শুরুতেই ফিলিপ লামের জার্মানি বা অন্য কোনও টিমের থেকেও বিশ্বকাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের বড় আতঙ্ক হয়ে উঠতে পারে ডেঙ্গি। সপ্তাহ দেড়েক পরেই ফুটবল-বিশ্বযুদ্ধের বল গড়ানোর আগে কাম্পিনাসে প্রায় মহামারির আকার নিয়েছে ডেঙ্গি। চলতি বছরেই আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ছাড়িয়ে গিয়েছে ৩২ হাজার। ব্রাজিলের এই শহরেই সপ্তাহ দেড়েক পরে ডেরা বাঁধার কথা পর্তুগালের।
সাও পাওলো থেকে ঘণ্টাখানেক দূরের শহরে ইতিমধ্যেই হু-এর সতর্কবার্তা, মশার হাত থেকে বাঁচতে গোটা শরীর পোশাকে ঢেকে রাখুন। জার্সি খুলে সেলিব্রেশনে অভ্যস্ত সিআর সেভেনকে সতর্কবার্তাটা চিন্তায় ফেলতে পারে। ডেঙ্গি প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা এক স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাও বলছেন, “এ বার অবস্থা সত্যিই বেশ খারাপ। সাত বছর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সাড়ে এগারো হাজারের মতো। এ বার সেটা প্রায় তিনগুণ। তিন জন মারাও গিয়েছেন।”
তাই নাইজিরিয়া আর পর্তুগাল টিম বিশ্বকাপ চলাকালীন যেখানে থাকবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তার আশপাশের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা চলছে। “বিমানবন্দর, ট্রেনিং সেন্টার, হোটেলে আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। যাতে যে সব টিম এখানে আসছে তাদের মধ্যে ডেঙ্গি ছড়াতে না পারে,” বলেন এক স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা। তাতেও খুব একটা আশ্বস্ত করা যাচ্ছে সেটা বলা যায় না। বিভিন্ন টিমের চিকিৎসকরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন আবার জানিয়েছে, “আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু হয়নি।”
চলতি মাসের গোড়ায় পর্তুগালের কোচ পাওলো বেন্তো সরেজমিনে কাম্পিনাসের ট্রেনিং সেন্টার দেখতে এসেছিলেন। স্থানীয় প্রশাসকরা তখন তাঁকে ১১ জুন রোনাল্ডোদের পৌঁছনোর আগেই অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাতেও আতঙ্ক যাচ্ছে কোথায়! তা ছাড়া ব্রাজিলে ডেঙ্গি দীর্ঘদিনের সমস্যা। গত দেড় দশকে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। নিস্তার পাননি ব্রাজিলের রোনাল্ডোও। বছর দু’য়েক আগে যে জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে।
অবশ্য ব্রাজিলে আগত বিদেশি টিমগুলোকে আশ্বস্ত করার চেষ্টার ত্রুটি নেই ব্রাজিল সরকারের। সাফাই কর্মীদের সাহায্য করতে নামানো হয়েছে ব্রাজিলের সেনাকেও। প্রায় ৮৩ হাজার টন আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু বাড়িকেও। রোগ যাতে না ছড়ায় তার জন্য সরকার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু সমস্যা শুধু কাম্পিনাসেই নয়, নাতাল, ফোর্তালেজা, রেসিফের মতো বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক শহরগুলোতেও ডেঙ্গির আতঙ্ক রয়েছে। পেলের দেশের ‘অ্যাটাকিং’ মশককুলকে ঠেকাতে আয়োজকরা শেষ পর্যন্ত জবরদস্ত কোনও ‘ডিফেন্ডারের’ খোঁজ পায় কি না সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy