Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি হাতে পেয়েও রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ বদ্রুর

জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো চিঠিও ক্ষোভ কমাতে পারেনি তাঁর। উল্টে ভারতীয় অলিম্পিক দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সমর (বদ্রু) বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার তোপ দেগে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই। বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়েও রাজ্য থেকে কোনও সম্মান পাননি বলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৪
Share: Save:

জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো চিঠিও ক্ষোভ কমাতে পারেনি তাঁর। উল্টে ভারতীয় অলিম্পিক দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সমর (বদ্রু) বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার তোপ দেগে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই। বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়েও রাজ্য থেকে কোনও সম্মান পাননি বলে।

“আমি তথাকথিত কিংবদন্তি ফুটবলারদের মতো মন্ত্রীদের আশেপাশে ঘুরতে পারি না বলেই কোনও সম্মান পাইনি রাজ্য থেকে। ওরা কিন্তু প্রতিবছর ঘুরেফিরে কিছু পায়। অথচ ওদের চেয়ে আমার সাফল্য কিছু কম নয়। পারফরম্যান্সে আমার নখের যোগ্যও নয় এমন ফুটবলারও রাজ্যের থেকে নানা সম্মান পেয়েছেন। এখন অবস্থা খারাপ বলে চিঠি পাঠাচ্ছে।” নিউ আলিপুরের বাড়িতে বসে বদ্রু যখন এ সব বলছেন তখন তাঁর চোখ-মুখে পঁচাশি বছরেও যে কোনও যুবকের মতোই রাগ।

এ দেশের ফুটবল ইতিহাসে অলিম্পিকে একবারই চতুর্থ স্থান পেয়েছিল ভারত। মেলবোর্নে। সে বার জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন বদ্রু। দেশের হয়ে অনেক টুর্নামেন্টও খেলেছেন। মোহনবাগানের হয়ে অসংখ্য ট্রফি এবং রেকর্ড আছে তাঁর। রয়েছে প্রচুর গোলও। সে জন্যই এ বার পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম বিবেচিত হয়েছিল। তাঁর হয়ে সওয়াল করেছিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী, ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট এবং মোহনবাগান। বদ্রুর অভিযোগ, “আমি দিল্লিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আমার জন্য সওয়ালই করেনি। অথচ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সব খবর নেওয়া হয়েছিল।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয় কেন আপনার প্রতি রাজ্যের এই অবিচার? দেশ, বাগান ও বাংলার প্রাক্তন অধিনায়কের মন্তব্য, “আমি অন্যদের মতো মিছিলে হাঁটি না। মন্ত্রীর ঘরে গিয়ে ধর্না দিই না। ক্রীড়ামন্ত্রীর নানা সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় ক্রীড়া পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। সে জন্যই এ সব হচ্ছে।”

বঙ্গভূষণ থেকে ক্রীড়াগুরু, বাংলার গৌরব থেকে খেল সম্মানরাজ্যের ক্রীড়াবিদদের জন্য নানা পুরস্কার চালু হয়েছে। সিনিয়র, জুনিয়র মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ জনেরও বেশি ফুটবলার সম্মান পেয়েছেন। পেয়েছেন টাকাও। পরিচিত খেলার বাইরে উসু, ক্যারাটে, দেহসৌষ্ঠবের ভাগ্যেও শিকে ছিড়েছে কিন্তু বদ্রুর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। কেন এমন হয়েছে? যিনি এর জবাব দিতে পারতেন সেই ক্রীড়ামন্ত্রী জেলে। পুরস্কার বাছাই কমিটির প্রভাবশালী সদস্য প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার বললেন, “বদ্রুদা কিছু পাননি? তাই না কি? বড় ভুল হয়েছে। অলিম্পিকে অধিনায়ক ছিলেন, ওঁর সম্মান পাওয়া উচিত ছিল। খুব খারাপ লাগছে।” বাংলার আর এক সফল ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “এ রাজ্যে তোষামোদ ছাড়া কিছু হয় না। বদ্রুদার মতো বিরাট মাপের ফুটবলার কেন কিছু পাবেন না? সনৎ শেঠ, পরিমল দে, প্রশান্ত সিনহা এঁরাও তো কিছু পায়নি। দু’চারজন মোসায়েবি করে সব নিয়ে যাচ্ছে। খুব খারাপ অবস্থা।” আর বদ্রুর ক্ষোভ জেনে আর বর্তমানে যিনি ক্রীড়া দফতর দেখাশোনা করছেন, সেই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য, “আমি খোঁজখবর না নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE