Advertisement
E-Paper

ধোঁয়াশা রেখেই ভারত জয়ে নামছেন আর্মান্দো

পনেরো মাসের মধ্যেই কি ইস্টবেঙ্গলে তাঁর কোচিং জীবনের শেষের কবিতা পড়ে ফেললেন আর্মান্দো কোলাসো? না কি লাল-হলুদে ‘কোচের আয়ু’ পালায় এখনও অনেক অঙ্ক বাকি? যার ক্লাইম্যাক্সটা আসবে মঙ্গলবার রাত ন’টায়। ডার্বি ম্যাচের পরে! শনিবার রাত পর্যন্ত উত্তরদু’য়েরই সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও পাল্লা ভারী প্রথমের দিকেই। রহিম নবিদের ভারত এফসির মুখোমুখি হওয়ার আগের সকালে ইস্টবেঙ্গল কোচের কথাবার্তায় প্রথম প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই স্পষ্ট। যেখানে নেই সেই সদম্ভ উপস্থিতি। নেই উপেক্ষা। নেই মেজাজ। বদলে দলাই লামা থেকে জয়েস মেহেররা ঘোরাফেরা করল।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৬
যুবভারতীতে প্র্যাকটিসের ফাঁকে কোচের সঙ্গে র‌্যান্টি।

যুবভারতীতে প্র্যাকটিসের ফাঁকে কোচের সঙ্গে র‌্যান্টি।

পনেরো মাসের মধ্যেই কি ইস্টবেঙ্গলে তাঁর কোচিং জীবনের শেষের কবিতা পড়ে ফেললেন আর্মান্দো কোলাসো?

না কি লাল-হলুদে ‘কোচের আয়ু’ পালায় এখনও অনেক অঙ্ক বাকি? যার ক্লাইম্যাক্সটা আসবে মঙ্গলবার রাত ন’টায়। ডার্বি ম্যাচের পরে! শনিবার রাত পর্যন্ত উত্তরদু’য়েরই সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও পাল্লা ভারী প্রথমের দিকেই।

রহিম নবিদের ভারত এফসির মুখোমুখি হওয়ার আগের সকালে ইস্টবেঙ্গল কোচের কথাবার্তায় প্রথম প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই স্পষ্ট। যেখানে নেই সেই সদম্ভ উপস্থিতি। নেই উপেক্ষা। নেই মেজাজ। বদলে দলাই লামা থেকে জয়েস মেহেররা ঘোরাফেরা করল।

শনিবার সকালে ধীর লয়ে যুবভারতীতে অনুশীলন সেরে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন পরিচিত সাংবাদিকদের দেখে। সাত-আট মাস আগেও খোশমেজাজে থাকলে আর্মান্দো শোনাতেন তাঁর প্রিয় অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের সংলাপ। এ দিন প্রথমে বললেন, “কার্লো অ্যান্সেলোত্তির রিয়ালও তো আটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে চার গোল খেল। কিছু বদল হয়েছে?” তার পর বলতে শুরু করলেন “দলাই লামা বলেছেন, শত প্ররোচনাতেও রাগতে না। এতে শরীর-মন-স্ৃষ্টিশীলতা সবই বিপর্যস্ত হয়।” ফের মন্তব্য, “জয়েস মেহের-এর ‘ফিলিংস’ বইটা পড়লে বুঝবেন আজ যে রাজা কালই সে ফকির হয়ে যেতে পারে।”

তার পরেই ঘনিষ্ঠ সাংবাদিকের দ্বিচক্রযানে চেপে বলে উঠলেন, “গোয়ায় এলে আমার বাইক-সংগ্রহ দেখে যেও।” শুনলে মনে হবে ডুডুদের কোচের হলটা কী? তিনি কি সেই আর্মান্দো যাঁর দাপটে দু’বছর আগেও ফুটবলাররা সিঁটিয়ে থাকতেন! ছুটে গেল প্রশ্ন, লাল-হলুদে আপনার কোচিং ভবিষ্যত্‌ নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। বিষয়টা পরিষ্কার করবেন? এ বারও দার্শনিকের জোব্বা ছেড়ে বেরোলেন না জাতীয় লিগ ও আই লিগ মিলিয়ে পাঁচ বারের বিজয়ী কোচ। “যাওয়া-আসাটাই তো পেশাদার জগতের নিয়ম। ফালোপা ছিলেন। আমি এলাম। আমি যাব। কেউ আসবে।” আপনার উপর কি মানসিক চাপ রয়েছে? এ বার যেন আগুনে ঘি পড়ল “এখানে জয়টাই তো চাপ। সমর্থক, কর্তা, সাংবাদিক সবাই তো জিততে চায়। হারলেই ‘গেল গেল’ রব। আই লিগে চার ম্যাচের মধ্যে দু’টো জয়, একটা ড্র, একটা হার। আর কী বলব!” তা হলে কি ভারত এফসি ম্যাচের পরেই...? প্রশ্নটা শেষ হতে না দিয়েই গনগনে মেজাজে লাল-হলুদ কোচ এ বার বললেন, “আপনাদের লিখতে সুবিধা হবে, কোচ ডার্বির আগে পালিয়ে গেল...।”


ভারত এফসি-র প্র্যাকটিসে নবি।

ভারত এফসি ম্যাচের আগে এটা যদি সংবাদমাধ্যমের সামনে আবির্ভূত আর্মান্দো কোলাসো হন, তা হলে সংবাদমাধ্যম-বর্জিত ঘনিষ্ঠমহলে তিনি কিন্তু আরও ঠোঁট-কাটা। যেখানে শো-কজ নিয়ে ফেটে পড়ে বলেছেন, “শো-কজ-এর পর আর থাকা যায়!” এমনকী এও বলে গিয়েছেন যে সালগাওকর ম্যাচ হেরে কলকাতায় ফেরার পর কর্তাদের নাকি তিনি ই-মেল পাঠিয়ে জানিয়েছিলেন বৈঠকে যেতে পারছেন না। বিশ্রাম চান। কিন্তু কর্তারা তা অস্বীকার করছেন।

তবে ইস্টবেঙ্গল কোচের ছাত্ররা কেউ কেউ এ দিন বাড়ি যাওয়ার আগে বলে গেলেন, “কোচ কিন্তু আমাদের সঙ্গে এমন কোনও আচরণ করেননি যাতে মনে হয় ভিতরে তিনি ভেঙে পড়েছেন। আসলে ম্যান ম্যানেজমেন্টের দুর্বলতায় দলের রাশটা আজ আর ওঁর হাতে সে ভাবে নেই।”

ভারত এফসি নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচের মূল্যায়ন, নবি, গৌরমাঙ্গি, রাভানন, অরিন্দমদের মতো অভিজ্ঞতার সঙ্গে আফ্রিকান নেশনস কাপে খেলা বেনিনের রোমুয়াল্ড বোকো, নিউজিল্যান্ডার ক্রিস ব্রাইটদের সমীহ করতেই হবে।

কলকাতায় ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে কাজ করতে এসে ডার্বি জয় দিয়েই আর্মান্দোর ময়দানি ইনিংস শুরু। জানেন ডার্বি জয়ের স্বাদ। তাই ডার্বির দিকে লক্ষ্য রেখেই গোয়ান কোচ নবিদের বিরুদ্ধে ডুডুকে প্রথম দলে না রেখে বিশ্রাম দিতে চান। প্রয়োজনে শেষের দিকে নামাবেন। ফরোয়ার্ডে র‌্যান্টির সঙ্গী তাই বলজিত্‌। প্রথম দলে অবিনাশ, বার্তোসরাও নেই। বদলে খেলবেন তুলুঙ্গা, লালরিন্দিকা। বাকি দল একই। কেবল রক্ষণে সুসাককে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অধিনায়ক হরমনজ্যোত্‌ খাবরার মন্তব্যও এই আবহে বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। “ডিকার গোলে প্রথম ডার্বিটা জিতেছিলেন কোচ। এ বারও আর্মান্দো আমাদের অনুপ্রেরণা, মোটিভেশন পরের দুই ম্যাচে।” আর এএফসি কাপ? শুনে হো হো করে হাসছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ, অধিনায়ক। নেপথ্যে যেন কেউ বলে ওঠে“সব ঝুট হ্যায়।”

তা হলে দ্বিতীয় সম্ভাবনা? এই মুহূর্তে গোয়ার টিমে খেলা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলে বসলেন, “ডেম্পোতে বছরে চার বার উনি পদত্যাগপত্র লিখতেন। দেখুন না, ইস্টবেঙ্গল যদি ডার্বি জেতে তখন কী হয়?”

যাতে ইন্ধন যুগিয়ে আর্মান্দোও যে ঘনিষ্ঠ মহলে বলে বসেছেন, “আঠারোতে টিকিট কাটা থাকলেও সে দিন গোয়ায় নাও ফিরতে পারি।”

রবিবার আই লিগ
• ইস্টবেঙ্গল-ভারত এফসি (যুবভারতী, ৭-০০)
• রয়্যাল ওয়াহিংডো- স্পোর্টিং ক্লুব (শিলং, ৪-৩০)

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

ileague eastbengal india fc royal owahingdo sporting club debanjan bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy