Advertisement
০২ মে ২০২৪
Puja

‘ভিড় সামলে দেব, কিন্তু অঞ্জলি!’

তবে এ দিন সন্ধ্যায়ও টালায় মণ্ডপে নিজস্বী-শিকারীদের অবাধ বিচরণ চোখে পড়েছে।

এ বার প্রতিমা দর্শন এ-পার থেকেই। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরে মণ্ডপের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্বে বসল বাঁশের ব্যারিকেড। পড়ল ‘নো এন্ট্রি’ পোস্টারও। সোমবার হাওড়ার একটি পুজোয়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

এ বার প্রতিমা দর্শন এ-পার থেকেই। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরে মণ্ডপের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্বে বসল বাঁশের ব্যারিকেড। পড়ল ‘নো এন্ট্রি’ পোস্টারও। সোমবার হাওড়ার একটি পুজোয়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৭
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর মুখের পুরনো আপ্তবাক্য ছিল, ‘দো গজ কি দূরী, বেহদ জরুরী। সোমবার, দেবীপক্ষের তৃতীয়ায় হাইকোর্টের রায়ের পরে মুখে-মুখে তা পাঁচ মিটার বা দশ মিটারের দূরত্ব নিয়ে সরব। পুজোকর্তাদের অনেকেই এখন দু’-একটি পুজোমণ্ডপের ভিড়কেই এ পরিস্থিতির জন্য দুষছেন। এবং ঠাকুর দেখার ভিড়ের রাশ টানাটা সম্ভব হলেও অষ্টমী, নবমী বা সন্ধিপুজোর অঞ্জলির জমায়েতে বিধিনিষেধ নিয়ে দুশ্চিন্তায়।

কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটির ফোরামের প্রবীণ কর্তা তথা দক্ষিণ কলকাতার শিবমন্দিরের উদ্যোক্তা পার্থ ঘোষের অভিমান, ‘‘অঞ্জলি দিতে বছরভর যাঁরা অপেক্ষা করেন, তাঁদের কী হবে! এর থেকে পুজোটা না-হলেই হত।’’ বিষয়টি ভাল ভাবে বুঝতে পুজোকর্তারা রায়ের কপি দেখার অপেক্ষায়। তবে অমান্য করার কথা মুখে অন্তত কেউ বলছেন না। যেমন, খড়্গপুরের সাউথ ডেভেলপমেন্ট অভিযাত্রী পুজোর কর্মকর্তা জয়ন্ত জোয়ারদার বলেন, ‘‘মণ্ডপের বাইরে ৩০ ফুট পর্যন্ত ঘিরে দিচ্ছি। প্রয়োজনে বড় স্ক্রিন বসাব।’’ বাঁকুড়া শহরের মধ্য কেন্দুয়াডিহি পুজো কমিটির ভাবনা, মণ্ডপের সামনের অংশ খুলে দিয়ে প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা হবে।

কলকাতার কিছু ‘দূরদর্শী’ পুজোকর্তার আবার চওড়া হাসি। নাগরিক আড্ডাতীর্থ ম্যাডক্স স্কোয়ারের এ বারের ধুয়োই, ‘বিশে বিশ্রাম, আড্ডা একুশে’! যুগ্ম সম্পাদক অমলেন্দু সরকার ও শুভাশিস আদক হাসছেন, ‘‘আগে থেকেই ভিড় এড়ানোর পরিকল্পনা করেছি। ছোট করে পুজো। অঞ্জলিটাও সামলে নেব। ভিড় হবে না।’’ উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয় বা কাশী বোস লেনে দূর থেকে ঠাকুর দেখার ‘স্ক্রিন’ রয়েছে। তবে প্রত্যয়ের কর্মকর্তা শান্তনু সাহার দাবি, ‘‘আমাদের মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢোকার কথাই নয়। তবে সামনের রাস্তার লোক চলাচল হাতে নেই। অঞ্জলি দিতে রাস্তায় ভিড় হলেই বা কী করে ঠেকাব।’’

তবে এ দিন সন্ধ্যায়ও টালায় মণ্ডপে নিজস্বী-শিকারীদের অবাধ বিচরণ চোখে পড়েছে। উলুবেড়িয়ার নোনার এক পুজো কমিটি থেকে বোলপুরের জামবুনি সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতিতেও এখন বড় পর্দায় ভার্চুয়াল দর্শনের নাম। কিন্তু পুলিশের একাংশের প্রশ্ন, পর্দা বসানোর হিড়িকে পর্দার সামনের ভিড়টাকে কি মনে রাখা হচ্ছে?

আরও পড়ুন: ত্রাতা আদালত, অতিমারির মহাবিপর্যয় থেকে রেহাই কলকাতা ও বাংলার

পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের আদলে দুর্গার জন্য খ্যাত বড়িশা ক্লাবের পুজোকর্তা পার্থ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কী আর করার, লোকে দূর থেকেই দেখবে।" যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লির জন্যও মণ্ডপের সামনের পিচ রাস্তা ভরসা। পুজোকর্তা রতন দে বলছেন, ‘‘অঞ্জলি দফায় দফায় হবে।’’ বহরমপুরের বাবুলবোনা সর্বজনীন দুর্গা পুজো কমিটির সভাপতি মিঠু জৈনের চিন্তা, মণ্ডপের বাইরে ভিড় ঠেকানো।

আরও পড়ুন: ‘রায় কার্যকর করার দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনের’

তমলুকের ‘ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাব’-এর সম্পাদক চন্দন ঘোড়ই বলেন, ‘‘আধ কিলোমিটার পর্যন্ত লাইনে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার দেব।’’ বসিরহাটের একটি পুজো কমিটির সম্পাদক বাদল মিত্র বলেন, ‘‘রায় মেনে পুজো হবে। মণ্ডপের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে জায়েন্ট স্ক্রিন বসানোর চেষ্টা চলছে।’’ একই কথা জানিয়েছেন বনগাঁর একটি পুজো কমিটির সম্পাদক অনিমেষ তরফদার। তবে রসিক বাঙালির জল্পনা, পাঁচ-দশ মিটার দূরেই পেরিস্কোপে ঠাকুর দেখার গুঁতোগুঁতি আবার শুরু না হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

High Court Verdict COVID-19 Puja Anjali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE