ছত্রধর মাহাতো। ফাইল চিত্র।
এখনই লালগড় আন্দোলনের নেতা ছত্রধর মাহাতোকে জামিন দিতে রাজি নয় আদালত। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি মুমতাজ খান এবং জয় সেনগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে ছত্রধর মাহাতোর আইনজীবী শেখর বসু জামিনের আবেদন জানান।
শেখর এ দিন সওয়াল করেন, ছত্রধর মাহাতোকে নিছক সন্দেহের বশে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় দোষী সাব্যস্ত করেছে নিম্ন আদালত। কারণ, সিআইডির তদন্তকারীরা এমন কোনও জোরালো তথ্য প্রমাণ দিতে পারেননি যাতে প্রমাণিত হয় তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামিল ছিলেন। সেই যুক্তি ধরেই ছত্রধরের আইনজীবী এ দিন ছত্রধরের বিরুদ্ধে ইউএপি আইনের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
কিন্তু, ছত্রধরের জামিনের সেই আবেদন প্রসঙ্গে বিচারপতি মুমতাজ খান বলেন, যে ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে প্রায় দশ বছর ধরে জেলে রয়েছেন, তাঁর জামিন এক দিনে কখনই দেওয়া যায় না। বিচারপতি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি মামলার সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখবেন, তার পর আগামী ২৫ জুলাই ফের এই জামিনের মামলা শুনবেন।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে সাইকেল নিয়ে যুবক, প্রশ্নে নিরাপত্তা
গত এপ্রিল মাস থেকেই ছত্রধরের জামিন নিয়ে জল্পনা চলছে। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার লালগড় আন্দোলনের এই ‘পোস্টার বয়’কে জামিনে মুক্ত করতে আগ্রহী। এপ্রিল মাস থেকে দু’দফায় ছত্রধর প্যারোলে প্রায় এক মাস জেলের বাইরে থেকেছেন।
স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, প্যারোলে সরকারি আতিথ্যে থাকাকালীন দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের মধ্যস্থতাকারীদের বৈঠক হয়েছে। প্রাথমিক জটিলতা কাটার পর ছত্রধর নিজের জামিনের আবেদন করতে রাজি হন। ছত্রধর ঘনিষ্ঠ মেদিনীপুরের এক মানবাধিকার কর্মী বলেন, “ছত্রধরের প্রতি তারা যে নরম মনোভাব পোষণ করছে, তাঁর দুই ছেলেকে চাকরির ব্যবস্থা করে সরকার সেই বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়েছে।” সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলে শাসক দলের খারাপ ফলাফলের পর ঝাড়গ্রামে যে সাংগঠনিক বদল আনা হয়েছে, সেখানে লালগড় অর্থাৎ বিনপুর -১ ব্লকের দায়িত্ব পেয়েছেন শ্যামল মাহাতো। এই শ্যামল ছত্রধরের অত্যন্ত বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবেই পরিচিত। শাসক দলের এই সিদ্ধান্তও একটি বার্তা বলে দাবি ঝাড়গ্রামের তৃণমূল নেতৃত্বের।
আরও পড়ুন: বার্তা চান মোহনরাও
সেই পরিস্থিতিতে ছত্রধরের জামিন নিশ্চিত করতে যে রাজ্য সরকার জামিনের বিরোধিতায় যাবে না, সেই ইঙ্গিতও ছিল। কিন্তু এ দিন জামিন মামলার শুনানির সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সওয়ালের অপেক্ষাই করেননি দুই বিচারপতি। তার আগেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে, এখনই ছত্রধরের জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy