মেসি-ক্রিশ্চিয়ানোদের ছাপিয়ে যাবেন নেইমার।
স্কোলারি তাঁকে বলেছেন, ব্রাজিলের হয়ে যাঁরা কনফেডারেশন কাপ জিতেছে তাদের বিশ্বকাপে বাদ দিলে সমস্যা হত। এটাই ব্রাজিলের সেরা দল কাপ জেতার।
স্টেডিয়াম, বিক্ষোভ, ঝামেলাব্রাজিলে বিশ্বকাপ শুরুর আগে এ সব নিয়ে যা প্রচার করা হচ্ছে তা অনেকটাই ঠিক নয়। ব্রাজিল বরং সেজে উঠছে প্রতিদিন।
সাওপাওলোর বাড়ি থেকে ফোনে এ রকম সব চমকপ্রদ মন্তব্য করলেন মার্কোস ফালোপা। সেই ফালোপা এক বছর আগে যিনি ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়ে এসেছিলেন কলকাতায়। ফিফার হয়ে পঁচাত্তরটিরও বেশি দেশে ঘুরেছেন প্রশিক্ষণের কাজে। এখন ফিফার বিশেষ একটি কমিটির দায়িত্ব নিয়ে নিজের দেশে বিশ্বকাপ ফুটবল সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ফালোপা।
সংক্ষিপ্ত ই-মেল পাওয়ার পর মঙ্গলবার ফালোপাকে যখন ফোনে ধরা হল, তখন ব্রাজিলে সবে সকাল হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হতে মাত্র বাইশ দিন বাকি। অথচ অর্ধেক স্টেডিয়াম নাকি অসমাপ্ত? নানা ঝামেলা নিয়মিত খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। বিশ্বকাপ নির্বিঘ্নে শেষ করা যাবে তো? ব্যাপারটা ঠিক কী?
প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে ভাবলেন পঁয়ষট্টিতে পা দেওয়া ফালোপা। তারপর বললেন, “ব্রাজিলের অবস্থা জানতে নানা দেশের সাংবাদিক বন্ধু এবং পরিচিতরা আমাকে ফোন করছেন। সংবাদমাধ্যমে এ রকম খবর প্রকাশ হচ্ছে ঠিকই। তবে এর সবটা কিন্তু সত্যি নয়। কিছু সমস্যা যে নেই তা নয়, তবে যত দিন যাচ্ছে ব্রাজিল কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হচ্ছে। এখানে এলে দেখতে পেতেন রিও, সাও পাওলোতে কেমন উৎসবের মেজাজ।” এরপর একটু থেমে চিডি-মেহতাবদের প্রাক্তন কোচ যোগ করেন, “আসলে দু’মাস আগের পরিস্থিতির সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির অনেক তফাত। আমাদের দেশে ফুটবল হল ধর্ম। সবাই ফুটবল পাগল। তবে রাজনৈতিক নেতারা কিছুটা নিজেদের ফায়দা তুলতে এই সমস্যাগুলো জিইয়ে রাখতে চাইছেন। ব্রাজিল কিন্তু ধীরে ধীরে আক্রান্ত হচ্ছে বিশ্বকাপ জ্বরে।”
একটু থেমে আরও যোগ করেন, “ব্রাজিলে এখন থেকেই অনেক ট্যুরিস্ট আসতে শুরু করে দিয়েছে। শনিবারই তো আমার শহর সাও পাওলোতে নতুন স্টেডিয়াম উদ্বোধন হল। এখানেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ। ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া খেলবে। সাও পাওলোর সবাই এখন অপেক্ষা করছে ১২ জুনের জন্য।” বলতে থাকেন শান্ত স্বভাবের ভদ্রলোক। কথা বললেই বোঝা যায়, নিজের দেশের বিশ্বকাপ সংগঠন নিয়ে কতটা উত্তেজিত তিনি। রীতিমতো আবেগে ভাসছেন।
কিন্তু আপনার দেশের কাপ জেতার সম্ভবনা কতটা? ফালোপা ব্যাখ্যা দেন, “দু’একজনকে বাদ দিলে ব্রাজিলের প্রাক্তন ফুটবলাররা সবাই কাপ জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। ব্রাজিলের সবাই ধরে নিয়েছে এ বার নেইমাররাই বিশ্বকাপ জিতবে। সাও পাওলোতে স্টেডিয়াম উদ্বোধনের পর প্রাক্তন ফুটবলারদের মধ্যে একটি ম্যাচ হয়। রবার্তো রিভেলিনোও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। প্রাক্তনরা কিন্তু স্কোলারি ব্রিগেডের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছেন।”
সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি এই মুহূর্তে ফিফার একটি বিশেষ কোচিং কোর্সের সঙ্গেও যুক্ত ফালোপা। আর সেই সূত্রেই কিছু দিন আগে ব্রাজিল কোচ স্কোলারির সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর। “স্কোলারিকে সামনে পেয়ে বিশ্বকাপ নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছিলাম। আমাদের কোচ কিন্তু নিজের টিম নিয়ে মনে হল দারুণ আশাবাদী। আত্মবিশ্বাসীও। স্কোলারি বলছিলেন, যে ফুটবলাররা দেশকে কনফেডারেশনস কাপ চ্যাম্পিয়ন করেছে, তাদের বাদ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এই ছটফটে, তরুণ ব্রিগেডই ২০০২-এর পর আবার ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দেবে। আর টিম গঠন নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না স্কোলারি।”
ব্রাজিলের অন্যতম প্রধান ভরসা যিনি, যাঁকে নিয়ে বিশ্বের প্রত্যেক ফুটবল প্রেমী বাজি ধরছেন, সেই নেইমারের বাবা সিনিয়র নেইমার তাঁর বন্ধু বলে জানাচ্ছেন ফালোপা। নেইমারের বাবার কাছ থেকেই নানা খবর পাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ। ফালোপা বলছিলেন, “নেইমারের বাবা আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমরা একটা সময়ে এক সঙ্গে খেলেছি। ওর থেকেই জানলাম, বিশ্বকাপ নিয়ে রীতিমতো স্বপ্ন দেখছে নেইমার। আমার নিজেরও কিন্তু মনে হচ্ছে মেসি, রোনাল্ডোদের ছাপিয়ে যেতে পারে নেইমার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy