Advertisement
E-Paper

ফেডেরারের এখন ‘খারাপ দিন’ই বেশি আসবে

যে ফেডেরারকে দেখে কিছু দিন আগেই আনন্দবাজারে লিখেছিলাম, আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামটা জিতলে এ বছরই হয়তো সেটা আসবে। এতটাই ছন্দে দেখাচ্ছে ওকে। কিন্তু স্বীকার করছি, ভুল দেখেছিলাম। ভুল বিচার করেছিলাম কিংবদন্তিকেও! সত্যি বলতে কী, সাড়ে তেত্রিশের ফেডেরার এখন তিন সেটের ম্যাচেই সেই পুরনো ফেডেরার হয়ে উঠবে। পাঁচ সেটের ম্যাচে সেটা ওর পক্ষে খুব মুশকিল মনে হয় আমার। অস্ট্রেলীয় ওপেনে তৃতীয় রাউন্ডেই আন্দ্রেস সেপ্পির কাছে ৪-৬, ৬-৭ (৫-৭), ৬-৪, ৬-৭ (৫-৭) হেরে গিয়ে ফেডেরার শুনলাম বলেছে, এটা ওর স্রেফ একটা খারাপ দিন!

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৮
বিদায় মেলবোর্ন। ছবি: গেটি ইমেজেস

বিদায় মেলবোর্ন। ছবি: গেটি ইমেজেস

যে ফেডেরারকে দেখে কিছু দিন আগেই আনন্দবাজারে লিখেছিলাম, আঠারো নম্বর গ্র‌্যান্ড স্ল্যামটা জিতলে এ বছরই হয়তো সেটা আসবে। এতটাই ছন্দে দেখাচ্ছে ওকে। কিন্তু স্বীকার করছি, ভুল দেখেছিলাম। ভুল বিচার করেছিলাম কিংবদন্তিকেও!

সত্যি বলতে কী, সাড়ে তেত্রিশের ফেডেরার এখন তিন সেটের ম্যাচেই সেই পুরনো ফেডেরার হয়ে উঠবে। পাঁচ সেটের ম্যাচে সেটা ওর পক্ষে খুব মুশকিল মনে হয় আমার। অস্ট্রেলীয় ওপেনে তৃতীয় রাউন্ডেই আন্দ্রেস সেপ্পির কাছে ৪-৬, ৬-৭ (৫-৭), ৬-৪, ৬-৭ (৫-৭) হেরে গিয়ে ফেডেরার শুনলাম বলেছে, এটা ওর স্রেফ একটা খারাপ দিন!

কিন্তু সামান্য টেনিস খেলার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হচ্ছে, এ রকম খারাপ দিন ফেডেরারের এখন বেশি করে আসবে। কারণ, এক জন প্লেয়ারের যত বয়স বাড়ে ততই তার শারীরিক সক্ষমতা কমে। স্কিল না কমুক, কিন্তু সেই স্কিল প্রয়োগ করার জন্য তো একটা নির্দিষ্ট শারীরিক ফিটনেস চাই। ফেডেরার এখন প্রতিদিন তার আগের দিনের চেয়ে আরও একটু বুড়ো হচ্ছে। আর প্রতিদিনই ওর তৎপরতা একটু একটু করে কমছে। এটা পরিষ্কার ক্রীড়া-বিজ্ঞান। কোনও প্লেয়ারের অগ্রাহ্য করার উপায় নেই।

‘বেস্ট অব থ্রি’ সেট ম্যাচ তবু হয়তো এই বয়সেও ফেডেরার আগাগোড়া তেড়েফুঁড়ে খেলে দেবে। কিন্তু পাঁচ সেটের ম্যাচ, মানে গ্র‌্যান্ড স্ল্যামে এক সেট বা দু’সেটে পিছিয়ে পড়লে ওর পক্ষে এখন ঘুরে দাঁড়ানো শুধু কঠিনই নয়, প্রায় অসম্ভব। স্কিল থাকলেও চার-সাড়ে চার ঘণ্টার ম্যারাথন লড়াইয়ের স্ট্যামিনা এই পাওয়ার টেনিসের যুগে তেত্রিশ পেরনো কারও পক্ষে থাকা সম্ভব নয়।

তা ছাড়া ০-২ সেটে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচ বার করার ইতিহাসও ফেডেরারের তেমন বড়সড় নয়। এক্ষুনি যদ্দূর মনে পড়ছে, অস্ট্রেলীয় ওপেনেই একবার খুব সম্ভবত টিপসারেভিচের সঙ্গে ০-২ থেকে ৩-২ জিতেছিল ফেডেরার। আর এক বার বোধহয় উইম্বলডনে, নামটা ঠিক মনে পড়ছে না, এক কলম্বিয়ান প্লেয়ারকে হারিয়েছিল ০-২ সেট পিছিয়ে থেকে।

কেউ কেউ অবাক হচ্ছেন, যে ফেডেরারের টাইব্রেকারে কেরিয়ার সাফল্য আশি শতাংশ, সেই লোক এ দিন মেলবোর্নে দু’টো সেট টাইব্রেকে হারায়! আমি অবশ্য সেই দলে নিজেকে রাখছি না। কারণ, ম্যাচটায় ফেডেরারের হারের যে ক’টা টেকনিক্যাল কারণ, তার মধ্যে সবার আগে আসবে আজ ওর আগাগোড়া খুব খারাপ সার্ভিস। টাইব্রেকে আসল অস্ত্রই হল নিখুঁত সার্ভিস। টেনিসে টাইব্রেক অনেকটা রাশিয়ান রুলেটের মতো। রিভলবারের ছ’টা খোপের কোনটায় গুলি ভরা আছে আর কোনটায় নেই আগাম জানার উপায় নেই। ফায়ারিংয়ের পর বোঝা যাবে! শিকার বাঁচল না মরল। টাইব্রেকারে সার্ভিসও তাই। ঠিকঠাক পড়ল তো অর্ধেক পয়েন্ট ওখানেই পাওয়ার সম্ভাবনা। আর খারাপ সার্ভিস হল তো ওখানেই বিপক্ষ উইনার মেরে শেষ করে দেবে। সেটাই এ দিনের দু’টো টাইব্রেকারে করেছে সেপ্পি। নইলে দু’বারই কিন্তু ফেডেরার ৪-১ আর ৩-১ পয়েন্টে এগিয়ে থেকেও শেষমেশ টাইব্রেকে হেরেছে।

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

আরও একটা তাৎপর্যের ব্যাপার লক্ষ্য করলাম টিভিতে ম্যাচটা দেখতে বসে। ফেডেরারের অনেক বেশি নেটের সামনে আসার প্রবণতা। আসলে আপনার যত বয়স বাড়বে, ততই আপনি লম্বা র‌্যালির চেয়ে ছোট র‌্যালি করার দিকে ঝুঁকবেন। কারণ, সেই শরীরে বয়সের থাবা বসা। ছোট র‌্যালি করে দমের ঘাটতিতে রাশ টানার চেষ্টা। বড় র‌্যালি যত হবে, ততই বুড়ো প্লেয়ারের স্ট্যামিনায় টান পড়বে যে। দু’-তিন বছর আগের ফেডেরারকেও কিন্তু এ দিনের চেয়ে অনেক বেশি বেসলাইনে দাঁড়িয়ে লম্বা র‌্যালি করতে দেখা যেত।

সেপ্পির কৃতিত্ব, যার বিরুদ্ধে জীবনে কোনও দিন জেতেনি, সেই সুপারস্টারকে গ্র‌্যান্ড স্ল্যামে হারানোর সুযোগ পেয়ে উত্তেজনায় ভেসে যায়নি। প্যানিক করেনি। বড় পয়েন্টগুলো ঠান্ডা মাথায় খেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জিতেছে। ম্যাচ পয়েন্টটা তো তুলল একটা অবিশ্বাস্য উইনারে। ফেডেরারের যে রিটার্নটা সেপ্পি বলের কাছেই পৌঁছতে পারবে না মনে হচ্ছিল, সেটায় বিশ্বের ৪৬ নম্বর ইতালিয়ান অনবদ্য ডাউন দ্য লাইন মেরে ম্যাচটাই জিতে নিল।

এতে আর একটা ব্যাপারও স্পষ্ট—বিশ্ব টেনিসে এখন প্রথম দশের সঙ্গে পরের পঁচিশ-তিরিশ জনেরও আর বিরাট পার্থক্য নেই আগের যুগের মতো। এতটাই আধুনিক আর উন্নততর কোচিং প্রোগ্রাম এসে পড়েছে টেনিসে।

এবং এই আবহে ফেডেরারের পক্ষে সাড়ে তেত্রিশে আরও একটা গ্র‌্যান্ড স্ল্যাম জেতা হয়তো অসম্ভব!

ডাবলসে শেষ ভারতীয় চ্যালেঞ্জ

সংবাদ সংস্থা • মেলবোর্ন

সিঙ্গলসে ইন্দ্রপতনের দিনেই ডাবলস থেকে ছিটকে গেলেন সব ভারতীয়। অবাছাই মহেশ প্রথম রাউন্ডেই হেরেছিলেন মেলজারকে নিয়ে। এ দিন দ্বিতীয় রাউন্ডে সপ্তম বাছাই বোপান্না-নেস্টর জুটি হারেন ম্যাক্স মির্নি-ফেলিসিয়ানো লোপেজের কাছে ৫-৭, ৩-৬। দশম বাছাই লিয়েন্ডার-ক্লাসেন জুড়িও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছেন সিমোনে বোলেলি-ফাবিও ফগনিনির বিরুদ্ধে ৬-২, ৪-৬, ১-৬। মেয়েদের দ্বিতীয় বাছাই জুটি সানিয়া-শিয়েকে চমকে দিয়েছেন অনামী কানাডিয়ান-পোলিশ জুড়ি গ্যাব্রিয়েলা ডাব্রোস্কি-অ্যালিজা রোসলস্কা ৭-৬, ৬-৪। সানিয়া অবশ্য মিক্সড ডাবলসে ব্রুনো সোয়ারেসকে নিয়ে প্রথম রাউন্ডে জিতে খানিকটা মুখরক্ষা করেন আজ। যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন, অস্ট্রেলীয় ওপেনে শীর্ষবাছাই সানিয়া-সোয়ারেস হারান বাবোস-বুটোরাককে ৬-১, ৪-৬, ১০-৩। মিক্সড ডাবলসই এখন শেষ আশা ভারতীয়দের। যেখানে লিয়েন্ডারের সঙ্গী মার্টিনা হিঙ্গিস। বোপান্না খেলছেন জালাভোভাকে নিয়ে। মহেশের পার্টনার জার্মিলা। সিঙ্গলসে তারকা ছেলেমেয়েদের মধ্যে চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছেন নাদাল, শারাপোভা, অ্যান্ডি মারে, বুশার্ড, দিমিত্রভ।

joydip mukhopadhyay australian open federer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy