নারদ মামলায় ফের জেরার মুখে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না। জুনের মাঝামাঝি তাঁকে ডাকা হতে পারে বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে খবর। রত্না ছাড়াও তলব করা হতে পারে রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়াকেও। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রত্নার পরিচিত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে চিকুকে ডাকা হতে পারেন। এ ছাড়াও মলয় ভট্টাচার্য নামে এক চিকিৎসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে খবর। এই চিকিৎসক শ্রেয়া পাণ্ডের পরিচিত বলে জানা গিয়েছে।
এক দিকে যেমন সারদা কাণ্ডে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই তৎপর হয়েছে, তেমনই আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-ও ফের সক্রিয় হতে চলেছে। ফলে নারদ-কাণ্ডে যাঁদের নাম জড়িয়েছিল, তাঁদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে ইডি-র কোনও আধাকারিক মন্তব্য করতে চাননি। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১১ জুন শ্রেয়া পাণ্ডেকে, ১৩ জুন মলয় ভট্টাচার্যকে, ১৪ জুন অভিজিৎকে এবং ১৭ জুন রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ডাকা হতে পারে।
ইডির কোনও কর্তা এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য না করলেও রত্না চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, “আমি ডাক পেয়েছি। একটি নথি দেওয়ার কথা ছিল ইডিকে। দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। তাই ফের তলব করা হয়েছে।” কিন্তু শ্রেয়া পাণ্ডে মানতে চাননি যে, তাঁকে তলব করা হয়েছে। নোটিসের বিষয়ে শ্রেয়া পাণ্ডের বক্তব্য, “আমি লন্ডনে রয়েছি। আমার মোবাইল নম্বর ইডি অফিসারদের কাছে রয়েছে। ওঁরা আমার বাড়ির ঠিকানাও জানেন। ডাক পাঠানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।” অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুন, ২৪ ঘণ্টায় ৪ ট্রাঙ্ক সারদার নথি সিবিআইয়ের হাতে, ফের রাজীবকে জেরার প্রস্তুতি
নারদ মামলার তদন্তে নেমে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। শোভন আঙুল তুলেছিলেন তাঁর স্ত্রী রত্নার দিকে। তার পরে একে একে ডাক পেয়েছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়, শ্রেয়া পাণ্ডে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়রা। কিন্তু জেরার মুখোমুখি হয়ে শোভনের তোলা অভিযোগগুলো নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন রত্না। পরে সংবাদ মাধ্যমে রত্না আঙুল তুলেছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। শোভন ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বৈশাখী ভাল জানেন শোভনের আয়-ব্যয়ের নানা হিসেব, রত্নার দাবি ছিল এমনই। রত্নার এই অভিযোগের উপরে ভিত্তি করেই ইডি ডেকে পাঠিয়েছিল কলেজ শিক্ষিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। বৈশাখীর দেওয়া নানা তথ্যের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল রত্নার বিরুদ্ধে শোভনের তোলা নানা অভিযোগ। খবর ইডি সূত্রের। তার পর থেকেই আরও বেশি করে ইডি-র নজরে রয়েছেন রত্না।
২০১৪ সালে করা একটি স্টিং অপারেশনে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের আরও অনেক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতাকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন মন্ত্রীও ছিলেন। ২০১৬ সালে টাকা নেওয়ার ওই ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। এর পর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে ইডি। তদন্ত চলাকালীন শোভনকে বার বারই বলতে শোনা গিয়েছে, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বিপদের সময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। সব ফাইলপত্র তিনিই তৈরি করে দেন বলে দাবি করেন শোভন। গত বছরের ডিসেম্বরে বৈশাখীকে তলব করেছিল ইডি। শোভনের আয়-ব্যয় হিসাবের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। ইডি সূত্রে খবর, এ বিষয়ে বৈশাখী আধিকারিকদের কাছে রত্নার ভূমিকার কথা বলেন। সেই থেকেই তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন রত্না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শ্রেয়া পাণ্ডের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, বন ও পরিবেশে প্রতিমন্ত্রী বাবুল, স্মৃতির ডেপুটি হলেন দেবশ্রী
(দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy