Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

রাজ্যের চিকিৎসক মহলে করোনা-সংক্রমণ অব্যাহত

এ রাজ্যে করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ২৪৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭৪।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৫
Share: Save:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। মঙ্গলবার সেখানকার আরও এক চিকিৎসক ও চার নার্স নতুন করে আক্রান্ত হলেন।

মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এ দিন নবান্নে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ জন। যার প্রেক্ষিতে করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ২৪৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭৪। অডিট কমিটি আরও তিন জনের মৃত্যু করোনায় হয়েছে বলে জানানোয় মৃতের সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে হল ১৫। সোমবার রাজ্যে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৪ জন। এ দিন তা কম হওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘প্রতিদিন পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। কোনও দিন বেশি সংক্রমণের খবর আসছে, কোনও দিন কম। তা বলে সন্তুষ্টির অবকাশ নেই।’’ নতুন করে আক্রান্তেরা কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং হুগলির বাসিন্দা।

রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘রাজ্যের ৯টি জেলায় গত ৩০ দিন সংক্রমণের খবর মেলেনি। ১০টি জেলায় ১৫-২০ দিন নতুন সংক্রমণ নেই। ৪টি জেলা রেড জ়োনে রয়েছে। এর বাইরে আসানসোল, দুর্গাপুর এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।’’

কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুর এখনও রেড জ়োনে রয়েছে বলে জানান মুখ্যসচিব। তাঁর বক্তব্য, পূর্ব মেদিনীপুরে ১১ এপ্রিল শেষ পজ়িটিভ কেস মিলেছিল। ফলে ভাবা হয়েছিল, পূর্ব মেদিনীপুর অরেঞ্জ জ়োনে চলে আসবে। ১৯ এপ্রিল ফের সংক্রমণের খবর আসায় পূর্ব মেদিনীপুর রেড জ়োনেই থেকে গেল। যদিও ওই জেলা প্রশাসনের দাবি, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা তথা হাওড়ার এক পুলিশ আধিকারিকের করোনা ধরা পড়েছে। গত অগস্টে তিনি শেষ বার পূর্ব মেদিনীপুরে এলেও ভুলবশত তা জেলার সংক্রমণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

বঙ্গে করোনা

• গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ২৯
• অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ২৭৪
• মৃত্যু ৩।
• মোট মৃত্যু ১৫
• হাসপাতাল থেকে কেউ ছাড়া পাননি।
• নমুনা পরীক্ষা ৭১৩
• মোট নমুনা পরীক্ষা ৬১৮২
• সরকারি কোয়রান্টিনে ৩৭৩
• কলকাতায় র‌্যাপিড টেস্ট ২২০
• শিল্প খুলতে ছাড় চেয়ে আবেদন ২২২৭
• শিল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৭১৩

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অর্থোপেডিক বিভাগের এক জুনিয়র চিকিৎসক জরুরি বিভাগে ডিউটি চলাকালীন আক্রান্ত হন। আক্রান্ত চার নার্স স্ত্রীরোগ বিভাগেই কর্তব্যরত ছিলেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যে বাস দেওয়া হয়েছে, আক্রান্তদের এক জন তাতে যাতায়াতও করেছেন বলে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য। নতুন করে কোয়রান্টিনের তালিকায় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে অন্তত ৫০ জনের নাম রয়েছে। তবে ইডেন বিল্ডিংয়ে প্রসূতির দেহে করোনা ধরা পড়ার পরে কোয়রান্টিন-নির্দেশিকা মেনে চললে এত জন আক্রান্ত হতেন না বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের।

আরও পড়ুন: দুর্যোগে ক্ষতি ধান, আনাজের, ৩ দিন চলতে পারে বৃষ্টি

এ দিন স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আক্রান্তের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি কনট্যাক্টদের খুঁজে তাঁদের কোয়রান্টিনে রেখে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। কোয়রান্টিন কেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট হস্টেলে একটি ঘরে এক জনই থাকবেন। মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী তথা কমিউনিটি মেডিসিনের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত এক জন চিকিৎসকও আক্রান্ত হননি। তা হলে অন্য হাসপাতালগুলিতে তা হচ্ছে কেন?’’ সিএমসি’র আক্রান্তদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানকার সিসিইউয়ে এক রোগীর দেহে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে বলে খবর।

আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বার মাকে তাড়াতে জোট সোনারপুরের আবাসনে

আরজিকরে কার্ডিয়োলজি বিভাগে এক আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে করোনার শিকার হন এক পিডিটি। এর পরে ন’জন চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালে আরও আট জনের করোনা ধরা পড়েছে। ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত। হাসপাতালের সুপার সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, ১০ জন চিকিৎসক-সহ ৭০ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।

এ দিন সাতটি চিকিৎসক সংগঠন (এএইচএসডি, ডব্লিউবিডিএফ, এসডিএফ, এসএসইউ, ডোপা, এমএসসি) এবং আইএমএ রাজ্য শাখা বৈঠক করে। সেই বৈঠক থেকে ১১ দফা দাবিপত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। সেই দাবিপত্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আইসিডি ১০ কোড অনুসরণ করে করোনায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেট লেখার কথা বলা হয়েছে। আক্রান্ত-মৃতের তথ্য জানানোর প্রশ্নে স্বচ্ছতা বজায় রাখার কথাও বলা হয়েছে।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE