Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Bengal

করোনায় শিক্ষক স্বামীর মৃত্যু, ২ সন্তানকে কোলে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপ স্ত্রীর

নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজ থেকে দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে রেল লাইনে ঝাঁপ দেন ওই মহিলা।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ১৮:৩০
Share: Save:

করোনা আক্রান্ত হয়ে শিক্ষক স্বামীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার পরই দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন স্ত্রী। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন জন।

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১২টা থেকে সাড়ে ১২ টা নাগাদ নিরাপত্তা রক্ষীদের নজর এড়িয়ে নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনের একটি ফুট ওভারব্রিজ থেকে ৪ বছর এবং ২ বছরের দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে রেল লাইনে ঝাঁপ দেন বছর ৩৫-এর এক মহিলা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের তিন জনকে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের পরিচয় জানা যায়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই মহিলার নাম সীমা মাহাতো। তাঁর দুই শিশুকন্যা প্রাপ্তি এবং ঋষিতা। এঁরা চম্পাসারির নিবেদিতা রোডের বাসিন্দা। তদন্তে জানা যায়, সীমার স্বামী খড়িবাড়ির রামজীবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি বাড়িতেই ছিলেন।

আরও পড়ুন: সংক্রমণ বাড়ছে, এলাকা ভিত্তিক আরও কড়া লকডাউনের পথেই কি হাঁটবে রাজ্য?​

এ মাসের গোড়া থেকে সর্দি জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা যায় তাঁর শরীরে। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি শিলিগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁকে ভর্তি করা হয় এবং পরে কোভিড পরীক্ষার পর ৩ জুলাই তাঁর কোভি়ড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষকের হৃদপিন্ডের সমস্যা ছিল। তাঁর শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মন্ডল পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্টের জন্য তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সোমবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ভোর বেলা হাসপাতাল থেকে স্বামীর মৃত্যুর খবর পান সীমা।

আরও পড়ুন: চিনের সরকারি চ্যানেলে গালওয়ান থেকে সেনা সরানোর ছবি ঘিরে বিতর্ক​

তাঁর প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, এ দিন সাড়ে ১১ টা নাগাদ উদভ্রান্তের মতো দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন সীমা। প্রতিবেশীরা তাঁকে বাধা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি কারও কথা না শুনে একটি টোটো ভাড়া করে উঠে পড়েন।

তদন্তকারীরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই মহিলা। গোটা ঘটনার পিছনে স্বামীর মৃত্যু এবং অর্থনৈতির সঙ্কট কতটা দায়ী তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা অন্য বিভিন্ন সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন। মাটিগাড়ার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু কন্যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে সীমার অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। পুলিশ ওই পরিবারের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলছে, আত্মহত্যার চেষ্টার কারণ জানার জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Bengal Covid 19 Matigara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE