়ে আমি এক নম্বরে।” আর চার বারের বিলিয়ার্ডস ও স্নুকার চ্যাম্পিয়ন দোয়েলের মন্তব্য, “মিডিয়া কী বলছে, সে দিকে না তাকিয়ে স্রেফ পারফর্ম করে যেতে চাই।”

ডার্বি নিয়ে কাজিয়ার মাঝে দুই জাতীয় সেরা কন্যার এই মন্তব্য বেশ সমীহ জাগানোর মতো।

কোচ নিকোলাই: ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতের চিফ কোচ হলেন জার্মানির অ্যাডাম নিকোলাই। চল্লিশেরও কম বয়সি এই কোচের রয়েছে ইউএফ প্রো-লাইসেন্স ডিগ্রি। বর্তমানে নিকোলাই আজারবাইজানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ। ১ এপ্রিল তিনি ভারতীয় যুব দলের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। নিকোলাই ফুটবলার জীবনে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় খেলেছেন।

প্রয়াত বাস্কেটবলার: বাংলা বাস্কেটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিমান চট্টোপাধ্যায়। ৮৩ বছর বয়সে বয়সজনিত রোগে সোমবার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইয়ং বেঙ্গল ক্লাবে ফুটবলও খেলেছেন তিনি।

derby shilton pal harmanjeet singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy