ছবি: উৎপল সরকার
লিওনেল মেসিদের টিমের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সুইৎজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় কাঁটা কে? বিশ্বকাপের সুইসদের গত তিন ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখলে অনেকেই হয়তো বলবেন আর্জেন্তিনার শেষ আটে ওঠা আটকাতে পারেন জারদান শাকিরি। যাঁকে ‘অ্যাল্পাইন মেসি’ বা ‘ম্যাজিক ডোয়ার্ফ’ও বলা হয়। তবে শুধু শাকিরিই নন, আরও একজন মেসিদের জয় রুখে দিতে পারেন। তিনি সুইৎজারল্যান্ডের কোচ অটোমার হিৎজফেল্ড। বিশ্ব ফুটবলে মুহূর্তের চালে ম্যাচের রঙ পাল্টে দেওয়ার জন্য যিনি বিখ্যাত। যাঁকে বিশ্ব ফুটবল চেনে ‘দ্য জেনারেল’ বলে।
আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে নামার আগে যিনি বলছেন, “এই ম্যাচে আমাদের হারানোর কিছু নেই। তবে অনেক কিছু পাওয়ার রয়েছে। আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে সব কিছুই সম্ভব। আমাদের যা দর্শন সেটায় আমরা অটুট থাকব।” সেই দর্শনটা কী? হিৎজফেল্ড বলে দেন, “সাংগঠনিক শক্তি আর জমাট থাকার ব্যাপারটা বজায় রাখা। ডিফেন্স থেকে খুব দ্রুত আক্রমণে ওঠা।” পাশাপাশি তিনি বলে দেন, “আমি নিশ্চিত আমাদের সামনে জেতার সুযোগ আসবেই।”
হিৎজফেল্ডের সিভি দেখলে ফুটবলের বিখ্যাত কোচের মধ্যে তাঁর নাম উঠে আসা নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই। প্রায় তিন দশকের ক্লাব কেরিয়ারে দুর্লভ সাফল্য পেয়েছেন। ১৯৮৩ থেকে ২০১২-র মধ্যে জার্মান ফুটবল থেকে দুটো ক্লাবকেই শুধু ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হতে দেখা গিয়েছে।
কোচিং কেরিয়ারের এমন সব হিরে-জহরতের মধ্যে সুইৎজারল্যান্ডের কোচ হিসেবে সাফল্যও কম নয়। ২০০৮ সালে সুইসদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্পেনকে তিনবার হারানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছে তাঁর টিম। এর মধ্যে ২০১০ বিশ্বকাপে ভিসেন্তে দেল বস্কির টিমকে হারানোর রেকর্ডও রয়েছে। তবে এর পরও গত বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় যেতে ব্যর্থ হয়েছিল সুইৎজারল্যান্ড। এ বার যে আক্ষেপটা পুষিয়ে নিতে মরিয়া হিৎজফেল্ড।
প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে হারার পর অনেকে ভেবেছিলেন সুইৎজারল্যান্ডের আর কোনও আশা নেই এই বিশ্বকাপে। কিন্তু হিৎজফেল্ডের ছেলেরা উঠে দাঁড়িয়েছেন। তার পিছনে কোচের অবদানও কম নয়। হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে রাইট উইং থেকে ফরোয়ার্ডে নামান জারদান শাকিরিকে। বায়ার্ন মিউনিখের প্লেয়ার সেই ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করেন।
ইকুয়েডর আর হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে জয়ের পর প্রায় শেষ হতে বসা কোচিং কেরিয়ার ফের গতি পেয়েছে। কিন্তু এ বার কী হবে? আর্জেন্তিনার কাছে হারলে কি শেষ হয়ে যাবে হিজফিল্ডের কেরিয়ার? আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে নক আউটের লড়াইয়ে নামার আগে তিনি আগাম বলছেন, “আমরা ইতিহাস তৈরি করব। প্রত্যেক প্লেয়ারের সামনেই ইতাহাসে নিজের নাম লেখার সুযোগ রয়েছে। একটা ম্যাচে যে কোনও ফলই সম্ভব।” বিশ্ব ফুটবলে ক্লাব কোচ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন। তবে আর্জেন্তিনাকে তাঁর দল হারাতে না পারলে হয়তো এ বার যবনিকা নেমে যাবে তাঁর কোচিং কেরিয়ারে।
হিৎজফেল্ডের ট্রফি ক্যাবিনেট
এফসি আরাও: ১ সুইস কাপ
এফসি গ্রাসহোপার: ২ সুইস লিগ, ২ সুইস কাপ, ১ সুইস সুপার কাপ
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড: ২ বুন্দেশলিগা, ১ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ২ জার্মান সুপার কাপ
বায়ার্ন মিউনিখ: ৫ বুন্দেশলিগা, ১ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ৩ জার্মান কাপ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy