Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জামিন অধরাই রইল রাজীবের, খোঁজ না পেলে গ্রেফতারি আর্জি জানাতে পারে সিবিআই

যত দিন না আলিপুর জেলা আদালতে রাজীবের আগাম জামিন মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, তত দিন তাঁকে গ্রেফতার করতে কোনও বাধা থাকল না বলে দাবি সিবিআইয়ের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৮
Share: Save:

যে উদ্দেশ্যে রাজ্যের গোয়েন্দাপ্রধান রাজীব কুমার মঙ্গলবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তা সফল হল না। বারাসত জেলা জজ মহম্মদ সাব্বার রশিদি জানিয়ে দিলেন, যে হেতু সারদার মূল মামলার উৎপত্তি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলায়, তাই আগাম জামিনের আবেদন শোনার এক্তিয়ার আলিপুর আদালতেরই। তাঁর নয়।

এই অবস্থায় যত দিন না আলিপুর জেলা আদালতে রাজীবের আগাম জামিন মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, তত দিন তাঁকে গ্রেফতার করতে কোনও বাধা থাকল না বলে দাবি সিবিআইয়ের। রাজীবের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আগাম জামিনের আর্জি জানাতে পারেন তাঁরা।

পাশাপাশি, এ দিন বারাসতের বিশেষ আদালতে রাজীবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিল সিবিআই। তারও নিষ্পত্তি হয়নি। সিবিআই সূত্রের খবর, মাঝে রাজীবের খোঁজ না পেলে, তারাও বৃহস্পতিবার আলিপুর জেলা আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আর্জি জানাতে পারে।

বুধবার আদালত খোলা থাকলেও, কেন বৃহস্পতিবার আগাম জামিনের আবেদন জানানো হবে? রাজীবের আইনজীবীরা জানান, সারদা মামলার কেস ডায়েরি রয়েছে বারাসতের বিশেষ আদালতে। সেখান থেকে নথিপত্র আলিপুরে পাঠাতে অন্তত এক দিন লাগবে।

রাজীবের আগাম জামিনের মামলা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভ্রান্তি ছড়ায় বারাসত আদালত চত্বরে। সারদা মামলায় অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কদের জন্য একটি বিশেষ আদালত গড়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বারাসতের আদালত ভবনের তিন তলায় এই বিশেষ আদালত বসছে। সেখানে সাংসদ-বিধায়কদের পাশাপাশি মনোরঞ্জনা সিংহ, সোমনাথ দত্তদের মতো অভিযুক্তদের মামলারও শুনানি চলছে। কেস ডায়েরিও সেখানেই রয়েছে। সাধারণত যে আদালতের কাছে কেস ডায়েরি থাকে, তদন্তকারী সংস্থা তাকেই তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করে।

এই কারণেই, এ দিন সকালে রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে আইনজীবী দেবাশিস রায় ও গোপাল হালদার বিশেষ আদালতে হাজির হন। কিন্তু বিচারক সঞ্জীব দারুকা জানান, তাঁর কাজ সাংসদ-বিধায়ক মামলা শোনা। ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা তাঁর নেই। ফলে, এই মামলায় কাউকে গ্রেফতার করে আনলে তিনি অভিযুক্তকে জেল বা পুলিশ— কারও হেফাজতেই পাঠাতে সক্ষম নন। এমনকি, চার্জশিট দিলে তা-ও গ্রহণ করার অধিকার নেই তাঁর। ফলে তিনি রাজীবের আগাম জামিনের আবেদনও শুনতে পারেন না।

রাজীবের আইনজীবীরা এ বার সেই আবেদন নিয়ে দোতলায় জেলা জজ সাব্বার রশিদির কাছে যান। বিচারক রশিদি জানান, শুনানি দুপুরে হবে। এর মধ্যে বিচারক দারুকার কাছে সিবিআই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানায়। এ বারও তিনি একই যুক্তি দেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র তখন বিচারককে বলেন, ‘‘আমরা তবে কোথায় যাব? কেস ডায়েরি আপনার আদালতে রয়েছে। আলিপুর বা অন্য আদালতে গেলে আমাদের বলা হবে, সেখানে কেস ডায়েরি নেই।’’

এর পর বিচারক দারুকা জেলা জজ রশিদির কাছে যান। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। এর পর রশিদির এজলাসে
রাজীবের আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা সওয়াল শেষে জেলা জজ জানান, রায় পরে ঘোষণা করবেন। সন্ধ্যা ছ’টার পরে তিনি জানিয়ে দেন, মামলা শোনার এক্তিয়ার তাঁর নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajeev Kumar CBI vs Kolkata Police CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE