Advertisement
E-Paper

শিরদাঁড়া ভাঙা হারে মেঘ সিনিয়রদের ভবিষ্যতেও

বঙ্গ অধিনায়ককে শেষ কবে মিডিয়ার তেতো প্রশ্নের এমন ব্যারাকিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছে, মনে করতে গেলে স্মৃতির সরণিতে বহুক্ষণ হাঁটতে হবে। ওপেনার অরিন্দম দাসকে আর কত দিন টানবেন? মনোজ তিওয়ারি কি বাংলার হয়ে রান করা ছেড়ে দিলেন? শিবশঙ্কর পাল, ওঁকে খেলানো নিশ্চয়ই এ বার বন্ধ করবেন?

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২০
দুঃস্বপ্নের দিন। স্টাম্প উড়ল লক্ষ্মীর।

দুঃস্বপ্নের দিন। স্টাম্প উড়ল লক্ষ্মীর।

বঙ্গ অধিনায়ককে শেষ কবে মিডিয়ার তেতো প্রশ্নের এমন ব্যারাকিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছে, মনে করতে গেলে স্মৃতির সরণিতে বহুক্ষণ হাঁটতে হবে।

ওপেনার অরিন্দম দাসকে আর কত দিন টানবেন?

মনোজ তিওয়ারি কি বাংলার হয়ে রান করা ছেড়ে দিলেন?

শিবশঙ্কর পাল, ওঁকে খেলানো নিশ্চয়ই এ বার বন্ধ করবেন?

সাত বছর আগে বাংলার যে দিন অবনমন ঘটে, সে দিন ইডেন কাঁদতে দেখেছিল লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। করজোড়ে ক্ষমা চাইতে দেখেছিল। সমবেত মিডিয়ার প্রশ্নে বিদ্ধ হতে দেখেছিল। আজকের মতো সে দিনও তিনি অধিনায়ক ছিলেন।

আশ্চর্যের হচ্ছে, বুধবার টিমটার অবনমন ঘটেনি। রঞ্জির দু’নম্বর ম্যাচটা সবে খেলল। ভাল খেললে কোয়ার্টার ফাইনাল এখনও সম্ভব। তবু এত অগ্ন্যুত্‌পাত? এত অসূয়া বর্ষণ?

আসলে কর্নাটক বুধবার বাংলাকে শুধু তো হারায়নি। পরপর থাপ্পড়ে রুক্ষ বাস্তবটা বুঝিয়ে দিয়েছে। দশ দিন পর ইডেনে যে বাংলা নামবে, তাদের কাঠামোয় প্রচুর বদলের প্রয়োজন, সবচেয়ে বোধহয় শিরদাঁড়ায়। আর থাপ্পড়গুলো সত্যিই মর্মান্তিক। যে যে সমস্যা প্রকাশ্য দিবালোকে টেনেহিঁচড়ে বার করে আনল কর্নাটক, তার মধ্যে বাংলার বর্তমান যেমন আছে, তেমনই আছে ভবিষ্যতও।

অরিন্দম দাস— শোনা গেল তাঁর রঞ্জি কেরিয়ারের আকাশে এখন ঘোর অনিশ্চয়তার মেঘ। তাঁর পরিবর্ত? তরুণ অভিমন্যু ঈশ্বরণ? গত মরসুমে পরীক্ষিত এবং ব্যর্থ।

শিবশঙ্কর পাল— সম্ভবত আজই তাঁর রঞ্জি জীবন শেষ হল। সৌরভ সরকার আসবেন পরের ম্যাচে। কিন্তু পুরনো বল হাতে তাঁর ঝাঁঝ ততটা নয়, যতটা নতুনে।

লোয়ার অর্ডার? সাত থেকে এগারোয় কার বদলে কে? থাক।

সাত বছর পর লক্ষ্মী তাই আজ না কাঁদলেও বিহ্বল। নিশ্চুপ। অসহায়।

কী করবেন তিনি? কর্নাটক এক ইনিংসে যা রান তোলে, তাঁর টিমের দু’বার ব্যাট করেও তা তুলতে কালঘাম বেরোয়। এক-এক সেশনে ওড়ে ছ-সাতটা। টিমের সাত থেকে এগারোর উড়তে এগারো মিনিটও লাগে না, আর ওপেনারদের মনোভাব দেখায় লোয়ার অর্ডারের মতো। একটা বড় পার্টনারশিপ দু’বার ব্যাট করেও হয় না। মাঠে নেমে অধিনায়ক বুঝতে পারেন, তাঁর তৃতীয় সিমার অতীত হয়ে গিয়েছেন। ময়দানের ‘ম্যাকোর’ দৌড়তেও এখন কষ্ট হয়। তাঁর এক নম্বর ব্যাটসম্যানের স্টাম্প দৃষ্টিকটু ভাবে ছিটকে পড়ে। চিনতে কষ্ট হয়, ইনি একই মনোজ তিওয়ারি তো? যাঁকে মুম্বই পর্যন্ত ভয় পায়!

এ দিন সকালে যখন মনে হচ্ছিল প্রথম এক ঘণ্টা উইকেট না হারিয়ে কেটে যাবে, অরিন্দম নিরানব্বই বল খেলে খোঁচা দিয়ে চলে গেলেন। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ধারাবাহিক পারফর্ম করছেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির পর ও রকম অসহিষ্ণু হয়ে স্পিনারকে উইকেট দেওয়ার যুক্তি নেই। অধিনায়ক নিজেও সেট হয়ে, হাফসেঞ্চুরি করে আউট। লক্ষ্মী সেঞ্চুরি পেলে বাংলা এক পয়েন্ট পেলেও পেতে পারত। বদলে টার্গেটের সত্তর রান তুলতে রঞ্জিজয়ীদের লাগল মোটে সাতচল্লিশ মিনিট।

শোনা গেল, ড্রেসিংরুমে এ দিন তুমুল বকাঝকা করেছেন কোচ অশোক মলহোত্র। পরে আফসোস করছিলেন ব্যাটিং নিয়ে। বোলিং নিয়ে। আক্ষেপ করছিলেন, বাংলার ক্রিকেট সংসারে ভাল পরিবর্তের অভাব নিয়ে। রাতের দিকে টিমের সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ বলছিলেন, বাংলা হারবে জানা ছিল। কিন্তু এ ভাবে?

কে বোঝাবে তাঁদের, আলেকজান্ডার বনাম পুরু হলে ভাগ্য কখনও কখনও পুরুর দিকে হলেও হতে পারে। কিন্তু কাটা পদাতিকের সঙ্গে সে আর কবে থেকেছে?

মনোজের মাথায় আঘাত

নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা

কর্নাটকের বিরুদ্ধে বাংলা তো হারলই, সঙ্গে মনোজ তিওয়ারি ব্যাটিংয়ের সময় চোটও পেলেন। ব্যাট করার সময় কর্নাটকের অভিমন্যু মিঠুনের বল আচমকাই মনোজের হেলমেটে লাগে। কর্নাটকী প্লেয়াররা সবাই ছুটেও আসেন। মনোজকে তড়িঘড়ি হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হল মাঠ থেকে। তবে মাথার স্ক্যান করে দেখা গিয়েছে আঘাত গুরুতর নয়। মনোজ ইডেন ছেড়ে বেরোনোর সময় জানান, হেলমেট তুবড়ে গিয়েছে। আর খুব অস্বস্তি না হলেও মাথা মাঝেমধ্যে ঝিমঝিম করছে।

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কর্নাটক ৪০৮ ও ৭১-১ (উথাপ্পা ৫৪),
বাংলা ২৫১ ও ২২৭ (সুদীপ ৫৯, লক্ষ্মী ৫৭, বিনয় ৬-৩৪)।

rajarshi gangopadhyay manoj bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy