যুদ্ধং দেহি। কাতসুমির সঙ্গে কথা কাটাকাটি করিমের। মোহনবাগান মাঠে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
মোহনবাগান পরিবারে অশান্তি থামছে না।
ফেড কাপের ব্যর্থতার পর ওকোলি ওডাফাকে নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই আবার কোচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালেন আর এক বিদেশি ইউসা কাতসুমি। বুধবার যার জেরে ক্ষুব্ধ করিম বেঞ্চারিফা মাঝপথেই অনুশীলন বন্ধ করে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। পরে দু’জনেই ব্যাপারটা মিটে গেছে বলে দাবি করলেন বটে, তাতে অবশ্য বাগানের গুমোট ভাবটা কাটল না। রয়েই গেল।
মাঝপথে মোহন-কোচ অনুশীলন থামিয়ে চলে গেলেও তাতে কোনও ক্ষতি হল না কাতসুমি-ইচেদের। আজ আই এফ এ শিল্ডে যে বিদেশি দলের সঙ্গে খেলা ছিল, বাগানের বাংলাদেশের সেই শেখ জামাল ধানমন্ডি লিমিটেড এসে পৌঁছতেই পারল না। ভিসা সমস্যায় তাদের সাত বিদেশি ফুটবলার আটকে যাওয়ায়। ফলে ফের সূচি নিয়ে তীব্র ডামাডোল। ইউনাইটেডের পর মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচও স্থগিত করে দিতে বাধ্য হল আইএফএ। বারাসতে মহমেডান-সিকিম ইউনাইটেড ম্যাচের সময়েরও পরিবর্তন হল। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার ম্যাচ এগিয়ে আনা হল দুপুর সওয়া তিনটেয়।
মোহনবাগানে ঝামেলার সূত্রপাত আধঘণ্টা অনুশীলন চলার পর। কাতসুমি-ইচেদের দু’দলে ভাগ করিয়ে ম্যাচ খেলাচ্ছিলেন করিম। কাতসুমিদের দল ‘থ্রো ইন’ পায়। মাঠে উপস্থিত মোহনবাগানের এক ক্লাব কর্মী ভুল করে কাতসুমিদের বিপক্ষ দলকে বল দিয়ে দেন। এই সামান্য কারণে ওই কর্মীকে গালাগালি করতে থাকেন কাতসুমি। যা দেখে করিম চুপ করতে বলেন জাপানি মিডিওকে। নিজের টিমের কর্মীকে অকারণে গালাগাল দিতে বারণও করেন। কিন্তু কোচের নিদের্শ না মেনে হাত-পা ছুড়ে কিছু বলতে দেখা যায় কাতসুমিকে। এর পর করিম কাতসুমিকে ডেকে ধমক দেন। এবং শাস্তিস্বরূপ পাঁচ মিনিটের জন্য মাঠের বাইরে বেরিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু এতে রাজি হননি কাতসুমি। তখনই রাগ করে করিম মাঝপথেঅনুশীলন বন্ধ করে দিয়ে হাঁটা দেন ড্রেসিংরুমের দিকে। আইবর হাত ধরে কোচকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করলেও তোয়াক্কা করেননি মোহন-কোচ। বাগানে কয়েক বছর কোচিং করাচ্ছেন করিম, কিন্তু কখনও এ ভাবে মাঠ ছেড়ে যাননি তিনি।
ড্রেসিংরুমে ফিরে ফুটবলারদের নিয়ে দীঘর্র্ক্ষণ সভা করেন মোহন-কোচ। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগে কাতসুমি বলে যান, “সামান্য ঘটনা ঘটেছিল। কোচের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। আর কোনও সমস্যা নেই।” সাংবাদিক সম্মেলনে করিম অবশ্য ‘কিছুই হয়নি’ বোঝানোর জন্যই সম্ভবত গান করতে করতে ঢোকেন। বলে দেন, “মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা ফুটবলের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ফুটবলারদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে মিটিং করেছি। কাতসুমির ব্যাপারটা বড় কিছু নয়। এ রকম হতেই পারে। সব কিছু আমার আয়ত্তেই রয়েছে।” মাঠে অবশ্য এই ঝামেলার সময় দেখা যায়নি কোনও কর্তাকেই।
এ দিকে আই এফ এ কর্তারা সারা দিন দৌড়ঝাঁপ করেও বাংলাদেশের দলকে আনতে পারেননি। বুধবার রাতেই আসার কথা ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডির। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় শুধু নয়, রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রও দূতাবাসকে অনুরোধ করেন শিল্ডে খেলতে আসা দলকে ভিসা দেওয়ার জন্য। তাতে সামান্য বরফ গলে। জামালের যে সব ফুটবলার বাংলাদেশি, তাঁদের ভিসা দেওয়া হলেও আটকে দেওয়া হয় ওই দলে খেলা নাইজিরিয়া-ঘানার ফুটবলারদের। ম্যাচ যাতে হয় সে জন্য জামালকে অনুরোধ করা হয়েছিল বিদেশি ছাড়াই চলে আসতে। বাংলাদেশের দলটি রাজি হয়নি। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “ওরা জানিয়েছে বৃহস্পতিবার সমস্যা মিটে যেতে পারে। যদি মেটে ভাল, না হলে অন্য কোনও দলকে আনতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যদি ছাড়পত্র না দেয়, তা হলে আমরা কী করব?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy