Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

সমস্ত পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়, বিরাট ঘোষণা মমতার

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই রয়েছেন রাজ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ। সংখ্যাটা সাড়ে ৭ কোটির আশেপাশে।

রাজ্যের সব নাগরিককে স্বাস্থবিমার আওতায় আনার ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

রাজ্যের সব নাগরিককে স্বাস্থবিমার আওতায় আনার ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ১৮:২৪
Share: Save:

আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিরাট পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে রাজ্যের সব নাগরিককে স্বাস্থবিমার আওতায় আনা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পরিমাণ বাৎসরিক ৫ লক্ষ টাকা। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকেই এই সুবিধা চালু হয়ে যাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ওই ঘোষণার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবেন এবং নাম, ঠিকানা, পরিবারের সদস্য সংখ্যা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। তার ভিত্তিতেই কার্ড তৈরি হবে। নতুন কার্ড ব্লকে ব্লকে পৌঁছনোর পরে প্রাপকরা ডাক পাবেন এবং নির্দিষ্ট সরকারি অফিসে গিয়ে সেগুলি সংগ্রহ করবেন।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের সাড়ে ৭ কোটি বাসিন্দা এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তবে সরকারি স্বাস্থ্যবিমাকে তিনি সেখানেই থামিয়ে রাখতে চান না। তার আরও বিস্তার ঘটাতে চান। প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রত্যেক পরিবারকে সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা এখনও পর্যন্ত আর কোনও রাজ্য সরকার করতে পারেনি বলেও নবান্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের কোনও পরিবার বা কোনও ব্যক্তি আর সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকবেন না। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই রয়েছেন রাজ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ। সংখ্যাটা সাড়ে ৭ কোটির আশেপাশে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আরও আড়াই কোটি মানুষকে আমরা স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় নিয়ে আসছি।’’ অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় চলে আসবেন।

আরও পড়ুন: বঙ্গে ভোটের পালে ‘হিন্দুত্ব হাওয়া’ টানতে অভিযান করবে হিন্দু পরিষদ

কর্মসূত্রে বা অন্য কোনও কারণে কেউ কেউ বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যবিমা বা স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রকল্পের সুবিধা পান। তাঁদের আর আলাদা করে স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা দেওয়া হবে না। কিন্তু সে সবের বাইরে থাকা প্রত্যেক পরিবার বা নাগরিক স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করার পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের নতুন স্মার্টকার্ডও প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রত্যেক পরিবার ওই স্মার্টকার্ড পাবে। পরিবারের প্রধান হিসেবে কোনও মহিলার নামেই মূলত কার্ডগুলি দেওয়া হবে। সেই কার্ড দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতালেও নিখরচায় বাৎসরিক ৫ লক্ষ টাকার পরিষেবা মিলবে।

আরও পড়ুন: টুইট করে রাজ্যপাল অপরাধীদের আড়াল করছেন, আইনের তোপ দাগলেন কল্যাণ

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে তো এমনিতেই বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যসাথীর এই কার্ড দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যাবে।’’ যাঁরা অন্য কোনও সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় রয়েছেন, তাঁরাও চাইলে স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা নিতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে বর্তমানে তাঁরা যে প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন, সেটি ছেড়ে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় ঢুকতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত রূপায়ণের কাজ খুব দ্রুত শুরু হচ্ছে বলে খবর। প্রকল্পে নাম লেখানোর জন্য নাগরিককে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। এত বড় স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম তো বটেই। অন্য কোনও রাজ্যও এখনও সব নাগরিককে এ ভাবে বিমার আওতায় আনার পথে এগোতে পারেনি বলে নবান্ন সূত্রের দাবি। শুধু রাজ্য সরকারগুলি নয়, কেন্দ্রীয় সরকারও এখনও এই রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’-ও স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প হিসেবে বড় আকারের। কিন্তু সেই প্রকল্পও দেশের সব নাগরিককে নিজের ছাতার তলায় নিতে পারেনি। আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা প্রাপকের সংখ্যা ৫৫ কোটির আশেপাশে। তা ছাড়া কেন্দ্রের ওই প্রকল্পে রাজ্য সরকারগুলির ৪০ শতাংশ করে অংশীদারিত্বও রয়েছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুরোপুরি নিজের খরচেই রাজ্যের সব নাগরিককে সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার পথে এগোতে শুরু করল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Health Insurance West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE