আহত শিবেন দাস। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে বাসে করে যাচ্ছিলেন বিজেপি-র কর্মী, সমর্থকেরা। চাকদহ থানার কামালপুর বিডিও অফিসের কাছে পর-পর সেই বাস থামিয়ে যাত্রীদের মারধর ও বাস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে বিজেপির ৩০ নম্বর জেলা পরিষদ কমিটির সদস্য শিবেন দাসকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালের এই ঘটনায় কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও পুলিশ তা স্বীকার করেনি। শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে এই ঘটনা নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়নি। নদিয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপি সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করছি। সকলের সঙ্গে কথা বলে তবে লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।” তবে গোলমাল, মারামারির পরেই এলাকা বনধের চেহারা নেয়। দোকানপাটের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের বিভিন্ন থানা থেকে বিপুল পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স এলাকায় মোতায়েন করা হয়।
হামলা ও মারামারির জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে বিজেপি ও তৃণমূল। বিজেপির দাবি, উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাওয়া আটকাতে তৃণমূল বেছে-বেছে তাদের কর্মী-সমর্থকদের বাসে আক্রমণ চালিয়েছে। তৃণমূল সেই অভিযোগ খণ্ডন করে একে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দাবি করেছে। জগন্নাথ সরকারের কথায়, “তৃণমূল পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। ওরা আমাদের সমর্থকদের মেরেছে এবং ওঁদের দিকে বোমা ও গুলি ছুড়েছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও অন্তর্দলীয় সংঘর্ষের কথা সুবিদিত। এখানেও একই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগের রেকর্ড বাজানো হচ্ছে।’’
রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রত্না ঘোষ আবার বলেছেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা বিজেপির নিজেদের লড়াই। বাস থামিয়ে ওদের সমর্থকেরা চা খাচ্ছিলেন। সেই সময় মুকুল রায়ের অনুগামীদের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের গোলমাল বাধে। ওঁরা এখন আমাদের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছেন।” বিজেপি সূত্রের খবর, শনিবার সকাল থেকে চাকদহ-বনগাঁ রাজ্য সড়ক দিয়ে কালিনারায়নপুর, শান্তিপুর এবং বাদকুল্লা থেকে একাধিক বাস সমর্থকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাচ্ছিল। সকাল দশটা নাগাদ প্রথমে একটি বাস আটকানো হয়। বাসের চাবি নিয়ে নেওয়া হয়। যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে চিৎকার শুরু করেন। পিছনে বিজেপি সমর্থকদের নিয়ে আরও কয়েকটি বাস আসছিল। গোলমাল দেখে সেগুলি দাঁড়িয়ে যায়। যাঁরা বাস আটকেছিলেন তাঁদের সঙ্গে বাসযাত্রীদের হাতাহাতি শুরু হয়। দু’পক্ষ মারমুখী হয়ে পরস্পরের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
শান্তিপুর হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে আহত শিবেন দাস বলেন, “আমরা ১৩টি বাস এবং কয়েকটি গাড়ি নিয়ে শান্তিপুর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাচ্ছিলাম। চাকদহের কাছে বাস আটকানো হয়। এক জন চাবি নিয়ে চলে যান। দেখি সেখানে আরও বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাঁরা চাবি নিয়ে নিচ্ছিলেন তাঁদের মধ্যে দু’জনকে চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই সময় তৃণমূলের সমর্থকেরা গুলি-বোমা ফাটিয়ে ওদের ছিনিয়ে নিয়ে যান। তার পর ওঁরা আমাদের উপরে হামলা চালান। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। মাথা ফেটে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy